মসজিদ-মণ্ডপের দায়িত্বশীল কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা, খুঁজছে পুলিশ
কুমিল্লার নানুয়ার দিঘীর পাড়ের একটি পূজা মণ্ডপে কথিত কোরআন অবমাননা ও এর ফলে শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার ঘটনায় স্থানীয় মসজিদ ও পূজা মণ্ডপের দায়িত্বশীল কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বুধবার বিকেলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডি কুমিল্লার পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান।
তিনি বলেন, "প্রথমে ইকবাল-ইকরামকে গুরুত্ব দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও এ ঘটনায় রিমান্ডে থাকা চারজনকেই ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মসজিদ-মণ্ডপের কেউ যুক্ত আছে কি-না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের শনাক্তে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে।"
হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গা পূজার মণ্ডপে ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন শরীফ রেখে আসায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ইকবাল নামে এক ব্যক্তিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর শুক্রবার তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মণ্ডপে কোরআন রাখার বিষয়টি স্বীকার করেছে ইকবাল।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এর আগে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পুলিশের দেওয়া সিসিটিভি ফুটেজের প্রথম অংশে মসজিদে ফয়সাল ও হুমায়ুনের সঙ্গে ইকবালকে দেখা যায়। ফুটেজের শেষ অংশে দেখা যায় ৯৯৯-এ কল করা ইকরামকে। ইকবাল ছাড়া বাকি তিনজনের কেউ এখনো মণ্ডপে কোরআন রাখার কথা স্বীকার করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ের একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলে কোরআন শরিফ পাওয়ার ঘটনায় সারাদেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ ঘটনায় প্রেক্ষিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে চাঁদপুরে পাঁচজন, নোয়াখালীতে দুইজন ও কুমিল্লায় একজন নিহত হন। এছাড়াও কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, গাইবান্ধা, মৌলভীবাজার ও রংপুরসহ দেশের কয়েকটি জেলায় হিন্দুদের মন্দির, ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে হামলা চালানো হয়। এসব হামলার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় ৮৫টি মামলা করা হয়েছে যাতে নামে ও বেনামে আসামি করা হয়েছে ২৩ হাজার ৯১১ জনকে।