মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রীকে মঞ্চ থেকে ‘নামিয়ে দেওয়ায়’ মেয়র নাছিরকে আল্টিমেটাম
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনকে দলের একটি অনুষ্ঠানের সভামঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের একাংশ।
সোমবার বিকেলে নগরীর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই মানববন্ধন থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, চট্টগ্রামের সাথে মহিউদ্দিন চৌধুরীর নাম অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। আজকের এ চট্টগ্রামের পেছনে রয়েছে তার অবদান। কিন্তু তার স্ত্রীকে এভাবে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা চট্টগ্রামবাসীর জন্য অপমানজনক। এ ঘটনায় জন্য আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে চসিক মেয়রকে ক্ষমা চাইতে হবে। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চট্টগ্রাম আসার পর পরবর্তী কর্মসূচি নেয়া হবে বলে মানববন্ধন থেকে তারা জানান।
মানবন্ধনে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠনের ‘মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী’ হিসেবে পরিচিত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত রোববার নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী হাসিনা মহিউদ্দিনকে ডেকে মঞ্চে তুললেও সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। হাসিনা মহিউদ্দিন চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মা।
এ বিষয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে রোববার রাতেই গণমাধ্যমের কাছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়নি। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় মঞ্চ থেকে নামতে বলা হয়েছিল। দলের শৃঙ্খলা সবাইকে মানতে হবে। তাহলে দল সুশৃঙ্খল ও গতিশীল হবে। নেতাকর্মীদের পরস্পরের মধ্যে সহমর্মিতা বাড়বে, শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হবে।”
হাসিনা মহিউদ্দিনকে নামিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গত (শনিবার) রাতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা বসে সিদ্ধান্ত নেন মঞ্চে কারা বসবেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে- কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিবর্গ, দলের সংসদ সদস্য এবং ৬ জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সকল সহ-সভাপতিবৃন্দ মঞ্চে বসবেন। এর বাইরে সবাই বসবেন মঞ্চের সামনে দর্শকসারিতে। কারা কারা বক্তব্য দেবেন সে বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।”
“সভা শুরুর পর কারা মঞ্চে বসবেন সেটা আমি সঞ্চালক হিসেবে বারবার ঘোষণা দিয়েছি। আমি বারবার সবার কাছে সহযোগিতা চেয়ে বলেছি যে- আমরা সুশৃঙ্খলভাবে সভা শেষ করতে চাই। এরপরও কেউ কেউ মঞ্চে উঠেছেন। আমি কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করিনি, অসৌজন্যমূলক আচরণও করিনি। শুধু অনুরোধ করে মঞ্চে কারা বসবেন- সেটা নিয়ে সিদ্ধান্তটা জানিয়েছি।”
এ ঘটনায় প্রয়াত নেতা মহিউদ্দীন চৌধুরীর নাম জড়ানো ‘সমীচীন নয়’ বলে গণমাধ্যমকে বলেন নাছির।
“অহেতুক খোঁচা দেওয়াও সমীচীন নয়। এটা সাংগঠনিক শৃঙ্খলার বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলেমেয়ে আছেন, উনারা কি মঞ্চে গিয়ে বসে থাকেন? ওবায়দুল কাদের ভাই আমাদের দলের সেক্রেটারি, উনারও ভাইবোন আছেন। উনারা কি মঞ্চে গিয়ে বসে থাকেন? আমাদেরও ভাইবোন আছেন, তারা কি মঞ্চে ওঠেন?”