ফেরি ডুবতে শুরু করলে ইঞ্জিন মাস্টার চিৎকার করতে থাকেন, ‘পদ্মায় ঝাঁপ দাও’
মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে ফেরি রজনীগন্ধা। ফেরিটি ঘাট ছাড়ার ঠিক ১৫ মিনিট আগে তুলা বোঝাই ট্রাক নিয়ে ফেরিতে ওঠেন চালক মো. আশিক। তার ট্রাকে ৬০ লাখ টাকার তুলা ছিল বলে জানান তিনি।
আশিক বলছিলেন, নদীতে সে সময় ঘন কুয়াশা। সঙ্গে কনকনে ঠাণ্ডা। ফেরিটিতে ছোট বড় মিলে ৯টি ট্রাক ছিল। রাত বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশাও বাড়ে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে সামান্য দূরের জিনিও দেখা যাচ্ছিল না।
তিনি জানান, ঘন কুয়াশার কারণে দূরের কিছু দেখা না যাওয়ায় ফেরিটি ধীর গতিতে পাটুয়ারির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে কুয়াশার কারণে কিছুই দেখা না যাওয়ায় ঘাট থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে ফেরিটি থেমে যায়।
ঠিক সেই সময় ফেরি মাস্টার এসে জানান, কুয়াশার কারণে এখন আর আগানো সম্ভব নয়। তিনি ফেরিতে থাকা সবাইকে ঘুমিয়ে যেতে বলেন। তবে ফেরিতে বেশিরভাগ চালকই জেগে ছিলেন।
সকাল ৮টা ১০ মিনিটের দিকে একজন চিৎকার করে বলতে শুরু করেন, ফেরি ডুবে যাচ্ছে। একপর্যায়ে ফেরিটি এক দিকে হেলে পড়লে একটি ট্রাক নদীতে পড়ে যায়।
ফেরির মাস্টার তখন চিৎকার করে বলতে শুরু করেন, 'পদ্মায় ঝাঁপ দাও।'
আশিক জানান, গাড়ির চালকরা তখন ফেরির উপরের অংশে উঠতে শুরু করে।
আশিক বলেন, কোনো বাল্কহেডের সাথে ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটেনি। ফেরি যখন কাত হয়ে যায় তখন আমি ফেরির উপরে দিকে উঠে যাই। প্রথমে ফেরির নিচু অংশটা ডুবে যায়, একে একে গাড়িগুলো পড়ে যেতে থাকে। কিছু সময়ের মধ্যে ফেরির মাথার অংশ যখন ডুবে যায় তখন আমি লাফ দেই। প্রায় আধাঘণ্টা একটি ট্রলারে থাকা লোকজন আমাকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দশজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে ছয়জনকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার করেছে এবং বাকি চারজন সাঁতরে তীরে পৌঁছেছে।
ইঞ্জিন মাস্টারসহ আরো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতা এখনও চলছে।