কেসিসি নির্বাচন: প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু মাঠে নয়, ঈদ উপহারেও
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ভোটারদের মন জয় করার জন্য ঈদুল ফিতরকে কাজে লাগিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। অন্যদিকে শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ফুরফুরে মেজাজে ঈদ পালন করেছেন আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কেসিসির বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঈদ উপহার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে। কোন কোন ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে উপহার বিতরণেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে।
কেসিসির ২৪ নং ওয়ার্ডে এবার কাউন্সিলর প্রার্থী হচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জেড এ মাহমুদ ডন। তিনি জানান, প্রায় চার হাজার মানুষের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেছেন। এছাড়া প্রায় ৫০০ পরিবারের মাঝে এক হাজার টাকা মূল্যমানের ঈদ সামগ্রী (সেমাই, চিনি জাতীয়) বিতরণ করেছেন।
ডন বর্তমানে কেসিসির ২৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। ওই ওয়ার্ড থেকে পূর্বে তিনি বেশ কয়েকবার নির্বাচন করেছেন। তবে এই নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই তিনি ২৪ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
ডন বলেন, 'নতুন এলাকায় নির্বাচন করতে এসেছি, মানুষের কাছে পরিচিত হতে বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছি। ভালোবাসা বিনিময়ের জন্য উপহার বিতরণ করেছি, এখানে নির্বাচনের কোন বিষয় জড়িত নেই।'
২৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর রয়েছেন শমসের আলী মিন্টু। শুধু নির্বাচনের মাঠে ডনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, ঈদের আগে উপহার সামগ্রী বিতরণেও দু'জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে।
মিন্টু বলেন, 'এবার আমি ২ হাজার পরিবারের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গ্ পাঞ্জাবী ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছি। এটা নতুন কিছু নয়। গত ১০ বছর ধরে ঈদের পূর্বে আমি এভাবে বিতরণ করে আসছি। ঈদ উপহারের জন্য নয়, ভোট আমাকে সবাই ভালবেসে এমনিই দিবে।'
এছাড়া, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর টিপু ৪ হাজার মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জামান মিয়া স্বপন প্রায় ২ হাজার ৫০০ মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ৩১টি ওয়ার্ড রয়েছে। এতে ৩১ জন সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হবেন। এছাড়া দশটি সংরক্ষিত আসন রয়েছে, এতে ১০ জন নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই ৪১টি পদের বিপরীতে এবার প্রায় দেড়শতাধিক ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যারা প্রত্যেকে ভোটের মাঠে হিসাব-নিকাশের নিজেদের এগিয়ে রাখতে ঈদের আগে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে হাজির হয়েছিলেন উপহার সামগ্রী নিয়ে। তবে ঈদের দিনে তাদের কোনো বিশেষ কার্যক্রম দেখা যায়নি। ঈদের মাঠে ভোটারদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ে তারা সীমাবদ্ধ ছিলেন।
অন্যদিকে এবার কেসিসি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। ফলে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেককে ঈদের আগে থেকেই অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে।
তিনি বলেন, 'গত পাঁচ বছরে খুলনার ধারাবাহিক উন্নয়ন করেছি আমি। এই মেয়াদে সরকারের কাছ থেকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নিয়ে এসেছিলাম। এরমধ্যে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার কাজ শেষ করতে পেরেছি। বৈশ্বিক মহামারি করোনার জন্য বাকি কাজ শেষ করতে পারিনি। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। আশা করি কেসিসির ভোটাররাও আমাকে নির্বাচিত করে অসমাপ্ত কাজ শেষ করার সুযোগ দিবেন।'