শঙ্কা কাটায় আজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছেন সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক
দীর্ঘ ১৯ দিনের চিকিৎসা শেষে প্রখ্যাত সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হককে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার রাজশাহীর বাসায় নেওয়া হচ্ছে। হাসান আজিজুল হকের ছেলে ড. ইমতিয়াজ হাসান মৌলী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ইমতিয়াজ হাসান বলেন, তার বাবা এখন শঙ্কামুক্ত। যেসব সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তা কেটে গেছে। জটিল কোনো সমস্যা নেই। তবে ছোটখাটো যেসব সমস্যা রয়েছে তাতে বাসায় রেখে চিকিৎসা করা সম্ভব হবে। আবার ডিপ্রেশনের মতো দীর্ঘমেয়াদী কিছু সমস্যা আছে তাতে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসাই দিতে হবে। তবে হার্ট ও নিউমোনিয়ার সমস্যা কেটে গেছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে বাসায় নিয়ে যেতে বলেছেন। বাসায় নিয়ে গিয়েই তাকে চিকিৎসা দিতে হবে।
এর আগে, সকালে ইমতিয়াজ হাসান বলেন, "এখনো হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করা হয়নি। তবে দুপুর বা বিকেল নগদ তা হতে পারে। ডিসচার্জ করা হলেই আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স সড়ক পথে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা দিব। কারণ, বাবা বসে থাকতে পারছেন না। চিকিৎসকরা তাকে শুইয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন। এজন্য এয়ারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না।"
শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২১ আগস্ট হাসান আজিজুল হককে রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে আনা হয়। সেখানে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হৃদযন্ত্রের সমস্যার বাইরেও ফুসফুসে সংক্রমণ, ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতাসহ নানা সমস্যা ধরা পড়ে।
পরবর্তীতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। হাসান আজিজুল হককে হাই-ফ্লো অক্সিজেন সাপোর্টও দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. আরাফাতের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল টিম তার টিকিৎসা করেন।
৪৭-এর দেশভাগ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সোচ্চার প্রখ্যাত এই ঔপন্যাসিকের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস আগুনপাখি। তিনি বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার সহ দেশে বিদেশে নানা পুরস্কারে সম্মানিত হন।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তার বয়স ৮২ বছর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে ৩১ বছর শিক্ষকতার পর ২০০৪ সালে তিনি অবসরে যান।