উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকার পথে কর্মজীবী মানুষের স্রোত
রোববার থেকে পোশাকসহ সব রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খোলার খবরে সিরাজগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলের কর্মজীবী মানুষের ঢাকামুখি স্রোত শুরু হয়েছে। কর্মস্থলে ফেরা মানুষের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে।
এসব মানুষ যিনি যেভাবে পারছেন ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও অ্যাম্বুলেন্সে করে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় এসব মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আজ শনিবার সকাল থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল, পাঁচলিয়া, কড্ডার মোড় থেকে উল্লেখিত যানবাহনে গাদাগাদি করে ঢাকার দিকে ছুটছেন। কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এতে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
পোশাককর্মী শিফাত আহম্মেদ বলেন, 'কোরবানির ঈদ করতে বাড়ি এসেছিলাম। রোববার থেকে গার্মেন্টস খুলবে। এ খবরে কর্মস্থল ঢাকায় যাচ্ছি। বাস বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত ভাড়ায় বাধ্য হয়ে ট্রাকে যাচ্ছি।'
কর্মস্থলে ফিরছেন জুলমাত হোসেনও। তিনি বলেন, 'হঠাৎ গার্মেন্টস খোলার খবরে বাধ্য হয়ে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। ট্রাকে চান্দুরা পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে ৬০০ টাকা। সেখান থেকে প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাসে যেতে আরও ৪০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। খরচ বেশি হলেও কর্মস্থলে ফিরতে হবে। অন্যথায় চাকরি থাকবে না।'
পোশাককর্মী জোসনা খাতুন বলেন, 'চাকরি রক্ষায় শিশু সন্তান নিয়ে পিকআপেই রওনা হয়েছি। ভাড়াও বেশি, চরম ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। তবু কি আর করা!'
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, 'মানুষ মৃত্যুর ভয় না করে চাকরি বাঁচাতে ঢাকায় ছুটছেন। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরাও শংকার মধ্যে রয়েছি। তবু মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।'
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি শাহজাহান আলী জানান, পণ্যবাহী ট্রাকে যাত্রী বহন করায় বেশ কয়েকটি ট্রাক আটক করা হয়েছে। কিন্তু মানুষের এত চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থেকেও অসংখ্য পণ্যবাহী যানবাহনে প্রচুরসংখ্যক গার্মেন্টসকর্মী ঢাকায় ছুটছেন।
এ বিষয়ে কাজিপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, 'আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। চেকপোস্টও আছে। কিন্তু কারখানা খুলে দিলে মানুষ তো তার চাকরি বাঁচাতে কর্মস্থলে যাবেই। তবে এসব মানুষগুলোকে অনেক কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।'