পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় নদী পারের অপেক্ষায় ১২ শতাধিক যানবাহন
ব্যস্ততম পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট পারাপারের জন্য উভয় ফেরিঘাট এলাকা মিলে অপেক্ষমান রয়েছে ১২ শতাধিক যানবাহন। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ও জরুরী পণ্যবাহী ট্রাকগুলো দেড় থেকে দুই ঘন্টার অপেক্ষায় নদী পারের সুযোগ পেলেও সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ ঘন্টা পর্যন্ত।
মঙ্গলবার দুপুর ৩ টার দিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট ফেরিঘাট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নৌরুটে ফেরি সংকট ও বাড়তি যানবাহনের কারণে ভোগান্তি বাড়ছে বলে দাবি ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের।
এসব বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন বলেন, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল বিঘ্ন হওয়ায় পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলমুখী যানবাহনের চাপ বাড়ছে। এছাড়া নৌরুটে ফেরি সংকটও রয়েছে।
এতে করে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অপেক্ষামাণ যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। সবশেষ পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় সাত শতাধিক সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক এবং দুই শতাধিক বাস ও ছোট গাড়ি নৌরুট পারাপারের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে।
যাত্রী ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে বাস, জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক ও ছোট গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নৌরুট পারাপার করায় সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান তিনি।
পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় মাগুড়ামুখী ট্রাক চালক অলিয়ার রহমান বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার উথুলী সংযোগ সড়কে আসেন তিনি। ঘাটে গাড়ির চাপ বেশি থাকার কারণে সেখানে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আটকে রাখে শিবালয় থানা পুলিশ।
এরপর মঙ্গলবার সকাল ১০ টার পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার ট্রাক টার্মিনালে আসেন। দুপুর ২ টা পর্যন্ত নৌরুট পারাপারের জন্য টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি তিনি। বিকেলের মধ্যে টিকিট পেলে মধ্যরাতে নৌরুট পারাপার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ফরিদপুরমুখী যানবাহনের চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই ঘাট এলাকায় নৌরুট পারাপারে ভোগান্তি বাড়ছে। আধ ঘন্টার নৌরুট পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ ঘন্টা। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার জিরো পয়েন্টে আলাপ হলে সোহাগ পরিবহনের যাত্রী সেলিম আহমেদ বলেন, পাটুরিয়া ঘাটের ভোগান্তি আজ নতুন নয়। দুই ঘন্টা ধরে অপেক্ষায় থেকে ফেরিতে উঠার সুযোগ পাননি বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলে ১৯টি ফেরি ছিলো। এর মধ্যে ছোট বড় মিলে ছয়টি ফেরি বিকল থাকায় ফেরিগুলো মেরামতে পাঠানো হয়েছে। বাকী ১৩ টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
যানবাহনের তুলনায় ফেরি সংকট থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে বলে জানান তিনি। সবশেষ পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় নয় শতাধিক এবং রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ৩ শতাধিক যানবাহন নৌরুট পারাপারের জন্য অপেক্ষামাণ রয়েছে বলে তিনি জানান।