নোয়াখালীতে নারীকে নির্যাতন: দেলোয়ারের বিরুদ্ধে পৃথক ধর্ষণ মামলা
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার সেই নারী (৩৭)।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বেগমগঞ্জ থানায় ওই নারী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ চৌধুরী ধর্ষণের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার ঢাকা থেকে র্যাব তাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছিল। এর আগে ওই নারীর দায়ের করা দুটি মামলায় দেলোয়ারের নাম ছিল না।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের কাছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী তাকে ধর্ষণের কথা স্বীকারের একদিন পর এ মামলা দায়ের হলো।
মামলা ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর পূর্বে দেলওয়ার বাহিনীর প্রধান দেলওয়ার ওই নারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক দুই দফায় ধর্ষণ করে।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের কাছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী দেলোয়ার দ্বারা ধর্ষনের শিকার হওয়ার কথা জানান। তদন্ত দলের প্রধান মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মিলনায়তনে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ওই অভিযোগের কথা বলেন।
নির্যাতনের শিকার নারীর বরাত দিয়ে ফায়জুল কবীর বলেছিলেন, ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন দেলোয়ার প্রায় সময় তার সাথে দৈহিক সর্ম্পক স্থাপনের প্রস্তাব দিতেন। প্রস্তাবে সাড়া দিতে নানা হুমকি-ধমকিও দিতেন।
বছর খানেক আগে দেলোয়ার ওই নারীর ঘরে ঢুকে প্রথমবার ধর্ষণ করেন। গত রমজানের কিছুদিন আগে দেলোয়ার তার সহযোগী কালামের মাধ্যমে ওই নারীকে একটি নৌকায় ডেকে নেন। সেখানে দেলোয়ার ও কালাম দুজনই তাকে ধর্ষণ করতে চান। এ সময় দেলোয়ারের কাছে অনুনয়-বিনয় করলে কালামকে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেন। এরপর নৌকায় দ্বিতীয়বার তাকে ধর্ষণ করেন দেলোয়ার।
নির্যাতনের ঘটনার প্রথম দুটি মামলায় দেলোয়ারের নাম না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতার কারণে ভুক্তভোগী নারী দেলোয়ারের নামে মামলা করেননি বলে আমাকে জানিয়েছেন। এমনকি ২২ ধারার জবানবন্দিতে দেলোয়ারের নাম না থাকার কারণ শুধু নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়। একই সঙ্গে ওই নারীকে ধর্ষণের ভিডিওগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, এরই মধ্যে গত মাসের প্রথম সপ্তাহে দেলওয়ার বাহিনীর সদস্যরা ওই নারীর ঘরে ঢুকে তার স্বামীকে বেঁধে রেখে তাকে বিবস্ত্র করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং তা মোবাইলে ধারণ করে।
এক পর্যায়ে গত ৪ অক্টোবর ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। পরে এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় দেলওয়ার বাহিনীর অপর এক সদস্য বাদলকে প্রধান আসামী করে ৯জনের নাম উল্লেখ করে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেন।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি হারুন অর রশিদ জানান, দেলওয়ার বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় র্যাবের দায়ের করা অস্ত্র মামলায় রিমান্ডে রয়েছে। তাকে নির্যাতনের শিকার নারীর দায়ের করা আগের দুটি মামলায় গ্রেপ্তারের জন্য গতকালই আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।