কুমিল্লা জাদুঘর: আলীবাবা স্যারের ৩৫ বছরের সাধনা
২০১৪ সালের কথা। কুমিল্লা জিলা স্কুলে ক্লাস এইটে পড়ি। আমাদেরকে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পড়াতেন নাজমুল আবেদীন স্যার। সবার কাছে যিনি আলীবাবা স্যার নামেই বেশি জনপ্রিয় ছিলেন। আলীবাবা স্যারের ক্লাস মানেই ছিল আমাদের জন্য বিশেষ কিছু!
ক্লাসে পড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ম্যাজিক দেখাতেন তিনি। স্যারের পাঞ্জাবির পকেটে সবসময় ম্যাজিক দেখানোর সরঞ্জাম থাকতো। আবার পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন জিনিসপাতি ক্লাসে নিয়ে আসতেন। একদিন ক্লাসে নিয়ে আসলেন একটি গোল পিতলের বাটি আর ছোট একটি কাঠের টুকরা।
ক্লাসের ৯০ জোড়া চোখ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম দু'টি জিনিসের দিকে। স্যার দিগ্বিজয়ের হাসি হেসে বললেন, "কয়দিন আগে নেপাল গিয়েছিলাম। এই জিনিস সংগ্রহ করলাম বৌদ্ধ মন্দির থেকে। এর নাম হলো 'তিব্বতি সিঙ্গিং বৌল'। এটা দিয়ে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা পূজা করে।" এ বলে পিতলের বাটির চারপাশে কাঠের টুকরাটি ঘোরাতে লাগলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো ক্লাস জুড়ে তিব্বতি সিঙ্গিং বৌলের কম্পনে শোঁশোঁ শব্দ শুনতে পাই সবাই।
স্যার দেশ-বিদেশ ঘুরে এমন বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করতেন আর মাঝেমাঝেই আমাদেরকে ক্লাসে এনে দেখাতেন। কিছুদিন পর শুনতে পাই স্যারের এই শখ বহু পুরোনো। প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক বিভিন্ন জিনিস আছে তার সংগ্রহে। কুমিল্লায় নিজের বাসায় এসব নিয়ে বিরাট সংগ্রহশালা তৈরি করেছেন তিনি।
স্যারের এই সংগ্রহশালা যেন সবাই দেখতে পারে সেজন্য তিনি এর নাম দেন কুমিল্লা জাদুঘর। নিজের বাসাতেই শুরু করেন জাদুঘরের কার্যক্রম। প্রতি শুক্রবারে দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে স্যারের বাসা ঘুরে দেখতে পারতো তার বিচিত্র সংগ্রহ। ২০১৬ সালে কুমিল্লা জাদুঘর যাত্রা শুরু করে। খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করে এই আয়োজন।
২০২২ সালে জাদুঘরের প্রসার আরও বাড়ানোর জন্য কুমিল্লার নগর উদ্যানে একটি ঘরে নতুন করে স্থান পায় তার সংগ্রহশালা। তৎকালীন মেয়রের উদ্যোগে স্যারের বাসা থেকে নগর উদ্যানে পসরা সাজিয়ে বসে কুমিল্লা জাদুঘর। এখন জাদুঘরে ঢোকার এন্ট্রি ফি ১০ টাকা মাত্র।
দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে এমন পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী জিনিস সংগ্রহ করছেন নাজমুল আবেদীন স্যার। সেদিন কুমিল্লা জাদুঘরে গিয়ে স্যারের সাথে আলাপ হলো। জানতে পারলাম কীভাবে ছোটবেলার শখ থেকে এই পর্যন্ত আসলেন আমাদের সবার প্রিয় আলীবাবা স্যার। আজ আপনাদের শোনাবো সেই গল্প।
শৈশবেই আগ্রহের বুনন
ক্লাস এইটে পড়তেন নাজমুল আবেদীন। একদিন দাদীর একটি পুরনো পানের বাটা দেখে আগ্রহ জাগে সেটিকে নিজের সংগ্রহে রাখার। তারপরে নানার থেকে চেয়ে নেন পুরনো একটি রেডিও। এভাবে ঘরের বিভিন্ন পুরাতন জিনিস নিজের কাছে রাখার অভ্যাস গড়ে তোলেন। ধীরে ধীরে এটি পরিণত হয় শখে।
