হোটেলের অতিথি যখন হাতি!
‘শ্রীলঙ্কায় ছুটি কাটাতে যাব আর হাতি দেখব না, তাই হয় না কি?’ হ্যাঁ, শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে গেলে এমনটাই মনে হয় পর্যটকদের। অনেকেই সাফারিতে একটি হাতির পাল দেখার স্বপ্ন নিয়ে শ্রীলঙ্কা বেড়াতে যান।
কিন্তু সকালে নিজের হোটেল ঘরের দরজা খুলেই যদি দেখতে পান যে বিরাট বপুর এক হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনার হোটেলের করিডরে, তখন কেমন লাগবে?
তবে শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পূর্বের জেটউইং ইয়ালা হোটেলে এটি নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমন চিত্রই দেখা গেল।
হাতির নাম নাট্টা কোটা, যার মানে ছোট্ট লেজের হাতি। নাট্টা কোটার এমনই একটি ভিডিও গত সপ্তাহে ভাইরাল হয় ইন্টারনেট জুড়ে। ভিডিওতে দেখা যায় হোটেলের আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে আর নিজের শুঁড় দিয়ে জিনিসপত্র খোঁচাচ্ছে।
অনেকেই এই ভিডিও দেখে আপ্লুত হয়েছেন, শেয়ার করেছেন নিজেদের স্যোশাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে। শ্রীলঙ্কার ইয়ালা জাতীয় উদ্যানের পাশে জেটউইং হোটেলের কর্মীরা জানিয়েছেন, পূর্ণ বয়স্ক এই এশিয়ান ষাঁড় হাতি ২০১৩ সাল থেকেই তাদের হোটেলের ‘সবচেয়ে অনুগত পৃষ্ঠপোষক’।
'প্রথম কয়েক বছর, নাট্টা কোটা আমাদের এক মৌসুমী অতিথি ছিল, বছরে কয়েক মাসের জন্য দেখা দিত। এই সময়ে তিনি সৈকতের প্রান্তে অন্যান্য রিসর্টগুলোতে ঘন ঘন পরিদর্শন করে বেড়াচ্ছিল।’ মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন।
‘তবে জেটউইংয়ে তাকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া হয় বলেই হয়তো কয়েক বছর আগে এখানেই স্থায়ী বসত গাড়ে সে। নাট্টা কোটা দিনভর আমাদের ঝোপঝাড়ের ছায়ায় ঘুমায় এবং হোটেলের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়।’
কিন্তু নাট্টা কোটা কিন্তু সবসময় এমন লক্ষ্মী থাকে না। দুষ্টুমিও করে বেড়ায় হোটেল জুড়ে। রান্নাঘর থেকে খাবার আর ফল চুরি করতে সে রীতিমতো ওস্তাদ!
তবে এজন্য নাট্টা কোটাকে শাস্তি না দিয়ে বরং তার ‘দুষ্টুমির’ জন্য ছেড়ে দেয় হোটেল কর্মীরা। তবে পর্যটকরা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়েন এজন্য তাদের ফল এবং শাকসব্জির দিকে নজর রাখার জন্য সতর্ক করে দেন তারা। আর রান্নাঘরের দরজার সামনে একটি বৈদ্যুতিক বেড়া তাকে খাবার চুরি থেকে দূরে রাখে।
জেটউইং এর কর্মকর্তারা জানান, ‘নাট্টা কোটার শান্ত আচরণ আমাদের অতিথিদের খুব আনন্দ দেয়। আর কলাগাছ চিবিয়ে খাচ্ছে- ওর এমন ভিডিও দিয়ে তো ইন্টারনেট সয়লাব।’