‘ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকা যাবে না’, চবিতে সাংবাদিককে মারধর
ছাত্রলীগ কর্মীর জন্মদিন পালন করতে না যাওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক রেদওয়ান আহমেদকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা।
গতকাল সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ.এফ. রহমান হলের ২১২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রেদওয়ান আহমদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং ঢাকা মেইল ও দৈনিক নয়া শতাব্দীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
জানা যায়, গতকাল রাতে এক ছাত্রলীগ কর্মীর জন্মদিন পালনের জন্য রেদওয়ানকে রুমে ডাক দেয় ২০১৮-১৯ সেশনের আরশিল আজিম নিলয়সহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এ সময় ভোক্তভুগী সাংবাদিক পরিচয় দিলে ছাত্রলীগ কর্মী শোয়েব আতিকের নির্দেশে অন্য ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে মারধর শুরু করে।
এসময় হামলাকারীরা 'ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকা যাবে না' বলে ওই সাংবাদিককে হুমকি দেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের আরশিল আজিম নিলয়, একই সেশনের নাট্যকলা বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শোয়েব আতিক। তারা সবাই বিজয় গ্রুপের অনুসারী হিসাবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
এ বিষয়ে রেদওয়ান বলেন, 'তারা জন্মদিন পালন করতে আমাকে ডাক দেয়। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর আমাকে মারধর শুরু করে।আমি প্রক্টর স্যারকে এ বিষয় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।'
এ বিষয়ে জানতে শোয়েব আতিক ও অভিযুক্ত আরশিল আজিমকে নিলয়কে একধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।
চবি ছাত্রলীগ ও বিজয় গ্রুপের নেতা আল আমিন বলেন, 'সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলা আমরা কখনোই সমর্থন করি না। ঘটনার সময় রেদওয়ান আমাকে কল দিয়েছিল। আমি নিষেধ করার পরও তারা ওর গায়ে হাত তুলেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি৷'
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, 'ছাত্রলীগ ও সাংবাদিক উভয় ই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বেশ কয়েকদিন আগেও শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা এক সাংবাদিকের রুম নিয়ে ঝামেলা করে। অভিযোগ দেওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি।আগের ঘটনায় ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজকের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল বলেন, 'আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসি। ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং নিয়মানুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'