সময়ের সাথে সাথে সংগ্রহ বড় হতে শুরু করে। পরিবারের মুরুব্বিরা তাদের বিভিন্ন জিনিস দেওয়া শুরু করেন নাজমুল আবেদীনের কাছে। কারো কাছে পুরনো আমলের কয়েন, নোট বা স্ট্যাম্প থাকলে সেগুলোও চেয়ে নিজের কাছে জমানো শুরু করেন তিনি।
প্রথম থেকেই পুরনো জিনিস নেয়ার সময় কোনোরকম বাছবিচার করেননি নাজমুল আবেদীন। হাতের কাছে যা পেতেন, যেখান থেকেই পেতেন- সেটা ঐতিহ্যবাহী মনে হলেই নিজের কাছে নিয়ে রাখতেন তিনি।
নাজমুল আবেদীনের বাবা ছিলেন কুমিল্লার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন। শিক্ষিত পরিবারের সন্তান হওয়ার কারণে পরিবার থেকে সবসময় উৎসাহ পেয়েছেন তিনি। শৈশব থেকেই সমাজের নানা শ্রেণীর মানুষের আনাগোণা ছিল তার বাসায়। যাদের থেকে বিভিন্ন সময়ে অনেক কিছু সংগ্রহ করতে পেরেছেন নাজমুল আবেদীন।
স্কুল-কলেজের বন্ধুরাও তার এই শখ সাদরে গ্রহণ করেছিল। অনেকেই জিনিসপত্র দিয়ে নাজমুল আবেদীনের সংগ্রহশালা সমৃদ্ধ করেছে, এখনো করছে। কুমিল্লা জাদুঘর তৈরির পেছনে পরিবার ও বন্ধুদের উৎসাহ ও সহযোগিতার কথা অকপটে স্বীকার করেন নাজমুল আবেদীন।
দিন যায়, সংগ্রহ বাড়ে
২০০২ সালে নাজমুল আবেদীন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতকোত্ত্বর শেষ করে কুমিল্লা জিলা স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। চাকরি জীবনে প্রবেশের পর তার সংগ্রহশালা সমৃদ্ধ করার কাজ বেগবান হয়। তিনি বলেন, "যখন কলেজে পড়তাম, দেশের বিভিন্ন জেলায় যেতাম ট্রেনে করে। খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করতাম যে কোথায় কী পুরনো জিনিসের সন্ধান আছে। কোনো জিনিসের খোঁজ পেলেই ছুটে যেতাম সেটা সংগ্রহ করার জন্য। অনেক সময় পুরনো জিনিসের মালিক থেকে বিভিন্ন জিনিস কেনা লাগতো। যা ছাত্রাবস্থায় একটু কষ্টকর ছিল। চাকরিতে ঢোকার পর টাকা-পয়সা হাতে আসে, পুরনো জিনিস কেনাও সহজ হয়।"
পুরনো জিনিসের সন্ধানে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া- সমগ্র বাংলাদেশ চষে বেড়িয়েছেন নাজমুল আবেদীন। শুধু দেশেই না, এশিয়ার সাতটি দেশে তিনি গিয়েছেন নিজের সংগ্রহশালার জন্য। নেপাল, ভুটান, ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ঘুরে পুরনো ও ঐতিহাসিক জিনিস সংগ্রহ করেছেন তিনি। এর মধ্যে নেপাল ও ভারত থেকেই সবচেয়ে বেশি জিনিস পেয়েছেন।
ধীরে ধীরে সংগ্রহ বাড়তে থাকে নাজমুল আবেদীনের। কুমিল্লার মগবাড়ি এলাকায় তাদের বাড়ির সামনের রুমে তাক বানিয়ে জিনিস রাখা শুরু করেন তিনি। তার সংগ্রহশালায় ঐতিহ্যবাহী রকমারি তৈজসপত্র, হাতি, উট, হরিণ, বুনো মহিষের শিং ও মাথা, লাঙল, জোয়াল, মাছ ধরার চাঁই, তাঁতের চর্কি, পুরোনো দা, শত বছর আগের ইট, বিভিন্ন খনিজসম্পদ, পাথর ও পাললিক শিলা আছে। আছে পুরনো আমলের নানান প্রযুক্তির সরঞ্জাম। যেমন– প্রাচীন আমলের প্রায় ২০০টি তালা-চাবি, শত বছর আগের ঘড়ি, টেপ রেকর্ডার, রেডিও, ৩২ কেজি ওজনের ফ্যান, হ্যাজাগ লাইট, টেলিফোন, কলের গানের যন্ত্রপাতি। এছাড়াও প্রথম তৈরি টেলিভিশন, পুরাতন রেডিও সেট, টেলিফোন সেট, বেয়ারিংয়ের গাড়ি, পুরোনো দিনের ক্যামেরা ও বাংলা সিনেমার প্রাচীন রিল আছে তার সংগ্রহে।
