ক্যাফে রিভার ফ্রন্ট: তুরাগপারে এক কন্টেইনার রেস্তরাঁর গল্প
চল্লিশ ফুট দীর্ঘ, আট ফুট চওড়া আর সাড়ে ৯ ফুট উচুঁ- এমন ১৪টি কন্টেইনার দিয়ে তৈরি হয়েছে ক্যাফে রিভার ফ্রন্ট। তুরাগ নদীর পারে বিরুলিয়া ব্রিজের ধারে রেস্টুরেন্টটি। জায়গার আসল মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের থেকে লিজ নিয়ে এখানটা সবুজ ছায়াময় জনপরিসর হিসেবে গড়ে তুলছে। পরিকল্পনায় আছে আরো কিছু যেমন ইনোভেশন সেন্টার, ক্র্যাফট ডিসপ্লে সেন্টার গড়ে তোলাও। তবে আপাতত ১ ডিসেম্বর থেকে রেস্তরাঁটি চালু করা হচ্ছে পরীক্ষামূলকভাবে (সফট লঞ্চিং)। দক্ষিণ দিকে এর প্রবেশ দ্বার, উত্তর দিকে নদী কিছু দূরে তবে পশ্চিম দিক একেবারেই নদী ঘেঁষা, মিরপুর-আশুলিয়া রাস্তাটি পুবপাশে। শীতের শুরু হলেও উত্তুরে হাওয়া ভিতরে ঠান্ডা ছড়িয়ে যাচ্ছে, নদী ছুঁয়ে আসা পশ্চিম দিকের বাতাসও হিমেল।
নতুন স্মৃতি জমা হবে
পশ্চিম দিকে নেমে গেলে একটি জেটি পাওয়া যায় যার গায়ে দুটি জলতরী বাঁধা। কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা রেস্তরাঁর মেহমানদের কাছের গোলাপগ্রাম বা বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি অথবা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরিয়ে আনার। আমার অবাক হওয়া দেখেই বুঝি হুমায়ুন কবীর যিনি রেস্তরাঁটি পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত, বললেন, 'আমরা একে কেবল একটা খাওয়ার জায়গা হিসেবে গড়ে তুলছি না, চাই দিনভর গেস্টরা এখানে অবসর যাপন করুন, ফেরার সময় মনে রাখার মতো স্মৃতি নিয়ে ফিরুন। তা হতে পারে মাছ ধরা বা সবজি চাষ। কাস্টমার নয়, আমরা চাইছি গেস্ট। একটি পরিবারে বৃদ্ধ, মাঝবয়সী, নারী ও পুরুষ এবং শিশুও থাকে। প্রত্যেকের জন্যই এখানে কিছু না কিছু থাকবে। সবারই অবসর-বিনোদনের জায়গা করে তোলার চেষ্টা রাখব আমরা।'
তিন তলা এ রেস্তরাঁ। প্রথম তলায় থাকছে কিডস জোন, বারিস্তা পয়েন্ট, স্পোর্টস জোন এবং প্রেয়ার রুম। স্পোর্টস জোনে টেবিল টেনিস, ক্যারম, দাবা, পুল-বিলিয়ার্ড খেলার সুযোগ থাকবে। আউটডোর প্লাটফর্মেও রোদ পড়ে এলে বসার জায়গা করা যাবে। এছাড়া পহেলা বৈশাখের মতো বিশেষ দিনগুলোতে এখানে মঞ্চ বেঁধে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার কথাও ভেবে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে ২২০ জনের বসার জায়গা হবে। দ্বিতীয় তলায় একটি ভিআইপি হল ও প্রাইভেট লাউঞ্জ আছে। ভিআইপি হলে কর্পোরেট মিটিং করার সুযোগ থাকবে। তিনটি ফুড হলও থাকছে। তৃতীয় তলাতেও থাকছে একাধিক ফুড হল। তৃতীয় তলা থেকে উত্তর দিকের সৌন্দর্য নয়নাভিরাম। বিস্তীর্ণ খোলা জায়গা আর সর্পিল তুরাগ। ফাস্ট ফুড, থাই ও চাইনিজ ফুড পরিবেশন করার কথাই আপাতত ভাবছেন হুমায়ুন। তবে যখন গ্র্যান্ড ওপেনিং হবে, ৭-৮ মাস পরে, তখন 'ফাইন ডাইন' মানে উচ্চমানের পরিষেবা নিশ্চিত করা হবে।
বাঁশঝাড়, হিজল আর বট দিবে ছায়া
