হত্যা মামলার পলাতক আসামি আট বছর পর গ্রেপ্তার
আট বছর আগে রাজধানীর রমনা থানা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে ইকবাল হোসেন তারেককে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি রমনা থানা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি এবং রমনা থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান রানা খুন হন। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের আসামি ছিলেন ইকবাল হোসেন তারেক (৩৮)।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ, অধিনায়ক, র্যাব-৩ শুক্রবার এক সংবাদ বলেন, "গ্রেপ্তার ইকবাল তৎকালীন সুইফ ক্যাবল লিমিটেড নামক ডিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ছিলেন কামরুল ইসলাম ও তানভিরুজ্জামান রনি। তাদের সাথে নিহত মাহবুবুর রহমান রানার ব্যবসায়িক বিরোধ ছিল। উক্ত বিরোধ নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ডিসের ক্যাবল কেটে দিত এবং উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায়শই মারামারি হত।"
"উক্ত ঘটনার জের ধরে ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি মাহবুবুর রহমান রানা মোটরসাইকেল যোগে মগবাজার চৌরাস্তা থেকে মসজিদের পাশের গলিতে প্রবেশ করলে বাটার গলির মুখে সে সহ অন্যান্যরা তার মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে রানার মুখে ও মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় স্থানীয় লোকজন সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলে তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি ছোঁড়ে।"
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি। এরপর স্থানীয় ব্যক্তিরা রানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনার পর থেকেই ইকবাল হোসেন তারেক আত্মগোপনে চলে যায়।
হত্যা মামলার ঘটনায় সুইফ ক্যাবল লিমিটেড এর মালিক কামরুল ইসলাম অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৩০ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে ৪ জন পলাতক ছিলো। পলাতক আসামিদের মধ্যে ইকবাল হোসেন তারেকের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর কিছুদিন ইকবাল তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে চাষাবাদের কাজ করতো। কৃষিকাজে সাচ্ছন্দ্যবোধ না করায় পরে যশোরে গা ঢাকা দেয় ইকবাল। সেখানে গিয়ে মাদক ব্যবসা শুরু করে বলে দাবি করেছে র্যাব।
তারপর ২০১৯ সালে ঢাকায় এসে বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে পরিত্যাক্ত কার্টন সংগ্রহ করে বিক্রি করত সে। পাশাপাশি আবার মাদক ব্যবসাও শুরু করে ইকবাল।
মাদকসহ সে একাধিকবার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। তবে এই দীর্ঘ আট বছরে সে নিজের নাম বদলে ফেলে পরিচয় দিতো তাহের নামে। নাম পাল্টানোর কারণে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি তাকে।