নাজমুল আবেদীনের কাছে আছে গ্রাম বাংলার নানান ঐতিহ্যবাহী জিনিসের সমারোহ। ঢেঁকি, পিতলের সুপারি কাটার ছড়তা, লাউয়ের ডুগডুগি, হুঁকা, ঘোড়ার চামড়ার আসন, খড়ম, হারিকেন, বিভিন্ন পশু-পাখির হাড়, সের দরের বাটখারা, লোহার পাল্লা, বাবুই পাখির বাসা, পিতলের বদনা-চেরাগ, প্রাচীন ছুরি, জমি মাপার লোহার শিকল। আরো আছে তাল পাতার নৌকা, পালকি, গরুর কাইর, শ্রমিকদের কাজের লোহার সরঞ্জাম, কাসা-পিতলের ডেগসহ নানান বিলুপ্তপ্রায় সামগ্রী।
তিনি বলেন, "আমাদের গ্রাম বাংলার অনেক ঐতিহ্যবাহী জিনিস আজ বিলুপ্তির পথে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এগুলো সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছি আমি। যেন তারা নিজেদের শেকড় কখনো ভুলে না যায়। আমাদের সন্তানরা অনেকেই কখনো পালকি দেখেনি চোখের সামনে, অনেকেই জানে না যে আজ থেকে ৫০ বছর আগে জমি মাপার জন্য লোহার শিকল ব্যবহার হতো। সের দরের বাটখারা বলতে যে কিছু আছে- এটা আমার নিজের প্রজন্মেরও অনেকে জানে না! এসব কারণে আমি নিজ দেশের ঐতিহ্য লালন করেছি সবসময়।"
পুরনো জিনিস সংগ্রহের নেশায় তিনি দেশের বাইরে গিয়েছেন বহুবার। সংগ্রহ করেছেন প্রায় ১০০টি দেশের প্রাচীন ও বর্তমান আমলের মুদ্রা। নানান দেশের অনেক স্ট্যাম্প আছে তার কাছে। আরও আছে অনেক দেশের নতুন-পুরান ব্যাংক নোট। প্রাচীন রূপার মুদ্রাও আছে তার সংগ্রহে।
এছাড়াও নানান রকম বিচিত্র ও দামি জিনিসের সংগ্রাহক তিনি। সাপুড়েদের বীণ সংগ্রহ করার জন্য বহুদিন পরিশ্রম করেছিলেন, ঘুরেছিলেন বিভিন্ন জেলায়। এক সাপুড়ে থেকে বীণ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত। শুধু সংগ্রহ করেই ক্ষান্ত হননি তিনি, সেই সাপুড়ে থেকে বীণ বাজানোও শিখে নিয়েছিলেন!
একবার চাঁদপুরে যেয়ে ২০ কেজি ওজনের পিতলের হাড়ি সংগ্রহ করেন তিনি। প্রায় ২০ হাজার টাকা দিয়ে সে হাড়ি কিনে নিতে হয় তাকে। এখন পর্যন্ত এটাই তার সংগ্রহের সবচেয়ে দামি জিনিস। ২০০৫ সালের দিকে ভারত-নেপালের বর্ডার থেকে সংগ্রহ করেছিলেন গৌতম বুদ্ধের আমলের তালা। আবার নেপালে যেয়ে সংগ্রহ করেন ৩৫০ বছর আগের তালা। পুরনো আমলের তালা-চাবির বিশাল সংগ্রহ আছে তার জাদুঘরে।
তার জাদুঘরের বিভিন্ন জিনিস ধার করে অনেকেই নাটক-সিনেমা শুটিং করে। দীপংকর দীপনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি সিনেমায় কুমিল্লা জাদুঘরের ১৯৭১ সালের অনেক পুরনো জিনিস নেওয়া হয়েছিল।
'কঠিন যে পথ…'
"৩৫ বছর ধরে আমি জাদুঘরটাকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছি। এই পর্যন্ত আসার পথ ছিল অনেক কঠিন। অনেকে আমাকে অনেক কিছু দিয়ে সাহায্য করলেও, বেশিরভাগ কাজ আমাকে একা করতে হয়েছে। চারপাশে খোঁজখবর রাখতে হয়েছে আমাকে সবসময়। এখনো আমি প্রতিদিন প্রায় আটটা সংবাদপত্র পড়ি। কোনো এলাকায় প্রাচীন জিনিসের সন্ধান পেলেই আমি ছুটে যাই সেখানে," জানান নাজমুল আবেদীন।
অনেক সময়ই জিনিসের আসল মালিক তাদের উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া জিনিস দিতে চান না। তাদেরকে অনেকভাবে বুঝিয়ে, অনেক সময় চড়া মূল্য দিয়ে নিজের জাদুঘরের জন্য জিনিস এনেছেন নাজমুল আবেদীন। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ টাকার জিনিস উঠিয়েছেন তিনি জাদুঘরে। এই পুরো টাকাই তার নিজের পকেট থেকে দেওয়া। কখনো কোনো পৃষ্ঠপোষকের সহায়তা পাননি তিনি।
