ইভ্যালির বিষয়ে দু’বছর আগেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ‘সতর্ক’ করেছিল ই-ক্যাব
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিষয়ে দু'বছর আগেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করেছিল বলে জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত চলমান ই-কমার্স সংক্রান্ত ঘটনাবলির প্রেক্ষিত, অনলাইন কেনাকাটা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্য নিয়ে দেশের ২০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও ই-ক্যাবের সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন '১০-১০' নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে সাংবাদিকদের তারা একথা জানান।
অনুষ্ঠানে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, "আমাদের প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে ই-কমার্স নীতিমালা হয়। সেখানে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দেওয়া ছিল। কিন্তু আমরা এ বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম ২০১৬ সালে"।
তিনি আরও বলেন, "দুই বছর আগে, ২০১৯ সালে আমরা ইভ্যালির বিজনেস পলিসি নিয়ে সতর্ক করে এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলাম কিন্তু তখন সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি বরং তাদের প্রমোট করেছে। আমরা অভ্যন্তরীণভাবেও ইভ্যালির মার্কেট পলিসি নিয়ে এবং সংশোধন করতে সতর্ক করেছি ইভ্যালিকে তবে তা মানেনি ইভ্যালি"।
তিনি বলেন, "ইভ্যালি বিতর্ক শুরুর পর ২০২০ সালে ই-ক্যাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষক ও দুইজন আইনজীবীর সমন্বয়ে একটা টেকনিক্যাল টিম তৈরি করেছিল। তারা ইভ্যালির বিজনেস মডেল পর্যালোচনা করে লুপহোলগুলো চিহ্নিত করেন। তারা একটা গাইডলাইন তৈরির পরামর্শ দেন। আমরা অনেকগুলো সমস্যা চিহ্নিত করে সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি ডিভিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে শেয়ার করেছি। ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশনের সঙ্গে এই ব্যবসার ঝুঁকির দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। এসব কিছুর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে"।
তারা আগে জানার পরেও কেন ই-ক্যাব আগস্ট মাসের শেষ দিকে এসে ই-অরেঞ্জসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করে এমন প্রশ্নের জবাবে তমাল বলেন, "সরকার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার সাথে সাথে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রশাসনিকভাবে কিছু করার আগে তো আমরা কিছু করতে পারিনা"।
অনুষ্ঠানে ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, "গত দুই বছরে ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে ই-কমার্স। ই-কমার্সের যেমন খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তেমনি এর সফলতাও কম না। তবে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কী করবো, সে বিষয়ে পলিসি নির্ধারণ করছি"।
তিনি আরও বলেন, "এখনও প্রায় ৮০ লাখ পরিবারকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে ই-কমার্স। আজকে আমরা ১৬০৯ মেম্বার। যদি সেটা ১২০০ হয় তাহলেও সমস্যা নেই ৷ যারা ভালো কাজ করবে তারাই থাকবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি"।
'জেনে-শুনে-বুঝে শপিং হবে অনলাইনে' স্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হওয়া '১০-১০' ক্যাম্পেইনের এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- আজকের ডিল ডটকমের সিইও একেএম ফাহিম মাসরুর, পাঠাও এর প্রেসিডেন্ট ফাহিম আহমেদ, যাচাই এর চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, চালডালের জিয়া আশরাফ, একশপ এর রেজওয়ানুল হক জামি, পিকাবোর সিইও মনি তালুকদার প্রমুখ।