পাটুরিয়া ফেরিঘাটে কর্মমুখী মানুষের ঢল
পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার খবরে কর্মমুখী মানুষের ঢল নেমেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এবং আরিচা ফেরিঘাট এলাকায়। জীবনের তাগিদে কর্মমুখী মানুষ এখন কর্মস্থলমুখী। ভরপুর যাত্রী রয়েছে নৌরুটে চলাচলরত প্রতিটি ফেরিতে।
শনিবার সকালে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার তিন নম্বর ফেরিঘাট পন্টুনে এমন চিত্র দেখা যায় সরেজমিনে। যাত্রীবোঝাই করে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার তিন নম্বর পন্টুনে নোঙর করে বড় ফেরি ভাষা বরকত। ফেরি পারাপারে ভোগান্তি না থাকলেও সড়ক-মহাসড়কে চরম ভোগান্তির কবলে রয়েছে কর্মস্থলমুখী যাত্রীরা।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। যে কারণে রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি, ট্রাক-পিকআপ এবং প্রাইভেটকারে করে গন্তব্যে ছুটছে এসব কর্মমুখী মানুষ। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নিরুপায় হয়ে গন্তব্যে ছুটছে কর্মমুখী মানুষ।
ফেরিঘাট এলাকায় রয়েছে ছোট যানবাহনের স্বল্পতা। বন্ধ বাস চলাচল। নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন তৎপরতা। কর্মমুখী মানুষের মাঝে নেই স্বাস্থ্যবিধিরও কোন বালাই। গন্তব্যে যাওয়ার লড়াইয়ে ব্যস্ত ফেরিঘাট এলাকায় আগত হাজার হাজার যাত্রী।
ফেরিঘাট এলাকার তিন নম্বর পন্টুনে আলাপ হলে সাভারের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক আনোয়ার আঞ্জুম মনি বলেন, 'টিভিতে দেখতে পেলাম রোববার থেকে অফিস খোলা। পরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সাভারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি'। তবে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গাবতলীমুখী যাত্রী আফাজ উদ্দিন বলেন, পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে গাবতলীর ভাড়া ১০০ টাকা। আজ প্রাইভেটকারে সেই ভাড়া নিচ্ছে ১৫০০ টাকা। চাকুরী রক্ষার তাগিদে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আফসানা মিমি নামের একজন গার্মেন্টস কর্মী বলেন, '৫ আগস্ট পর্যন্ত লকডাউন থাকায় গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে ছিলাম। কারখানা খুলে যাওয়ায় এখন গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি'। সড়ক-মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় কখনো রিকশা-ভ্যান, আবার কখনো পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাত্রা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাইভেট কার চালক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ গাড়ির চাকা। পরিবার পরিজন নিয়ে হতাশায় দিনযাপন করছেন। করোনা সংক্রামণ ঝুঁকি থাকলেও তাদের নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে প্রাইভেট কার নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'রাস্তাঘাটে সব কিছু ম্যানেজ করে চলতে হয়। সেখানে খরচ আছে'। কাজেই বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া নিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলে ৮টি এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ৩টি ফেরি চলাচল করছে। প্রতিটি ফেরিতে প্রচুর পরিমাণে যাত্রী নৌরুট পারাপার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।