নোয়াখালীতে নারী নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার আরও ২
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাড়িতে ঢুকে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ আরও দু'জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার গভীর রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন বেগমগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী। ওই নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন পূর্ব একলাশপুর গ্রামের নোয়াব আলী বেপারী বাড়ির লোকমান হোসেনের ছেলে সাজু (২১) এবং জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে মোজাম্মেল হোসেন সোহাগ (৪৮)। সোহাগ একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, সোমবার রাতে সাজুকে ঢাকার শাহবাগ থেকে এবং সোহাগকে তার বাড়ির এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ।
জবানবন্দিতে নির্যাতনের শিকার ওই নারী অভিযোগ করেন, তিনি নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটার সাত থেকে আটদিন পর ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে জানান। ইউপি সদস্য তাকে ঘটনাটি চেপে যেতে বলেন।
জবানবন্দিতে তিনি আরও জানান, তিনি এক ছেলে ও এক মেয়েসহ দুই সন্তানের জননী। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। দীর্ঘদিন স্বামীর সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর নির্যাতনের ঘটনার আরো এক মাস আগে তার মেয়ের বিয়ে হয়। মেয়ে তাকে অনুরোধ করে তারা যেন স্বামী-স্ত্রী দুইজনে বিরোধ মিটমাট করে একসাথে থাকেন। তিনি মেয়ের অনুরোধে স্বামীর সাথে যোগাযোগ করেন বিরোধ মীমাংসার জন্য।
ওই দিন (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পরে তার স্বামী তাদের বাড়িতে আসেন। এর একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে আকস্মিকভাবে তাদের উপর হামলা চালায়। একসময় হামলাকারীরা তার স্বামীকে বেঁধে রেখে ঘরের মধ্যে তাকে বিবস্ত্র করে বেদম মারধরসহ শারীরিক নির্যাতন করে। এসময় দুইজন পুরো ঘটনাটি মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও চিত্রধারণ করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
প্রসঙ্গত, রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ঘটনার ৩২দিন পর গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে, তা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এঘটনায় টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের।
ঘটনার পর থেকে গত ৩২ দিন অভিযুক্ত স্থানীয় দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগিরা নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবারকে কিছু দিন অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে তার পুরো পরিবারকে বসত বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করলে পুরো ঘটনা দীর্ঘদিন স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরে থাকে। পরে ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ ও র্যাব কয়েক দফায় অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামী-সহ এ পর্যন্ত ৬ অভিযুক্তকে আটক করেছে।