পিস্তল হাতে মিছিলের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর
পিস্তল হাতে নিয়ে মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।
সোমবার (২২ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলে তাকে পিস্তল হাতে দেখা যায়। মিছিলের আয়োজন করে বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ।
বিক্ষোভ মিছিলের একটি ভিডিও 'মোস্তাফিজুর রহমান এমপি' নামের একটি ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করা হয়। তাতে দেখা যায়, ব্যানার নিয়ে মিছিল করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ব্যানারের সামনে রয়েছেন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।
একপর্যাযে একটি হাত ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করেন তিনি। ব্যাগটি বাঁশখালী উপজেলা ওলামা লীগের সভাপতি আকতার হোসাইনকে দিয়ে পিস্তল নিয়ে তিনি হাঁটতে থাকেন।
মিছিলের সামনে থেকে লোকজন ও গাড়ি সরিয়ে দেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার ওসি কামাল উদ্দিন বলেন, "আমি ওই সময় সেখানে ছিলাম না। আমি যতদূর জানি, এমপি মহোদয়ের একটি বৈধ অস্ত্র আছে। তিনি সবসময় এটি বহন করেন।"
সোমবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে মিছিলটি বাঁশখালী উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর মোবাইল ফোনে টিবিএস এর পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে তার ব্যক্তিগত সহকারী একেএম মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল টিবিএসকে বলেন, এমপি এ বিষয়ে গণমাধ্যমের জন্য একটি বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
গণমাধ্যমের জন্য পাঠানো বক্তব্যে বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেছেন, "প্রকাশ্য জনসভায় যদি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হুমকি দিতে পারেন; তাকে কবরে পাঠানোর মতো সন্ত্রাসী বক্তব্য দিতে পারেন, তবে আমি সেসব নাশকতাকারীদের প্রতিরোধ করতে আমার বৈধ অস্ত্র নিয়ে মিছিলে অংশ নিলে ক্ষতি কি?"
অস্ত্রহাতে মিছিলে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, "বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে স্বাধীনতাবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী চক্র বিএনপি-জামায়াত জোট বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বারবার। এখন ঘরে বসে থাকা যাবে না সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।"
"বিএনপি জামাতের দেশবিরোধী চক্রান্ত ও অগ্নি সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে," বলেন তিনি।
এর আগেও বিতর্কের শিকার হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এক নির্বাচনী কর্মকর্তাকে মারধর এবং মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন এ সংসদ সদস্য।
এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দাতা বিএনপি নেতার বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী প্রতিবাদ হচ্ছে।
"কিন্তু আওয়ামী লীগ অস্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। এটি আমাদের আদর্শের পরিপন্থী," বলেন তিনি।
এর আগে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতিবাদ শুরু হয়।
শুক্রবার (১৯ মে) বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহানগর ও জেলা বিএনপির জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে আবু সাঈদ চাঁদ হুমকি দেন অভিযোফ ওঠে।
এর তিন দিন পর সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে আসামি করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে 'মৃত্যুর হুমকি' দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়।