প্রাচীন নগরী কনৌজ আজও ভারতের সুগন্ধির রাজধানী
সূর্য ওঠারও অনেক আগে তেগ সিং গঙ্গা তীরবর্তী নিজের বাগানে পৌঁছে যান। এলোমেলো ছোট ছোট গুল্ম ঝোপের মত হয়ে থাকা দামাস্ক গোলাপ গাছগুলোর চারপাশে ঘুরেন তিনি, প্রস্ফুটিত গোলাপ সংগ্রহ করেন এবং হালকা গোলাপিরঙা ফুলগুলো একটি চটের বস্তায় ভরে নিজের কাঁধে ফেলে রওনা দেন। নদীর উপর দিয়ে সূর্যের প্রথম আলোকরশ্মি জেগে উঠতে উঠতেই ৩৫ বছর বয়সী তেগ সিং তার মোটরসাইকেলে করে নিজের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে পৌঁছে যান ভারতের সুগন্ধি রাজ্য নামে খ্যাত ছোট্ট শহর কনৌজে।
বহু শতাব্দী ধরেই ভারতের উত্তরপূর্বে গঙ্গা অববাহিকায় অবস্থিত কনৌজ 'পাতন' প্রক্রিয়ায় তৈলজাত সুগন্ধি 'আতর' তৈরি করে আসছে। মুঘল অভিজাতদের থেকে শুরু করে ভারতের সাধারণ মানুষ, সবারই সুগন্ধির প্রতি দুর্বলতার কথা ইতিহাস থেকে জানা যায়। আর এই ঐতিহ্যের অংশ হয়েই মানুষের কবজি থেকে শুরু করে খাবার, ঝর্ণা ও ঘরবাড়ি সুরভিত করেছে কনৌজের আতর।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে আতরের চল পুরনো হয়ে গেলেও কনৌজের সুগন্ধি প্রস্তুতকারকেরা আজও অবিচলভাবে নিজেদের পুরনো ধাঁচে সুগন্ধি প্রস্তুত করে যাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি দেশে-বিদেশে নতুন প্রজন্ম এই সৌরভের সন্ধান পেয়েছে।
আতরের সৌরভ
অতি প্রাচীন এক সুগন্ধির নাম আতর। লাতিন শব্দমূল 'পার' ও 'ফিউম' (ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে) থেকে আমাদের কাছে পারফিউম বা সুগন্ধির আত্মপ্রকাশ। উদ্ভিদ বা ফুলপাতাকে পেষণ করে সরাসরি পানি বা তেলের মধ্যে দিয়ে দেয়ার মাধ্যমে মানুষ প্রথম এই সুগন্ধি তৈরি করে। আধুনিক কালের সুগন্ধিতে থাকা অ্যালকোহলের পরিবর্তে আতরে ব্যবহার করা হয় চন্দন তেল যা একে তৈলাক্ত ও অনেক বিশোষক করে তোলে। তাই এক ফোঁটা আতরও কখনো কখনো সারা শরীরে সুগন্ধ ছড়ায় এবং এর সৌরভ কয়েকদিন পর্যন্ত টিকে থাকে।
নারী ও পুরুষের কাছে সমানভাবে সমাদৃত এই আতর। আতর কোথাও পড়ামাত্রই তা থেকে ফুলেল, উগ্র, মৃগনাভিবাসিত, ধোঁয়াটে বা তৃণময় একটি গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
