প্রণোদনার টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসিত ছাত্রলীগ নেতা দিলোয়ার
করোনাভাইরাস সংক্রমণে দেশের অসহায় মানুষ কষ্টে আছে। তাদের কষ্ট লাঘবে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনই একটি উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী কৃর্তক মোবাইল ফোনে আড়াই হাজার টাকার প্রণোদনা প্রদান।
এই প্রণোদনার তালিকায় থাকা সুনামগঞ্জের অসহায় স্বামী পরিত্যক্তা নারীর আড়াই হাজার টাকা ভুলক্রমে চলে যায় দোয়ারাবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও দোয়ারাবাজার ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক দিলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে। সেই টাকা ফেরত দিয়ে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দলমত নির্বিশেষে মানুষের প্রশংসায় সিক্ত হচ্ছেন।
জানা গেছে, ২৫ মে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার ২৫০০ টাকা ভুল করে চলে এসেছিল দিলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে। প্রণোদনার তালিকায় তার নাম থাকার কথা নয়, তাই মোবাইলে আসা এ টাকা নিয়ে চিন্তায় পড়েন তিনি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দিলোয়ার তাৎক্ষণিক দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানান।
তিনি নিজেও প্রকৃত মালিককে টাকা ফেরত দিতে সরকারি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। কিন্তু না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের ই-মেইলে বিষয়টি অবগত করে টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন। সচিব এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিবকে বিষয়টি দেখার আহ্বান জানালে তিনি দিলোয়ারের সঙ্গে কথা বলে টাকা ফেরত দেওয়ার উপায় বলে দেন।
গত মঙ্গলবার দোয়রাবাজার সোনালি ব্যাংক শাখায় গিয়ে চালান কেটে মোবাইলে আসা আড়াই হাজার টাকা ফেরত দেন দিলোয়ার।
প্রণোদনার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে পেরে তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন। তবে প্রকৃত মালিকের নাম জানতে না পারা ও তার টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন।
এদিকে বুধবার বিকেলে দিলোয়ার জানতে পারেন, ওই টাকার প্রকৃত মালিক নিজ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার লাকী আক্তার নামে এক হতদরিদ্র নারী। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা ও দুই সন্তানের জননী। অসহায় দুই সন্তান নিয়ে তিনি নিঃস্ব পিতার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর তথ্য নিয়ে জানতে পারে, মোবাইল ফোনের একটি ডিজিট ভুলের কারণে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের গড়েরগাও গ্রামের হতদরিদ্র জসিম উদ্দিনের কন্যা লাকি আক্তারের নামের প্রণোদনার টাকা ভুল করে দিলোয়ারের মোবাইলে চলে গিয়েছিল। দিলোয়ার টাকা ফেরত দেওয়ার পর ওই টাকা লাকীকে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দিলোয়ার হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ আমাকে এই শিক্ষা দিয়েছে দেশের পক্ষে, মানুষের পক্ষে সৎ ও সাহসের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
লাকী আক্তার জানান, গত ঈদের আগে তার নাম নিয়েছিলেন ইউপি সদস্য। কিন্তু এখনো টাকা আসেনি। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানানো হয়েছে, তার টাকা আরেকজনের মোবাইলে চলে গিয়েছিল। তিনি শিগগিরই ওই টাকা পাবেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা বলেন, দিলোয়ার টাকা পাওয়ার পরপরই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেরত দেওয়ার নানা চেষ্টা করেছেন। সেই টাকা ফেরত দিয়ে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।