ডেসটিনির দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জামিন চাইতে এলে আপিল বিভাগের ক্ষোভ
সরকারকে টাকা জমা দেওয়ার শর্ত তিন বছরেও পূরণ না করে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন জামিন চাইতে এলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর জামিন চাইতে এলে ডেসটেনির ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা ১৪৭ কোটি টাকার কিছু এবং ৩৫ লাখ গাছ বিক্রির দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা সরকারকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে দেয়ার নির্দেশনা দেন আপিল বিভাগ।
আদালত ওই সময় বলেছিলেন, এই শর্ত পুরণ করলে দুইজনকে জামিন দেওয়া হবে।
ওই শর্তের কোনোটিই পূরণ না করে রোববার (১ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবারও জামিন চান দুইজনের আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি এবং অ্যাডভোকেট হেলাল আমিন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। পরবর্তীতে আদালত এই জামিন শুনানি দুইদিনের জন্য মূলতবী করেন।
খুরশীদ আলম খান জানান, আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো টাকা জমা না দিয়েই আবারও আবেদন করে ডেসটিনির আইনজীবীরা। এতে আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শুনানিকালে ডেসটিনির আইনজীবীরা আপিল বিভাগের আগের দেওয়া শর্ত শীথিল করার জন্য আবেদন করেন। এবং ডেসটেনির পক্ষে আরও কিছু পেপারস উপস্থাপনের জন্য সময় চাওয়া হয। পরবর্তীতে আদালত দুই দিনের জন্য মুলতবী করেছে শুনানি।
এর আগে গত ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর ডেসটিনির এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেন আপিল বিভাগ। আদেশে আপিল বিভাগ বলেন, ডেসটিনির ৩৫ লাখ গাছ বিক্রির দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা সরকারকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে।
তবে শর্ত অনুযায়ী টাকা জমা না দেওয়ায় আসামিরা এখনও কারাগারে আছেন। এরই ধারবাহিকতায় দুই আসামি আপিল বিভাগের ওই রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে যে আবেদন করেছেন তার ওপরই রোববার শুনানি শুরু হয়েছে।
২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনি গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক। মামলায় তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৫ মে দুদক আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ১৯ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলায় ৪৬ জনকে আসামি করা হয়।
২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট দুটি মামলায় ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু করেন। তবে এ অভিযোগ গঠন হওয়ার আগেই ট্রি প্লান্টেশনের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন। পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক।