কক্সবাজারের বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল করাকে প্রাধান্য দিচ্ছে প্রশাসন
ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যাহত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়-ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারণে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ বিশেষ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল করাকে গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে প্রকৃতির উপর। ঠিক কী পরিমাণ গাছ ভেঙে গেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান বলা যাচ্ছে না।
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অন্তত ১৫ টি স্থানে গাছ ভেঙে গিয়েছিল। তা দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সকাল থেকে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। তবে অভ্যন্তরীণ সড়কের পরিস্থিতি এখনও পুরোদমে স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। সড়ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস এসব এলাকা কাজ করছে।
এ মূহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক- মন্তব্য করে জেলা প্রশাসক জানান, "প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে বিদ্যুৎ সকল এলাকায় চালু করতে ২ দিনের বেশি সময় লাগবে।"
সন্ধ্যার পর কক্সবাজার শহর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়ায় বিশেষ বিশেষ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে আলোচনা করে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
তবে মহেশখালী উপজেলায় ১৫টি ট্রান্সফরমার, শতাধিক খুঁটি ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে বিলম্ব হতে পারে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের গণি বলেন, "ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে উপড়ে গেছে অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি। তার ছিঁড়ে রাস্তা-ঘাট ও বসতিতে পড়ে রয়েছে। এ অবস্থায় বৈদ্যুতিক সংযোগ দিলে প্রাণহানি ঘটতে পারে, তাই আপাতত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।"
আব্দুল কাদের গণি বলেন, "এখন ৩টি সাব স্টেশন চালু করা হয়েছে। প্রধান সড়কগুলোতে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান সড়কে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা সম্ভব হবে। আর পুরো কক্সবাজারে বিদ্যুৎ চালু হতে অন্তত দু'দিন সময় লাগবে।"
এদিকে, কক্সবাজারের মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক জানিয়েছেন, "মহেশখালীতে একজনের মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়া সাপের কামড়ে ৩ জন আহত রয়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ বলা মুশকিল। দুই উপজেলায় ব্যাপকহারে ঘর ভেঙে গেছে। তবে জ্বলোচ্ছ্বাস হয়নি।"
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ অতীশ চাকমা বলেন, "ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে হাজার হাজার গাছ উপড়ে গেছে। যার কারণে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। কিন্তু রাত ৩টা পর্যন্ত কাজ করে এসব মহাসড়ক ও সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।"
"এখন শহরের সড়ক-উপসড়কগুলো থেকে উপড়ে পড়া গাছ কেটে, তা সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হচ্ছে। কিছুটা সময় লাগবে, কারণ অনেক বেশি গাছ সড়কে পড়েছে। চেষ্টা করছি, দ্রুত সরিয়ে সড়ককে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করার," বলেন তিনি।