আরও ৯০টি ডাবল কেবিন পিকআপ কিনতে চায় পুলিশ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও ৯০টি ডাবল কেবিন পিকআপ কিনতে চাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।
পুলিশের এসব গাড়ি কিনতে ৫০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা চেয়ে গত ৬ নভেম্বর অর্থ বিভাগে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
এর আগে, গত ১ অক্টোবর পুলিশকে ১৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০টি ১৫০সিসি পুলিশ ভার্সন মোটরসাইকেল, ৪টি জিপ ও ২৮টি ডাবল কেবিন পিকআপসহ মোট ৮২টি গাড়ি কিনতে অনুমোদন দেয় অর্থ বিভাগ।
গত ২ জুলাই সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের যানবাহন কেনা (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশনা জারি করা হয়। যদিও ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, '১০ বছরের বেশি পুরোনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করার সুযোগ রয়েছে'। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এসব গাড়ি কিনতে চাচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়।
এর আগে, গত অক্টোবরে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৬১টি গাড়ি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। কিন্তু পরে অর্থ বিভাগ বৈদেশিক মুদ্রার চলমান সংকট বিবেচনায় এই গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে। একইসাথে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে মিনি ট্রাক ও ওয়াটার বাউজার মিলিয়ে ৩১টি যানবাহন কেনা অনুমোদন দিয়েছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরে সেই সিদ্ধান্তও স্থগিত করা হয়।
জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে অর্থ বিভাগে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশ পুলিশের যানবাহন কেনা বাবদ ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে গত ১ অক্টোবর ১৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮২টি বিভিন্ন ধরনের গাড়ি কিনতে অনুমোদন দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এখন বাজেটে বরাদ্দ রাখা বাকি ৫০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা দিয়ে এই ৯০টি গাড়ি কিনতে চায় পুলিশ সদর দপ্তর।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে পুলিশ বিভাগের কাছে ৩,০৭৯টি ডাবল কেবিন পিকআপ রয়েছে। জিপ রয়েছে ৬১৬টি। প্রিজনার্স ভ্যান রয়েছে ১৬৫টি। আর ১৫০সিসি পুলিশ ভার্সন মোটরসাইকেল আছে ৬,৯২১টি। কিন্তু প্রত্যেকটি ক্যাটাগরিতে তাদের আরও বেশি যানবাহন প্রয়োজন বা সরকারের অনুমোদন রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, তাদের অনুমোদনের তুলনায় ২৬৫টি ডাবল কেবিন পিকআপ কম রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো গাড়ি কেনার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের যানবাহন স্বল্পতা দীর্ঘদিনের। যেসব গাড়ি পুলিশ ব্যবহার করে আসছিল তারমধ্যে পুরাতন, জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপোযোগী ঘোষিত ১,৯৮৮টি গাড়ি নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। যার মধ্যে ৪০৯টি ছিল ডাবল কেবিন পিকআপ।
এছাড়া চলতি বছরে আরও ৭৩৮টি যানবাহন অকেজো ঘোষণার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যেও ১২৪টি ডাবল কেবিন পিকআপ রয়েছে। বর্তমানে যেসব ডাবল কেবিন পিকআপ রয়েছে, তার বেশিরভাগ ২০১০ সালে আগের। এসব গাড়ি দিয়ে কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এছাড়া ৯৭টি থানায় মাত্র একটি করে ডাবল কেবিন পিকআপ রয়েছে। যা দিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাসহ জনগণের সেবা নিশ্চিত করা দূরহ হচ্ছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাসহ অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করা, নির্বাচন পূর্ব ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আইন শৃঙ্খলা মোকাবেলার জন্য প্রতিটি ইউনিটের অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়ানো আবশ্যক। এই পরিপ্রেক্ষিতে আরও ৯০টি ডাবল কেবিন পিকআপ কিনতে চেয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।