জায়গাটি নীচু ছিল, বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। তাই একটু বাতাসেই বালি ওড়ে। এজন্য হুমায়ুন প্রচুর গাছপালা লাগিয়েছেন। পশ্চিম দিকের বাঁশঝাড়গুলো অনেকটাই এখন দৃশ্যমান। উত্তর দিকে বটগাছ লাগিয়েছেন, পশ্চিম দিকে হিজল। বড় রাস্তা থেকে ভিতরে রেস্তরাঁ পর্যন্ত যে সিকি কিলোমিটার রাস্তা আছে তার দুই ধারে ছায়াদানকারী গাছ লাগিয়েছেন। আগামী বর্ষার আগেই বালির দাপট অনেকটা কমে যাওয়ার আশা করছেন। তবে বর্ষাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বর্ষায় বৃষ্টি যেমন হয়, ঝড়ও বয়। তাই তখন পরীক্ষাটা হয়ে যাবে, কন্টেইনারে কোনো লিক মানে ছিদ্র বা ফাটল থাকলে ধরা পড়বে এবং ঝড়ো বাতাস কোথায় কি নাড়িয়ে দিয়ে যায় তাও বোঝা যাবে। তাই আগামী বর্ষার পরই হবে গ্র্যান্ড ওপেনিং।
রেস্তরাঁটির স্থপতি শেখ মোহাম্মদ রেজওয়ান চেয়েছিলেন ভিত্তিটাও হবে পোড়া কেরোসিন কাঠের, তাহলে জাহাজের আবহটা ভালো আসবে। দুটি কন্টেইনার জোড়া দিতে যেয়ে দেয়ালগুলো থেকে যতটা কেটে ফেলতে হয়েছে সেগুলো দিয়ে টেবিল বানানোর চিন্তাও মাথায় আছে, গরম কমাতে ইনসুলেশন (তাপ নিরোধক) হিসাবে স্যান্ডউইচ প্যানেল ব্যবহারের কথাও ভেবেছিলেন, তবে এসি থাকবে বলে বেশি ঝামেলায় যেতে চায়নি কেউ। অবশ্য লতানো ঝাড় প্রায় সব দিকের দেয়ালেই ব্যবহার করা হচ্ছে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ নিয়ে স্থাপনা তৈরির আগ্রহ তার অনেকদিনের। এবার সে গল্পটি শোনা যাক।
পার্কে টায়ারের রাইড
বুয়েট থেকে বিআর্ক (ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার) সম্পন্ন করেছেন রেজওয়ান ২০১২ সালে। তারপর যোগ দিয়েছিলেন স্টেট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগে। একইসঙ্গে কয়েকজন সহপাঠী ও বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছিলেন একটি স্থাপত্য চর্চা প্রতিষ্ঠান বা আর্কিটেকচার ফার্ম। প্রথম দিকে আবাসিক ভবনেরই নকশা করতেন। যেহেতু নিজে শিক্ষক, অংশীদের মধ্যে আরো একজন শিক্ষক থাকায় চাইতেন এমন নকশা করতে যা ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপ্রেরণা দেবে। ব্যতিক্রমী একটি কাজ পেলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়, কাউখালি গ্রামে । একটি মসজিদের আগের কাঠামো বজায় রেখেই নতুনরূপে আরো বড় করে তুলতে হবে। হালদা নদীর পাড়ে ঘন সবুজের মধ্যে এর অবস্থান। রেজওয়ানের বাড়ি চট্টগ্রাম বলে সময়ও দিতে পেরেছিলেন বেশি। নীল-সবুজের মধ্যে সাদা একটি মসজিদ তারা নির্মাণ করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। দুই বছর পর মানে ২০১৪ সালে তিনি যোগ দিলেন ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।
প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক কর্মসূচীর সঙ্গে যুক্ত। বিশ্ব ততদিনে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং তার প্রভাব নিয়ে সরগরম, সচেতনতাও বাড়ছিল ক্রমে ক্রমে। পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠার নীতি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই যখন বিরুলিয়ায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়, বিশ্ববিদ্যালয়টি তাতে পুর্নব্যবহারযোগ্য ও নবায়নযোগ্য উপকরণ দিয়ে স্থাপনা তৈরির প্রয়াস নিল। ফলাফলে কন্টেইনার হাউজ এবং কন্টেইনার দিয়ে তৈরি একটি ছাত্রী হোস্টেল প্রতিষ্ঠিত হলো। রেজওয়ান ও তার বন্ধু স্থপতি আজকা ইশিতা এর মধ্যে নীলফামারি উপজেলা পরিষদের শিশু পার্ক তৈরির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তারা গতানুগতিক চিন্তার বাইরে গিয়ে টায়ার দিয়ে বিভিন্ন রাইড গড়ে তুলেছিলেন।
