কুমিল্লায় মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখা ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে: পুলিশ
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার ঘটনায় ইকবাল হোসেন নামের এক ব্যক্তির নাম উঠে আসছে সংবাদমাধ্যমে। বলা হচ্ছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তিনিই মণ্ডপে কোরআন রেখেছিলেন।
তবে মণ্ডপে কোরআন রাখা ব্যক্তির নাম ইকবাল হোসেনই কি না, তা জানার জন্য দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিনিধি কুমিলার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আমরা একজনকে শনাক্ত করেছি। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। তবে তার নাম এখনও প্রকাশ করিনি আমরা। গ্রেপ্তারের পর আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।'
তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, মণ্ডপে কোরআন রাখা ওই ব্যক্তির নাম ইকবাল হোসেনই। তার বয়স ৩৫ বছর।
ইকবাল হোসেনের বাড়ি কুমিল্লার লস্করপুকুর এলাকায়। তার বাবার নাম নূর আহমেদ আলম।
গত ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদীঘির উত্তরপাড়ে দর্পণ সংঘের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন দেখা যায়। এরপর কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় সেখানে।
কে এই ইকবাল হোসেন:
কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ে মণ্ডপ থেকে হনুমানের গদা নিয়ে ঘুরছে এক যুবক। এমন একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সিসিটিভি ফুটেজটি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের হাতে এসেছে।
জানা গেছে, গদা নিয়ে ঘুরতে থাকা ওই যুবকের নাম ইকবাল হোসেন। কুমিল্লা নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ড দ্বিতীয় মুরাদপুর লস্করপুকুর এলাকার নূর আহমেদ আলমের ছেলে ইকবাল।
ইকবালের মা আমেনা বেগম জানান, তার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে ইকবাল সবার বড়। তিনি ১৫ বছর বয়স থেকেই নেশা করা শুরু করেন। দশ বছর আগে প্রথম বিয়ে করেন ইকবাল। এক ছেলে হয় সেই সংসারে। বিয়ের পাঁচ বছর পর স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তার। তারপর ইকবাল জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাদৈর গ্রামে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় সংসারে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।
ইকবালের মা আরও জানান, তার ছেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে নানাভাবে পরিবারের সদস্যদের ওপর অত্যাচার করতেন। বেশিরভাগ সময়ই তিনি বাড়িতে থাকেন না। ইকবাল বিভিন্ন মাজারে থাকেন। তার পড়াশোনা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত।
আমেনা বেগম বলেন, বছর দশেক আগে মারামারির সময় ইকবাল ছুরির আঘাত পান। এরপর থেকে তিনি অপ্রকৃতস্থ ও নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
ইকবালের মা আরও জানান, তিনি কাউন্সিলরের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ইকবাল পূজামণ্ডপ থেকে হনুমানের গদা নিয়ে এসেছে।
ইকবালের মা, তার ছোট ভাই রায়হান ও নানি রহিমার দাবি, ইকবাল কারো প্ররোচনায় এমন কাজ করতে পারেন।
স্থানীয় কাউন্সিলর সৈয়দ সোহেল টিবিএসকে বলেন, গত ১০ বছর ধরে তিনি ইকবালকে চেনেন। ইকবাল রঙমিস্ত্রির কাজ করতেন। তার ইয়াবা সেবন নিয়ে অনেক বিচার-সালিশ করতে হতো বলেও জানান সোহেল।