ইউপি নির্বাচন: নেত্রকোনায় স্ট্যাম্প প্যাডে কালি নেই, ভোটারদের বিড়ম্বনা
নেত্রকোনার তিন উপজেলার ইউপি নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা স্ট্যাম্প প্যাডে কালি না থাকায় ভোটগ্রহণে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ভোটারদের। অনেককেই বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হয়েছে কালি ও স্ট্যাম্প প্যাড।
সদর উপজেলার সিংহেরবাংলা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ভোটকেন্দ্র, হাইলোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র, আটপাড়া উপজেলার পিয়াজকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, মনসুরপুর আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র ও অভয়পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচন কমিশন থেকে সরবরাহ করা স্ট্যাম্প প্যাডগুলোতে পর্যাপ্ত কালি নেই। কোনো কোনোটির কালি একেবারেই শুকিয়ে গেছে। এ কারণে ব্যালট পেপারে সিল মারতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ভোটারদের। কেউ কেউ সিল মারার পর দেখেন ব্যালট পেপারে সিলের কালি লাগেনি। তিনটি ভোট দেয়ার জন্য একজন ভোটারকে গোপন কক্ষ থেকে বেরিয়ে পোলিং অফিসারের সামনে থেকে পর পর তিনবার কালি নিতে হচ্ছে।
নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, প্যাডে কালি না থাকায় ভোট নিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। কারণ, একজনকে তিনবার কালি দিতে হচ্ছে।
তবে কোনো কোনো কেন্দ্রের প্রিজিাইডিং অফিসার নিজ উদ্যোগে স্থানীয় বাজার থেকে স্ট্যাম্প প্যাড ও কালির বোতল সংগ্রহ করে ভোটগ্রহণের কাজ চালাচ্ছেন।
পিয়াজকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ মমিন আলী মিয়া বলেন, 'একজন ভোটারকে তিনটা সিল মারতে হয়। কিন্তু একটা বা দুইটা সিল মারার পর দেখা গেছে, তৃতীয় সিল দেয়ার কালি নেই। এ কারণে ওই ভোটারকে আবার পোলিং অফিসারের সামনে এসে কালি নিতে হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর আমি বাইরে থেকে ৪টি স্ট্যাম্প প্যাড কিনিয়ে এনেছি।'
সেলিম মিয়া নামে ওই কেন্দ্রের একজন ভোটার বলেন, 'আমি তিনবার কালি নিয়ে সিল মেরেছি।'
চশমা প্রতীকের প্রার্থীর এজেন্ট শফিকুল ইসলাম বলেন, 'প্রথম দুই ঘণ্টা কালির সমস্যা ছিল। এ জন্য ভোটগ্রহণে কিছুটা দেরি হয়েছে। পরে নতুন স্ট্যাম্প প্যাড আনার পর সমাধান হয়েছে।'
অভয়পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সদানন্দ বণিক বলেন, 'আমার কেন্দ্রে মোট ৭টি স্ট্যাম্প প্যাড সরবরাহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪-৫টিই শুকনো। পরে আমি স্থানীয় বাজার থেকে ২টি প্যাড ও এক বোতল কালি এনে সমস্যার সমাধান করেছি।'
সদর উপজেলার সিংহের বাংলা ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী আহসান সুমনও একই অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসারদের।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন থেকে সরবরাহ করা এই স্ট্যাম্প প্যাডগুলো ইংরেজিতে 'ফ্লাওয়ার' নাম লেখা একটি কোম্পানির তৈরি। সদর উপজেলার চল্লিশা এবং লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলো থেকেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ এবং সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা ইদ-ই-আমিন বলেন, 'বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। জানার পর আমরা তাৎক্ষণিক প্রতিটি কেন্দ্রেই স্ট্যাম্প প্যাড এবং লিকুইড কালি পাঠিয়েছি। এখন আর সমস্যা নেই।'