পুরোনো হলো নতুন
স্থপতিদের প্রতিষ্ঠান আইএবি'র সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ রেজওয়ান। আইএবি স্থাপত্য বিষয়ে বিভিন্নরকম গবেষণা ও চর্চা করে থাকে। তার মধ্যে গ্রামের প্রান্তিক মানুষের জন্য স্বল্প খরচে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই বাড়ির নকশা করা যেমন একটি। রেজওয়ান এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত আছেন। রিসাইকেলেবল ও রিইউজেবল উপকরণ নিয়ে রেজওয়ান নিবিড়ভাবে ভাবতে থাকেন ২০১৮ সালে গ্রেট থুর্নবার্গ যখন বললেন, ধরিত্রীকে আমরা ইতিমধ্যে নিঃশেষ করে ফেলেছি, এখন পুরোনোকেই নতুন করে সাজাতে হবে।
টায়ার পুনর্ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজর কেড়েছিলেন রেজওয়ান আগেই। তাই যখন তুরাগ পাড়ে একটি স্থাপনা গড়ার কথা ভাবা হলো তখন তাকে প্রস্তাব দেওয়া হলো। কন্টেইনার ব্যবহার করে স্থাপনা গড়ার প্রয়াস ঢাকায় নতুন নয়। শেফ'স টেবিল কোর্টসাইড যেমন সবাই চেনে। ইসিবি চত্বরে আছে এএসডব্লিউ ফুড পার্ক। মিরপুর ২ নম্বরের সনি স্কয়ারের ছাদেও একটি কন্টেইনার শোভা বর্ধন করছে। বিদেশের কন্টেইনার স্থাপনাগুলোও গুগল করে বা ম্যাগাজিন থেকে স্টাডি করলেন রেজওয়ান। তারপর প্লাস্টিক উড দিয়ে কিছু মডিউল বানালেন। বলছিলেন তিনি, 'আমি চাইছিলাম কন্টেইনারগুলোকে যতটা পারা যায় দৃশ্যমান করতে এবং এর নিজস্ব সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে। কন্টেনাইনারের নমনীয়তা (ফ্লেক্সিবিলিটি) এবং ডাইমেনশন (মাত্রা) তৈরির সক্ষমতা আমাকে আকৃষ্ট করেছিল। তাই একটির ওপর আরেকটি বসিয়ে, দুটি একসঙ্গে করে, বারান্দা হিসাবে অর্ধেক বের করে এনে নকশা করলাম। অনেকটা লেগো হাউজের মতো হলো দেখতে। তিন তলা হওয়ায় এর সৌন্দর্যও প্রকাশ পেল যথেষ্ট পরিমাণে। সহজেই কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলাম।'
চাহিবামাত্র দেয়াল, ছাদ ও দরজা
বর্তমান সময়ে স্থাপনা নির্মাণ প্রক্রিয়া মোটা দাগে দুই রকমের- ভেজা (ওয়েট) ও শুষ্ক (ড্রাই)। সিমেন্ট, কংক্রিট, ইট দিয়ে যে স্থাপনা তৈরি হয় তাতে পানির ব্যবহার হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে, আর কন্টেইনারের মতো উপকরণ দিয়ে তৈরি স্থাপনাগুলো হয় শুষ্ক। এতে ঝালাই বা ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করা হয় ব্যাপক হারে। কন্টেইনার স্থাপনা শীতপ্রধান দেশগুলোতে অনেক জনপ্রিয়। প্রধান কারণ দ্রুত এবং স্বল্প খরচে একে বাসযোগ্য করে তোলা যায়। ওইসব দেশে দুইজনের একটি পরিবারকে দেখা যায় বনের কাছে, জলাশয়ের ধারে একটি কন্টেইনারেই বাসা বানিয়ে ফেলেছে। বড় সুবিধা এর দেয়াল, ছাদ ও দরজা পাওয়া যাচ্ছে রেডিমেড। উপরন্তু লোহা দিয়ে তৈরি বলে এগুলো দিনের তাপ ভিতরে বেশি ধরে রাখতে পারে আবার বাইরের ঠান্ডাও কম ঢোকায়। আমাদের দেশে অবশ্য এটাই বড় প্রতিবন্ধকতা। গরমের দিনে বিকট গরম হয়ে ওঠে একেকটি কন্টেইনার। রেজওয়ান বলছিলেন, 'আমাদের তাই ক্রস ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। পাশের নদী থেকে যতটা সুবিধা নেওয়া যায় তার সবটাই নেওয়ার চেষ্টা রেখেছি। বাইরের দেয়ালগুলোয় লতা-গুল্মের একটি আবরণ তৈরি করা হচ্ছে যা কিছুটা হলেও তাপ ঠেকাবে।'
