পুরান ঢাকার বড় কাটরা ও ছোট কাটরা সংস্কারের উদ্যোগ দক্ষিণ সিটির
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা বড় কাটরা, ছোট কাটরার পূর্ণ সংস্কার করে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার পুরান ঢাকার চকবাজারের বড় কাটরা, তৎসংলগ্ন এলাকা ও ছোট কাটরা পরিদর্শন শেষে একথা জানান মেয়র।
এছাড়া বড় কাটরা এলাকার সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ভাঙায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সীমানা সীলগালা করে দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
মেয়র তাপস বলেন, 'বিভিন্ন গোষ্ঠী-স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্নভাবে বড় কাটরা দখল করেছে, ভেঙে ফেলেছে, নষ্ট করেছে। আমরা এ স্থাপনা আর নষ্ট করতে দিব না। পুরোটা নিয়েই আমরা এটা পূর্ণ সংস্কার, সংরক্ষণের কার্যক্রম হাতে নেব।'
ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হওয়া স্বত্বেও কিভাবে এটা ভাঙ্গা হয়েছে তা খতিয়ে দেখার ঘোষণা দিয়ে মেয়র তাপস বলেন, 'আমাদের ঐতিহ্যের ঢাকার মূল স্থাপনার একটি বড় অংশ- বড় কাটরা ও ছোট কাটরা। বড় কাটরার একটি অংশ ভেঙ্গে ফেলছে, সেটা দেখে আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। আমরা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করেছি, জেলা প্রশাসনের সাথেও যোগাযোগ করছি। কিভাবে এটা সম্ভব হলো আমরা সেটা খতিয়ে দেখব।'
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, 'এটা মোগল সাম্রাজ্যের সময়ে মীর আবদুল কাশেম এবং শায়েস্তা খান এটা নির্মাণ করেছেন। পরবর্তীতে এটা সরকারের হাতেই ন্যস্ত হওয়ার কথা। হয় জেলা প্রশাসনে ন্যস্ত হবে, না হলে সিটি করপোরেশনে ন্যস্ত হবে। না হলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ অথবা গণপূর্তের অধীনে ন্যস্ত হবে। এটা সরকারের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।'
তিনি বলেন, 'হয়তোবা সরকারি সংস্থার অবহেলায় কিংবা এদিকে নজর না দেওয়ায় এটা হয়েছে। কারণ এই ঐতিহ্য সংরক্ষণের উপলব্ধি তো সবার মাঝে থাকতে হবে। এগুলো যদি বিনষ্ট হয়ে যায় তাহলে ঢাকার কিন্তু আর কোনও পরিচিতি থাকবে না। ঢাকার আর কোনো স্বত্বা থাকবে না। সুতরাং এগুলো যেভাবেই হোক, যত বড় স্বার্থান্বেষী মহলই থাকুক না কেন আমরা এটা সংরক্ষণ করব।'
মেয়র বলেন, 'আমরা এটিকে মহাপরিকল্পনার মধ্যে নিয়েছিলাম। কিন্তু এটি যে কেউ এত দ্রুত ভাঙার কাজ শুরু করবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। এজন্য আমরা এখন নিষেধাজ্ঞা জারি করছি যে, এটি আর কেউ ভাঙতে পারবে না। তবে যারা ব্যবহার করছেন, তারা ব্যবহার করতে পারবেন। এই স্থাপনাকে আমরা একটি ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।'
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মুঘল আমলে সরাইখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো বড় কাটরা। প্রায় পৌনে চারশ বছরের পুরনো স্থাপনাটি ঢাকার ঐতিহাসিক নিদর্শনের অন্যতম। এ ভবনটির বাইরে তালা মেরে ভাঙা হচ্ছিল ঐতিহাসিক স্থাপনার মূল ভবন। প্রায় এক মাস ভাঙন চললেও টের পায়নি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।