নগর উদ্যানে কুমিল্লা জাদুঘরের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরও খরচ বৃদ্ধি পায়। প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয় জাদুঘরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। যদিও টিকেটের টাকা থেকে কিছু খরচ উঠে আসে। তবে তা যথেষ্ট না।
ব্যক্তি নাজমুল আবেদীন
নাজমুল আবেদীন বর্তমানে চাঁদপুর টেকনিক্যাল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি আপাদমস্তক সৃজনশীল ও গুণী একজন মানুষ। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি লেখালেখি ও ফটোগ্রাফি করে থাকেন। আর নিজের সংগ্রহের শখ লালন করে কুমিল্লা জাদুঘরের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে তো আছেনই।
বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা তার নেশা। অনেক লটারিতেও তিনি নাম লেখান। বেশিরভাগ প্রতিযোগিতাতেই তিনি জয়লাভ করেন। কীভাবে দেশব্যাপী এসব প্রতিযোগিতায় তিনি জিতে নেন প্রথম স্থান? শুধুই ভাগ্য নাকি সৃজনশীলতাও আছে? জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, "আমি ভাগ্যবান একজন মানুষ। কিন্তু প্রতিযোগিতায় জয়লাভের ক্ষেত্রে আমি সবসময় সৃজনশীলতাকে এগিয়ে রাখবো।"
২০১৩ সালে শেরাটন হোটেল তাদের নাম বদলানোর ঘোষণা দেয়। তখন সারাদেশ থেকে হোটেলের নামকরণ প্রতিযোগিতা হয়- যেখানে নাজমুল আবেদীন জয়ী হন। তিনি হোটেলের নাম দেন রূপসী বাংলা হোটেল। ২০১৫ সালে মোজো ড্রিংকস কোরবানি ঈদের সময় সারাদেশে লটারি বিজয়ী তিনজনকে উট উপহার দেয়। সেই তিনজনের একজন ছিলেন নাজমুল আবেদীন। নোকিয়া, লাভা, হাইক- ইত্যাদি ব্র্যান্ডের সেলফি প্রতিযোগিতাতেও সারাদেশ থেকে লটারি বিজয়ীদের একজন ছিলেন নাজমুল আবেদীন।
কুমিল্লা দীঘির শহর। ধর্মসাগর, রাণীর দীঘি, নানোয়ার দীঘি, তালপুকুর দীঘিসহ আরো অনেক দীঘি আছে কুমিল্লায়। এগুলোয় নেমে অনেক শিশু মারা যায়। শিশুদেরকে সাঁতার শেখানোর জন্য কুমিল্লার কেটিসিসি প্রাঙ্গণে নিজস্ব অর্থায়নে একটি সুইমিংপুল পরিচালনা করেন নাজমুল আবেদীন।
কুমিল্লা জাদুঘর নিয়ে স্বপ্ন
দিন দিন জাদুঘর জনপ্রিয় হচ্ছে। নগর উদ্যানে প্রতিদিন অনেক মানুষ বেড়াতে আসে। তারা নিয়মিত জাদুঘরে এসে ঘুরে যায়। শিশু-কিশোররা জাদুঘর থেকে অনেক নতুন জিনিস শিখতে পারে। আর বড়রা জাদুঘরে এসে ফিরে যায় শৈশবে।
নাজমুল আবেদীন বলেন, "একটি অঞ্চলের পরিচয় পাওয়া যায় সে এলাকার জাদুঘরে। আমাদের দেশে সে তুলনায় অনেক কম জাদুঘর আছে। মাত্র ২৫টা সরকারি জাদুঘর আছে সারাদেশে। দেশের ঐতিহ্য লালন করে জাদুঘর। তাই আমি মনে করি দেশে আরো জাদুঘর গড়ে তোলা প্রয়োজন। সরকারি বা ব্যক্তিগত- যেভাবেই হোক না কেন।"
২০২১ সালের শুরুর দিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের তৎকালীন পরিচালক সাত সদস্যের টিম নিয়ে জাদুঘরটি পরিদর্শন করেন। জাদুঘরের জন্য লাইসেন্স আনার কার্যক্রম চলছে বলে জানান নাজমুল আবেদীন। লাইসেন্স পেলে এটি হবে দেশের দ্বিতীয় ব্যক্তিগত জাদুঘর। প্রথম ব্যক্তিগত জাদুঘর মোনতাসির মামুনের।
জাদুঘরের ওপর নির্ভর করে এলাকার পর্যটনশিল্প গড়ে ওঠে। নাজমুল আবেদীনের স্বপ্ন দেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজারে একটি জাদুঘর খোলা। তাহলে দেশের পর্যটনশিল্প উন্নত হবে। এছাড়াও কুমিল্লা জাদুঘরের জন্য আরো বড় জায়গা প্রয়োজন তার। কারণ সব জিনিসের স্থান সংকুলান হয় না নগর উদ্যানের জাদুঘরে।