আবারও কমতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচের দাম
গত কয়েকদিনে ব্যাপক ওঠানামার পর শুক্রবার (৭ জুলাই) আবারও কমতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচের দাম।
রাজধানীর খুচরা বাজারে শুক্রবার কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ২৮০ থেকে ২৩০ টাকা দরে; আর পাইকারি দাম ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাত্র দুই দিন আগেও শহরের বাজারগুলোতে এই মরিচ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পাইকারি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, কাঠালবাগান, মিরপুরের বেশ কয়েকটি এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
কারওয়ানবাজারের পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল বাসেত দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা করে। গতকাল থেকে দাম ৫০-৭০ টাকা কমেছে। বাজারে ভারত থেকে আমদানিকৃত কাঁচামরিচের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কিছুটা কমেছে।
এ সপ্তাহে মরিচের দাম আরও কমতে পারে বলেও জানান এই ব্যবসায়ী।
বাজারে সরবরাহ কেমন আছে এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ী আব্দুল বাসেত জানান, "ভারতের মরিচ বাজারে আসার পরে সরবরাহ ভালো। এখন দেশি ও আমদানিকৃত দুই ধরনের মরিচেরই দাম একই। ৫ জুলাই সকালে ৪৫০ টাকাতেও বিক্রি করেছি। আবার বিকালে সেই মরিচ ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে, যা কেনা ছিল ৩৭০ টাকা। ভারতের মরিচ যেদিন প্রথম বাজারে এসেছে সেদিন ১৬০/১৮০ টাকাতেও বিক্রি করেছি।"
ইসমাইল নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, "বাজারে মরিচের দাম প্রতি ঘণ্টায় ওঠা-নামা করছে। কোনো ট্রাকের মরিচ সামান্য পচে গেল তার দাম কেজিপ্রতি ২০০ টাকার নিচে নেমে যাচ্ছে। কিছু ব্যবসায়ী তা কিনে ২৫০ টাকায় বিক্রি করছেন, আবার কেউ কেউ বিক্রি করছেন ৩৫০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের খুচরা মরিচ বিক্রেতা মুমিনুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, ৩০০ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে। এখন দাম কমলেও ক্রেতা কম আসছেন। প্রয়োজনের বেশি কেউ মরিচ কিনছে না। আবার একটু দাগ ওয়ালা মরিচ ২৪০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
আগারগাঁও এর খুচরা বিক্রেতা মো. ইউসুফ টিবিএসকে বলেন, "আজ ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। গতকাল ৪০০ টাকার বেশিতে বিক্রি করেছি। আমি রাতে আনার কারণে প্রায় ২৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারিতে আনতে হয়েছে। এই মরিচ সকালে ২২০ টাকায়ও অনেকে এনেছেন। আমি কমে কিনতে পারলে আরও কমে বিক্রি করতে পারতাম।"
মিরপুর পশ্চিম কাফরুলের আল-রবিন রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মো. কামাল হোসেন টিবিএসকে বলেন, "ঈদ থেকে হোটেলে মরিচের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছি। আগে যেখানে ৩ কেজি লাগতো এখন ১ কেজিতে সারছি। শুক্রবার কিছুটা কম দামে ২৫০ টাকা কেজি মরিচ কিনেছি।"
"আগে সালাদ আইটেমে কাঁচা মরিচ রাখতাম, এখন আর সালাদে কাঁচা মরিচ দেই না," বলেন কামাল হোসেন।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কঠোর মনিটরিং এবং অভিযানের ফলে রোববার কাঁচা মরিচের দাম প্রতিকেজি ৭০০-৮০০ থেকে ২০০-২২০ টাকায় নেমে আসে।
কিন্তু বুধবার আবারও বাড়তে শুরু করে দাম; এ সময় পাইকারি বাজারে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয় কাঁচা মরিচ। এরপর আবার শুক্রবার দাম কমতে শুরু করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ জুন থেকে বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৫১ হাজার ৩৮০ টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই সময়ে আমদানি হয়েছে মাত্র ৫২৮ দশমিক ৫৯ টন।
ঈদুল আজহার আগে হঠাৎ করেই সারাদেশে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে।
বাজার স্থিতিশীল করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ২৫ জুন মরিচ আমদানির অনুমতি দেয়। তবে ঈদের ছুটিতে পাঁচ দিন স্থলবন্দর বন্ধ থাকায় আমদানি বন্ধ রয়েছে। এই সুযোগকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।