বুধবারের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বিদ্যুৎ সরবরাহ: নসরুল হামিদ
মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং-বিধ্বস্ত এলাকার ৭০ শতাংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং বাকি ৩০ শতাংশে বুধবার বিকেলের মধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
গতকাল সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে লোডশেডিং-এর সম্মুখীন হওয়া ৮০ লাখ মানুষের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা চলছে।
"এ অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারীদের মধ্যে ৬০ লাখ মানুষ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে রয়েছেন। বাকিরা নেসকো এবং ডব্লিউজেডপিডিসিওর মতো অন্যান্য সংস্থার অধীনে রয়েছেন," বলেন তিনি।
সারা দেশে বিদ্যুতের ৪.৮ কোটি গ্রাহক রয়েছে।
"আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোক্তাদের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছি," যোগ করেন তিনি। হাসপাতাল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ৮০০ খুঁটিসহ প্রায় দুই হাজার বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে মোট ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো জানা যায়নি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ চিত্র পেতে আরও কিছু সময় লাগবে।
বেশিরভাগ জেলাতেই একটানা কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল।
টিবিএস এর লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন না হওয়ায় রোববার রাত থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
লক্ষ্মীপুরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ৩৬৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জেলায় প্রায় ৪৫০টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, বরিশাল বিভাগের অন্তত ১৫ লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎবিহীন।
এ বিভাগের ছয়টি জেলায় ছয়টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে রয়েছে ২৩ লাখের বেশি মানুষ। রোববার থেকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া ও ভারী বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, স্টেশন ও অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে এসব লাইন মেরামত করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা। একই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহায়তায় ভাঙা ও উপড়ে যাওয়া গাছ অপসারণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত, প্রায় ৪০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে বরগুনা জেলায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি চালু হয়নি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন জেলার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।
কুমিল্লায় দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও মঙ্গলবার নগরীতে বিদ্যুৎ চালু হয়।
এদিকে সাতক্ষীরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।