বাংলাদেশের ওপর ভারতের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার নিন্দা জানালো জামায়াত
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তথাকথিত ভারত তোষণনীতি ও দেশের ইসলামী দলসমূহের ওপর দমন-পীড়ন ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা'ছুম।
শনিবার (১১ আগস্ট) দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, "ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের জনগণ ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়। কিন্তু ভারত বরাবরই দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলো সমাধানে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য বিস্তারের নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।"
পানি সমস্যার সমাধান, টিপাইমুখ বাঁধ ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত কোনো সাড়া দেয়নি বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
একইসঙ্গে, আওয়ামী লীগ দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না, বরং উল্টো ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের নামে 'ভারত তোষণনীতিতে' লিপ্ত রয়েছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের সাম্প্রতিক ভারত সফরের বিষয়েও মন্তব্য করা হয়েছে।
"আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ভারত সফর শেষে ১০ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে জনগণ গভীরভাবে শঙ্কিত। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারত তাদের পাশে থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। দেশের জনগণকে এড়িয়ে ভারতকে পাশে পাবার প্রবণতা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও ভারত তোষণনীতির সুস্পষ্ট প্রমাণই বহন করে," বলা হয় বিবৃতিতে।
আরও উল্লেখ করা হয়, "কথিত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার জন্য দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের যে সব কথা বলা হয়েছে, তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত ছাড়া আর কিছু নয়।"
এটিএম মাসুম আরও বলেন, "বাংলাদেশের জনগণ কাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেবে, তা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।"
"বাংলাদেশের জনগণ রাজনীতি করে সাংবিধানিক অধিকারের ভিত্তিতে, আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে ভারতের সাথে সংশ্লিষ্টতা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতার ভিত্তিতে," বলা হয় বিবৃতিতে।
জামায়াত নেতা সতর্ক করে বলেন, "জামায়াত ও ইসলামী দলসমূহকে ভারতের সহযোগিতা নিয়ে ঠেকানোর যে বক্তব্য আওয়ামী লীগ দিয়েছে, দেশের জনগণ তা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করবে, ইনশাআল্লাহ।"
এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের ভারত তুষ্টি নীতি ও নির্বাচনকে ঘিরে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
"বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পূর্বক তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি," বলেন তিনি।