পরীক্ষামূলকভাবে দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু
বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার লিমিটেড পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সঞ্চালন শুরু করেছে।
পুরোপুরি চালু হলে গাইবান্ধার দৈনিক ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্টটিই হবে দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র; মোংলায় ওরিয়ন গ্রুপের এনারগন রিনিউয়েবলস লিমিটেডের ১৩৪.৩ মেগাওয়াট প্ল্যান্টের চেয়েও এটি বৃহৎ।
সূত্র জানায়, তিস্তা সোলার প্ল্যান্ট গত বছরের ৬ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।
তবে প্রকল্পটি এখনো বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পায়নি।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব (নবায়নযোগ্য শক্তি) নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল টিবিএসকে বলেন, "আমরা জানি যে, প্ল্যান্টটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তবে এটিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই।"
উত্তরাঞ্চলের বিদ্যুৎ সংকটে এই প্রকল্পটির গুরুত্ব অপরিসীম, অথচ আমদানিকৃত প্রাথমিক জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপের কারণে এটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।
তবে প্ল্যান্টটির ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম (প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ০.১৫ ডলার) উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উচ্চ ক্রয় ব্যয়ের কারণে এটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) রাজস্ব ঘাটতি বাড়িয়ে দেবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
বিপিডিবি এই প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য তিস্তা সোলার লিমিটেডের সাথে ২০ বছরের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর করেছে।
তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও বেক্সিমকো বা বিপিডিবি থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লাটশালে ৬০০ একর জমিতে প্রকল্পটি নির্মাণের জন্য শরীয়াহভিত্তিক গ্রিন সুকুক বন্ডের মাধ্যমে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে বেক্সিমকো।
তহবিলের একটি অংশ উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে গ্রুপটির ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও গেছে।
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে তিস্তা সোলার লিমিটেড প্রকল্পটি বিলম্বের মুখে পড়েছে; বিদেশ থেকে প্রকল্পের নির্মাণসামগ্রী ও যন্ত্রপাতির আমদানি ব্যাহত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ২৬,৭০০ মেগাওয়াটে, যার মধ্যে ৩.৫% বা ৯৫৭.৬৭ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে।