নাগরিক চাপে সুর পাল্টাল সিডিএ, উন্মুক্তই থাকছে পতেঙ্গা সৈকত
নগরবাসীর চাপের মুখে চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র পতেঙ্গা সৈকতে প্রবেশের জন্য ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। তাই আগের মতোই উন্মুক্তই থাকছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সাত কিলোমিটার এলাকা। তবে সৈকতের দুটি এলাকা ২৫ বছরের জন্য বেসরকারি খাতে ইজারা দিতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক কাজী হাসান বিন শামস দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'প্রবেশ ফি না থাকলেও সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও সৌন্দর্য রক্ষায় বেসরকারি অপারেটর নিয়োগ দেয়া হবে। সিডিএ যেহেতু দেখভাল করতে পারে না, তাই ইজারা দেয়া হচ্ছে।'
তবে সিডিএর এ সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সুশীল সমাজ। অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উন্মুক্ত সাগর পাড় ইজারার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ চট্টগ্রামের মানুষ।
তারা বলছেন, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত কিছু করতে হলে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে পরিকল্পনার মাধ্যমেই করতে হবে। নাহয় সৈকতে দোকানপাট, রেস্টুরেন্টসহ শত শত স্থাপনা নির্মাণ তথা বহুমুখী বাণিজ্য হবে। ফলে নষ্ট হবে সৈকতের সৌন্দর্য। এছাড়া বঙ্গবন্ধু টানেল চালুর পর পতেঙ্গাকে ঘিরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ৭ কিলোমিটারের মধ্যে ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশে পর্যটন জোন করে প্রবেশ ফি নির্ধারণের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রচারের পর এর বিরোধিতা করে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। সিডিএর এমন সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বেশ কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সিডিএ এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, 'সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা পতেঙ্গার কিছু অংশকে বেসরকারিভাবে টেন্ডারে দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। যারা সেখানকার বিদ্যুৎ বিল প্রদান করবে, ওয়াশরুম নির্মাণ করবে, চেঞ্জিং রুমসহ পতেঙ্গা বিচ এলাকা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে। কিন্তু পুরো সমুদ্র সৈকত এলাকাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে গেলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। তাই আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিই রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য বেসরকারি খাতকে টেন্ডারের মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হবে। তারা সেখান থেকে আয় করে খরচ মেটাবে।'
পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহসভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, 'প্রবেশ ফি নির্ধারণ না করে সিডিএ ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করি। পতেঙ্গার মতো একটি উন্মুক্ত জায়গা থেকে সিডিএ চাইলেই প্রবেশ ফি নিতে পারে না, আর সিডিএর সে অধিকারও নেই। তবে সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য সেখানে কিছু করা যেতে পারে। কিন্তু এসব হতে হবে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত যাতে অবৈধ দখলদারদের হাতে না পড়ে সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে।'
পতেঙ্গা সৈকতের টানেল প্রান্ত থেকে রাশমনি ঘাট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার অংশকে দুটি জোনে ভাগ করে ২৫ বছরের জন্য ইজারা দিচ্ছে সিডিএ, যা বাস্তবায়ন হবে ২০২৪ সালে