ঋতুর উপর ভিত্তি করে আতর 'উষ্ণ' (লবঙ্গ, দারচিনি, জাফরান) এবং 'শীতল' (জুঁই, ভেটিভার-একজাতীয় ঘাস যা ভারতীয় অঞ্চলে জন্মে, গাঁদা ফুল) হতে পারে।
কনৌজে এসব সাধারণ আতরের পাশাপাশি 'মিট্টি আতর বা মাটি আতর' নামে এক ধরনের আতর তৈরি হয় যা বৃষ্টির পরে ভিজে মাটির সোঁদা গন্ধের উদ্রেক করে। পাতন প্রক্রিয়ায় পাললিক মাটি তাপে দেয়ার ফলেই এই বস্তু তৈরি করা সম্ভব হয়।
'শামামা' নামে সকলের প্রিয় আরো এক ধরনের আতর তৈরি হয় যাতে রয়েছে ৪০ ধরনের ফুল, তৃণ ও মাসের পর মাস ধরে শুকানো ধুনোর সংমিশ্রণের পাতন। এই সুগন্ধি একে একে মিষ্টি, ঝাঁঝাল, ধোঁয়াটে ও ভেজা ভেজা সৌরভ ছড়াবে। গোলাপ, জুঁই বা অন্য যে উপাদানই হোক, ইউরোপের খ্যাতনামা বাড়িগুলোতে কনৌজের আতর ব্যবহৃত হয়।
সুগন্ধি বানানোর শিল্প
কনৌজে আতর বানানোর প্রক্রিয়া চলে আসছে প্রায় ৪০০ বছর ধরে। এমনকি সুগন্ধি শিল্পের আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত ফ্রান্সের প্রভেঁস রাজ্যের গ্রাস অঞ্চলেরও আগে কনৌজে সুগন্ধি শিল্প শুরু হয়। স্থানীয়ভাবে হিন্দিতে 'ডেগ-ভাপকা' নামে পরিচিত একটি কারিগরি প্রক্রিয়ায় কপারের তৈরি পাত্রে সুগন্ধি তৈরি করা হয়। আর এই পাত্রগুলো জ্বাল দিতে ব্যবহৃত হয় কাঠ এবং শুকনো গরুর গোবর।
আগ্রা থেকে কনৌজে পৌঁছাতে সময় লাগে চার ঘন্টা এবং ঔধ এর নবাবশাসিত ঐতিহাসিক লক্ষ্ণৌ শহর থেকে কনৌজের দূরত্ব মাত্র চার ঘন্টা। আর দশটা ভারতীয় ছোট শহরের মতো কনৌজও অনেকটা অতীত ও বর্তমানের মাঝমাঝি আটকে রয়েছে। এখানে সময় গড়ায় না, বরং স্তূপীকৃত হতে থাকে।
ক্ষয়িষ্ণু বেলেপাথরের কেল্লা, গম্বুজাকৃতির মিনার এবং অলঙ্কৃত ধনুকাকৃতির খিলান আজও ষষ্ঠ শতকের রাজা হর্ষবর্ধনের সময়কালে শহরটির পুরনো জাঁকজমকের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। শহরের পথে দেখা যায় মোটরসাইকেল আর পুরনো দিনের গাড়ি কিংবা কাঠের ঠেলাগাড়িতে করে পেয়ারা-পাকা কলার স্তুপ নিয়ে যাচ্ছেন ফলবিক্রেতারা।
