ডা. সংযুক্তা সাহার নির্দেশনা ছিল তার অনুপস্থিতিতে রোগী ভর্তির: সেন্ট্রাল হাসপাতাল
অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার 'জোরপূর্বক' নির্দেশনা ছিল তার অনুপস্থিতিতে তার নামে রোগী ভর্তি করতে হবে। এর আগেও তার অবর্তমানে তার নামে রোগী ভর্তি হয়েছে এবং তার মনোনীত কনসালটেন্টরা রোগীর চিকিৎসা দিয়েছেন। সেন্ট্রাল হাসপাতালে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যাওয়া মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর ঘটনার এক ব্যাখ্যায় এসব কথা বলেছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোববার সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. এমএবি সিদ্দিক ও ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এমএ কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
সেন্ট্রাল হাসপাতাল তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহা সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে দুবাই যান। গত ১০ জুন অর্থাৎ তার বিদেশ যাওয়ার পরদিন সংযুক্তা সাহার রোগীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয় এবং এর প্রমাণও আছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।
সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসকের সহকারী মো. জমিরের সঙ্গে রোগীর কথোপকথনের রেকর্ড, রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ওই রোগীর বিষয়ে অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার মোবাইলের কল লিস্ট এবং হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারের কথোপকথন ফরেনসিক করে রেকর্ড যাচাই করলে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও দাবি করে সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাহজাদী জানান যে সংযুক্তা সাহার সঙ্গে ওই রোগীর বিষয়ে মোবাইলেও কথা হয়েছে। সংযুক্তা সাহার মোবাইলটি ফরেনসিক টেস্ট করলে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে।
সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ডা. সংযুক্তা সাহার দুটি প্রেস ব্রিফিংই অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যে সেন্ট্রাল হাসপাতালের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। পাশাপাশি তিনি নিজের দায় হাসপাতালের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন।
সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারা সংযুক্তা সাহাকে কোনও কমিশন দেয়নি এবং তার কাছ থেকে কমিশনও নেয়নি। হাসপাতালের বিল কত এবং ডাক্তারের বিল কত তা বিলে উল্লেখ থাকে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু বিল যাচাইয়ের জন্য তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ নিয়ে গেছে।
সেন্ট্রাল হাসপাতাল আরও দাবি করে, ডা. সংযুক্তা সাহা সেন্ট্রাল হাসপাতাল ছাড়া আরও হাসপাতালে চেম্বার করতেন। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে, নরমাল ডেলিভারি এবং নিজের রোগীদের জন্য ডা. সংযুক্তা সাহার টিম ছিল। তার অন কল ডাক্তার ছলেন। অন কল ডাক্তাররাই তার রোগী ডিল করতেন। সেন্ট্রালের ডাক্তাররা ডা. সংযুক্তা সাহা ও তার টিমের নির্দেশনা অনুসারে দায়িত্ব পালন করেন মাত্র। আঁখিকে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তির বিষয়ে প্রশাসন/ম্যানেজমেন্টের কোনও ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আঁখির স্বামী যে বলেছিল সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে যে সংযুক্তা সাহা আছেন, সে দাবির কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লায় যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আঁখির চিকিৎসকেরা কী ডায়াগনোসিস করেছিলো, কী পরামর্শ দিয়েছিল, কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসা পর্যন্ত রোগীর অবস্থা কেমন ছিলো- সেসব তথ্য উৎঘাটন ও প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে কারাগারে রাখা ডা. মুনা ও শাহজাদীর মুক্তি চেয়েছেন তারা।