নড়াইলে অধ্যক্ষকে হেনস্তা: গ্রেপ্তার ৪ জনকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন
নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টের জের ধরে সহিংসতা ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরানোর ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তাদের প্রত্যেককে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। নড়াইল সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. মাহমুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজনকে ২৯ জুন ও একজনকে ৩০ জুন রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়। আগামী ৩ জুলাই আদালত রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন। বর্তমানে আসামিরা সবাই কারাগারে আছেন।'
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে। গুজব ছড়ানো হয়, ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়।
স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করার ঘটনার ৯ দিনের মাথায় ২৭ জুন মামলা করে পুলিশ। বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন পুলিশের উপপরিদর্শক ও মির্জাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ মোরছালিন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর ওই রাতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন—মির্জাপুরের শাওন খান, মির্জাপুর মধ্যপাড়ার মো. মনিরুল ইসলাম এবং মির্জাপুরের সৈয়দ রিমন আলী।
এরপর বুধবার (২৯ জুন) এ মামলায় রহমত উল্লাহ রনি নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার চারজনের মধ্যে শাওন খান ও রহমত উল্লাহ রনিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে সরাসরি অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।