কনৌজের প্রধান বাজার 'বড় বাজার' এর ভেতর ঢুকতেই মনে হবে কনৌজ যেন পুরোপুরি মধ্যযুগেই ফিরে গিয়েছে। এখানে বহু বছরের পুরনো দোকানগুলোতে থরে থরে কাচের বোতলে সাজানো রয়েছে আতর এবং রুহ কিংবা এসেনশিয়াল অয়েল, প্রতিটির সুগন্ধ যেন আগেরটির চাইতে সুন্দর। কুশন দেয়া ফ্লোরম্যাটে বসে লোকজন সেখানে আতরের সুগন্ধ নিচ্ছে কিংবা দেখা যায় তুলোর বলে আতর মাখিয়ে কানের পেছনে লাগিয়ে পরখ করছেন। আতর সাজ-এর এই বহু বছর পুরনো ব্যবসা নিয়ে তারা যেন এক অদ্ভুত রসায়নের সাম্রাজ্য খুলে বসেছেন।
এম এল রামনারায়ণ পারফিউমারস-এর পঞ্চম প্রজন্মের স্বত্ত্বাধিকারী প্রাঞ্জল কাপুর বললেন, 'পৃথিবীর সেরা সেরা সুগন্ধি ব্যবসায়ীরা এই গলির কাদা আর গোবর পেরিয়েই এখানে এসেছেন কনৌজের সুগন্ধি পরখ করতে। কারণ এখানকার সুগন্ধির কোনো তুলনা নেই।'
ফিরে আসি তেগ সিং এর কাছে। তেগ সিং নিজের ফুলের বস্তা নিয়ে এলেন কাপুরদের গোডাউনে, যেখানে খোলা প্রাঙ্গণে পাতন প্রক্রিয়ায় কাজ করা হয়। কাপুরদের মূল আতর প্রস্তুতকারক শিল্পী রাম সিং একটা বড়, চওড়া-গোলাকার পাত্রে ফুলগুলো ঢালেন এবং বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখেন। ঢাকনা লাগাবার আগে রাম সিং কাদা ও কাপড়মিশ্রিত একটা মিশ্রণ দিয়ে পাত্রের কানা বেঁধে ফেলেন। এর ফলে ঢাকনা লাগানো প্রক্রিয়াটি আরো মজবুত হয়।
ফুলের মিশ্রণ যখন মৃদু আঁচে ফুটতে শুরু করে তখন বাষ্পগুলো স্টিলের পাত্র থেকে একটা বাঁশের নলের মাধ্যমে অন্য একটি কপারের তৈরি পাত্রতে গিয়ে পড়ে, যেটিতে আগেই চন্দন তেল রাখা থাকে। কপারের পাত্রটি সাথে সাথেই গোলাপমিশ্রিত বাষ্প শুষে নিতে থাকে।
তেগ সিং এর আনা গোলাপগুলো থেকে আতর তৈরি হতে ৫-৬ ঘন্টা সময় লাগে। এই পুরো সময়টায়ই রাম সিং কে বেশ সচল থাকতে হয়। তিনি বারবার পাত্রর অবস্থা দেখেন, পানির তাপমাত্রা হাতে নিয়ে পরখ করেন, বাষ্পের হিসহিস ধ্বনি শোনেন এবং প্রয়োজনমতো জ্বালানি দেন। ৫০ বছর বয়সী রাম সিং জানালেন, তিনি বাল্যকাল থেকেই এই কাজ করে আসছেন। রাম সিং একজন আতর গুরুর সঙ্গে শিক্ষানবিশ হিসেবেও কাজ করেছেন।
একই প্রক্রিয়া পরদিন আবার নতুন এক ব্যাচ গোলাপ ফুল দিয়ে চলতে থাকে। আতর বানানো হয়ে গেলে তা উটের চামড়ার তৈরি বোতলে অনেক মাস সংরক্ষণ করা যায়। গোলাপের তৈরি এই আতরকে তরল স্বর্ণও বলা চলে। কারণ দামটা শুনলেই আপনি চমকে উঠবেন। এক কিলো (২ দশমিক ২ পাউন্ড ) আতরের দাম ৩০০০ ডলার!
