প্রথম দিনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলেছে ২২,৮০৫ যানবাহন, ১৮.৫ লক্ষ টাকা টোল আদায়
প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এয়ারপোর্ট-ফার্মগেট অংশ ব্যবহার করেছে ২২,৮০৫টি। এতে প্রথম দিনেই টোল আদায় হয়েছে সাড়ে ১৮ লক্ষ টাকা, জানিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) কর্মকর্তারা।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দক্ষিণমুখী যানবাহনের সংখ্যা ছিল ১৪,৬৬৭; যারমধ্যে ১২,২৪২টি বাহন বিমানবন্দর থেকে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, মহাখালী এবং ফার্মগেট পর্যন্ত গিয়েছে। কুড়িল থেকে কামাল আতাতুর্ক, মহাখালী এবং ফার্মগেটে গিয়েছে ২,৪২৫টি বাহন।
অন্যদিকে, উত্তরগামী যানবাহন ছিল ৮,১৩৮টি; এরমধ্যে ২,৮৯২টি এসেছে বনানী থেকে এবং ৫,২৪৬টি তেজগাঁও থেকে।
রোববার সকালে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাতায়াত করা প্রথম কয়েকজনের মধ্যে একজন মিজানুর রহমান। গত ২০ বছর ধরে উত্তরায় বসবাসকারী একজন ব্যবসায়ী তিনি।
"এক্সপ্রেসওয়ে মানুষের যাত্রায় স্বস্তি এনে দেবে। এতদিন আমি ফার্মগেট, মগবাজার বা পুরান ঢাকা এলাকায় যাওয়ার কথা ভাবলেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তাম," রোববার এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা পয়েন্টে গাড়ি নিয়ে ওঠার আগে জানান তিনি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে উচ্ছ্বাসিত ৩২ বছর বয়সী মাইক্রোবাস চালক মনিরুল ইসলাম। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা প্রথম ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন তিনি। ভোরবেলায়ই মাইক্রো নিয়ে যাত্রা করেন তিনি।
"আমার খুব ভালো লাগছে। বনানীতে পৌঁছাতে মাত্র পাঁচ মিনিট সময় লাগলো," বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আরও ১১ কিলোমিটার র্যাম্প ও লিঙ্ক লাইনসহ সাড়ে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেছেন। রোববার সকাল ৬টায় অবকাঠামোটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
৮,৯৪০ কোটি টাকার প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ব্যবস্থার আওতায় ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের নেতৃত্বে একটি কনসোর্টিয়ামের অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকার এ প্রকল্প ব্যয়ের ২৭% ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফাইন্যান্সিং হিসাবে প্রদান করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন বলেন, "প্রথম দিনের সেবা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। র্যাম্পের সামনের অবকাঠামো ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা খুবই ভালো ছিল।"
অফিস টাইমের আগে সকাল ৯-১০টা নাগাদ এক্সিট র্যাম্পের সামনে যানবাহনের সামান্য ভিড় ছিল। কিন্তু দিনের বাকি সময়ে র্যাম্পগুলো খালি ছিল।
তবে এক্সপ্রেসওয়েতে কোনো পাবলিক বাস দেখতে পায়নি টিবিএস, তবে কিছু অফিস বাস ছিল এতে। এছাড়া, এক্সপ্রেসওয়ের নিচে বিমানবন্দর সড়কে বাসের সংখ্যা সবসময়ের মতোই ছিল।
সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে প্রতিদিন ৮০ হাজার যানবাহন চলাচল করতে পারবে। কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের গ্যারান্টি দিয়েছে, এ সড়কে প্রতিদিন অন্তত সাড়ে ১৩ হাজার যানবাহন চলবে।