স্থাপনাটিতে কন্টেইনার ও গ্লাসের (ভেন্টিলেশনের জন্য জানালা হিসাবে) ব্যবহার অর্ধেক অর্ধেক। তিনি এয়ারকন্ডিশন ও পলিশড মেঝের পক্ষে ততটা ছিলেন না। ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে এসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যারা এসির মধ্যে থাকছে তারা আরাম বোধ করে কিন্তু যে তাপ বাইরে নিক্ষিপ্ত হয় তা মাইক্রো ক্লাইমেটের ( স্বল্প আয়তন ধরে কোনো নির্দিষ্ট এলাকার জলবায়ু) তাপমাত্রাও বৃদ্ধি করে যা আবার জীবাণুর বংশবৃদ্ধিতেও সহায়ক। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এখন সেসব জায়গায়ও মশা বাস করতে পারছে আগে যেসব জায়গায় পারত না। তাপমাত্রার বৃদ্ধিতে মশার প্রজনন দ্রুত হচ্ছে, ফিমেইল (স্ত্রী) মশা অধিক সক্রিয় হচ্ছে, সংক্রমণ বৃদ্ধিতে সহায়ক ইউকিউবিশন পিরিয়ডও কমে যাচ্ছে যার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই রেজওয়ান বলছিলেন, 'বাসস্থান ও পরিপার্শ্বের সঙ্গে স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিবিড়। তাই চিন্তা হলিস্টিক বা কমপ্রিহেনসিভ হওয়া দরকার।'
সমুদ্রবন্দর আছে, কন্টেইনার সহজলভ্য
এসি না থাকলে রেস্তরাঁয় কি গেস্ট কমে যাবে না? জানতে চাইলে রেজওয়ান বললেন, `হ্যা কম আসবে কারণ প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের আগের আত্মীয়তা আর নেই। আমরা দিনে দিনে প্রকৃতি থেকে বিযুক্ত হয়ে যাচ্ছি। তাই গেস্টদের চাহিদার কথা মাথায় রাখতেই হচ্ছে। একইকারণে ইন্টেরিয়রও পলিশ বা চকচকে করতে হয়েছে। তাছাড়া তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিতে উঠলে এসি ব্যবহার না করে উপায়ও থাকবে না। তবে আমি ভাবছিলাম এর ব্যবহার কতটা কমানো যায়!'
রেজওয়ান নীচতলায় ৮টি, দ্বিতীয় তলায় ৪টি ও তৃতীয় তলায় ২টি কন্টেইনার ব্যবহার করেছেন। এতে ওজন ক্রমান্বয়ে নীচে নেমে এসেছে অথবা বলা যায় নীচ থেকে ওপরটা ক্রমেই হালকা হয়েছে। কন্টেনাইনার কিছু আড়াআড়ি কিছু লম্বালম্বি বসানোয় ওজন ছড়িয়েও গেছে। বাকী থাকা ছয়টি কন্টেইনার দিয়ে সংলগ্ন আরেকটি স্থাপনাও তৈরি করার কাজ চলছে, সেটি রেস্তরাঁর এক্সটেনশান। সব মিলিয়ে সাড়ে ৫ হাজার বর্গফুট জায়গা তৈরি হয়েছে।
আমাদের দেশে কন্টেইনার স্থাপনা জনপ্রিয় হওয়ার একটি কারণ সরকারি অনেক জমি বেকার পড়ে থাকা। সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া জমিতে যেহেতু স্থায়ী কাঠামো গড়া যায় না তাই কন্টেইনার হাউজ একটি ভালো বিকল্প। আড়াই মাসের মধ্যে ফাউন্ডেশন ছাড়াই এ দিয়ে স্থাপনা তৈরি করে ফেলা যায়। রেস্তরাঁ কাজে না এলে রেস্ট হাউজে পরিবর্তন করে নেওয়াও কঠিন কাজ নয়। মেগামল বা মিলনায়তন হিসেবেও ব্যবহার করা চলবে। আমাদের দেশে একাধিক সমুদ্র বন্দর আছে। কন্টেইনার প্রয়োজনীয় সংখ্যায় পাওয়াও কঠিন নয়। সেগুলো অব্যবহৃত পড়ে থাকলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কন্টেইনার পাওয়া যায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকায়। কেবল খেয়াল রাখা দরকার চোরা ফাটল আছে কি না আর তা পরীক্ষা করার জন্য বর্ষাকালই উপযুক্ত সময়।