কাপুর গর্বের সঙ্গেই জানালেন কিভাবে কোনো বিদ্যুৎ বা মিটার ব্যবহার না করেই বানানো আতর ফ্রান্সের গ্রাস অঞ্চলের আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি পারফিউমের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। তার কাছে এটা গ্রামের রান্নাঘরের রান্না করা ডাল এবং শহরে গ্যাসে রান্না করা ডালের পার্থক্যের মত, দুটোর স্বাদ কখনোই এক হবে না।
পরিশোধন প্রক্রিয়া
উদ্ভিদজাত সুগন্ধি তৈরিতে ইতিহাসে সবচেয়ে পুরনো নাম প্রাচীন মিশর। সেসময় মিশরে গাছপালা টুকরো টুকরো করে কেটে পিষে নিয়ে তা একটি তেলের সঙ্গে মেশানো হতো। যদিও প্রথম হাইড্রো-ডিস্টিলেশন প্রক্রিয়ার শুরুটা করেন পারস্যের বিখ্যাত শল্যবিদ ইবন সিনা। এছাড়া ১০ম শতকে ইন্দাস উপত্যকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য থেকে পারফিউম তৈরির প্রাথমিক উৎপত্তি সম্পর্কে জানা যায়।
১৫ শতকে ভারতের মালওয়া সালতানাতের ইসলামি শাসক গায়ত্রী শাহ 'নি'মতনামা' নামক বইতে প্রাচীন বিলাসবহুল জীবন সম্পর্কে লিখে যান। নিজের মাঝে সুন্দর গন্ধ বয়ে বেরানোর হাজারো উপকারিতার কথা সেখানে লেখা রয়েছে।
১৬ শতকে মুঘলরা ভারতে পা রাখে, আর সেই সাথে নিয়ে আসে ঘ্রাণশক্তি ও সৌরভকে ঘিরে তাদের তীব্র আকর্ষণ ও তৃষ্ণা। প্রথম মুঘল শাসক, বাবর, সৌরভ ও আধ্যাত্মিক শক্তির মধ্যে যে যোগসূত্র স্থাপন করে গেছেন সেই তত্ত্ব পরবর্তী দুই শতক ধরে মুঘল দরবারের হলঘরে বজায় থাকে।
বাবরের পুত্র আকবরের আলাদা একটি বিভাগই ছিল সুগন্ধি এবং রন্ধনশিল্পের প্রসার চর্চার জন্য। আইন-ই-আকবর নামে আকবরের লেখা বইটি থেকে জানা যায়, সুগন্ধিতে নিজের শরীর সুরভিত করার প্রতি সম্রাটের দুর্বলতার কথা। শুধু নিজের শরীরই নয়, আকবর তার গৃহের আসবাবপত্রও কড়া আতর দিয়ে সুরভিত করতে পছন্দ করতেন। এও বিশ্বাস করা হতো যে রাণী ও রক্ষিতারা তাদের ব্যক্তিগত আতর ছোট্ট শিশিতে করে গলায় ঝুলিয়ে রাখতেন।
সম্রাট শাহজাহানের পিতামাতা, সম্রাট জাহাঙ্গীর ও সম্রাজ্ঞী নূরজাহানকে বলা হয় কনৌজের প্রথম রাজকীয় ক্রেতা। স্থানীয় উপকথা অনুযায়ী, সম্রাজ্ঞী নূরজাহান একবার তার গোসলে কনৌজের গোলাপ আতর ব্যবহার করার পর থেকে গোলাপের আতরের বিশেষ ভক্ত হয়ে পড়েন।
সৌরভের পুনরুত্থান
কিন্তু কনৌজই কেন? আপনি যদি আগ্রা, লক্ষ্ণৌ এবং কানপুরের সম্মিলিত চিন্তা করেন, দেখতে পাবেন যে তিনটি মুঘল স্থানই সুগন্ধির প্রতি বিশেষ অনুরক্ত এবং কনৌজ এর ঠিক মাঝামাঝি অবস্থিত। গঙ্গার সমৃদ্ধ মাটিতে তৈরি এই শহরে বিশেষত জুঁই, ভেটিভার এবং দামাস্ক গোলাপের উচ্চ ফলন হয়। দামাস্কাস থেকে আগত হলেও দামাস্ক গোলাপের জাত আসলে এশিয়ায়। কাপুরের ভাষ্যে, সুগন্ধ তৈরির সেরা কারিগররা কনৌজেই ছিলেন। ফলে মুঘলদের চাহিদা পূরণ করতে তারা সোৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এসে কনৌজ একটা হিসাবনিকাশের সম্মুখীন হয়েছে। ক্ষমতা যখন ব্রিটিশদের হাতে চলে গেল, তখন মাইসোর চন্দনের দাম আরও বেড়ে গেল। কিন্তু ১৯৯০ সালে যখন ভারত সরকার চন্দনের বিক্রি নিষিদ্ধ করে দিলো, তখন আতরের দাম হয়ে যায় আকাশচুম্বী। একই সময়ে অভিজাত ভারতীয়রা নিজেদের আভিজাত্য প্রকাশের জন্য পশ্চিমা আমদানিকৃত আধুনিক পারফিউম ও ডিওডোরেন্টের দিকে ঝুঁকে পড়ে। চন্দনের বদলে লিকুইড প্যারাফিন ব্যবহার করতে শুরু করলেও তা আসল সুগন্ধির আভিজাত্য পূরণ করতে পারে না।
বর্তমানে কনৌজের অধিকাংশ আতরই যায় মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতের মুসলিমপ্রধান অঞ্চলগুলোতে। ১৭ শতকে সম্রাট শাহজাহান নির্মিত, পুরনো দিল্লীর চাঁদনি চক বাজারের গুলাব সিং জহরিমল আজ অবধি কনৌজ আতর ও আধুনিক পারফিউম দুটিরই ব্যবসা চালু রেখেছেন। শুক্রবার নামাজের আগে ও ঈদের মত উৎসবের সময় এই দোকানে আতরের সন্ধানরত মুসলমানদের ভিড় দেখা যায়।
কনৌজে পানসুপুরির সঙ্গে খাওয়ার জন্যে ব্যবহৃত এক প্রকার অসাধারণ গোলাপজলও উৎপাদিত হয়। কিন্তু আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা মুশকিল। তাই অনেকেই এই ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে আধুনিক পারফিউম বিক্রির ব্যবসায় নেমে গিয়েছেন।
কিন্তু তবুও কাপুর এখনো বেশ আশাবাদী। তিনি দিনের অনেকটা সময় পার করেন আন্তর্জাতিক পারফিউম ব্র্যান্ডগুলোর খোঁজখবর রাখা ও আতরের ঐতিহ্য রক্ষার উপায় খুঁজতে। তার মতে, পশ্চিমের সুগন্ধির আগ্রহ এখন পূর্বের দিকে ঝুঁকছে। কাপুর বলেন, 'সাধারণত পশ্চিমারা হালকা সুগন্ধি ভালোবাসে, কিন্তু আজকাল দেখবেন ডিওর, আর্মেসের মত ব্র্যান্ডগুলো এবং মিডল ইস্টার্ন পারফিউম হাউজগুলো গোলাপ কিংবা শামামার মত সুগন্ধির দিকে ঝুঁকছে।'
তবে দামী মানসম্মত আতরের দেশীয় বাজারে চাহিদা বাড়ছে। গুড আর্থ ও পারো নামের দুটি দেশীয় ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করা ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা অনিতা লাল জানালেন, তিনি ক্লাসিক রোজ ও ভেটিভারের এসেনশিয়াল অয়েল নিয়ে কাজ করেন। অনিতা চান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভারতের আতরের ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে।
তবে আতরের সবচেয়ে খ্যাতনামা গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হলেন একজন দেশীয় লক্ষ্ণৌয়ি নারী- জাহ্নবী লাখোতা নন্দন। গোয়া ও প্যারিসে নিজের পারফিউম লাইব্রেরি খোলার আগে তিনি জেনেভা ও প্যারিসে সাত বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, পারফিউম নিয়ে কথা বলা এখন অবসর সময়ের গল্পের মত। আগে জামাকাপড়, আসবাব সবকিছুতেই সুগন্ধি দেয়া হতো। আর এটা নিশ্চিতই ছিল যে আতর কনৌজ থেকেই আসবে। নন্দন বলেন, 'আতর আত্মার কথা বলে। একটা ছোট জায়গার সেসব ধোঁয়া ও আগুন যেন একটা রহস্যোদঘাটনের মত লাগে। কিন্তু আতর একেবারেই প্রকৃত ও ভেজালমুক্ত সুন্দর। এই জিনিস আপনি ইউরোপের ল্যাবে বানাতে পারবেন না।'
- সূত্র- ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক