ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি' উপকূলের এগিয়ে আসতে থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-৩ জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জেটিতে থাকা জাহাজগুলোকে বহির্নোঙরে চলে যেতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে বহির্নোঙরে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
আগেই পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বহির্নোঙরে অবস্থানরত জাহাজগুলো কুতুবদিয়া-কক্সবাজার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হবে।
শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়ক জরুরি সভা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সভায় নিরাপত্তা বিষয়ক ২৯টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন্দরের সকল ইকুইপমেন্ট নিরাপদে নেওয়া, এসব যন্ত্রপাতি সহ স্থাপনায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া, বিদ্যুৎসহ ইউটিলিটি সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সতর্কতা বৃদ্ধির পর মাদার ভেসেল থেকে লাইটার ভেসেলে পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে।
এছাড়াও নদীবন্দর সংলগ্ন এলাকায় থাকা ছোট ও মাঝারি জাহাজ কর্ণফুলী নদীর তীরে চট্টগ্রাম বন্দরের উজানে সদরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু ও এর পরবর্তী এলাকায় অবস্থান নিতে শুরু করেছে।
এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্লাইট কিছুটা দেরিতে আসছে। তবে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ফ্লাইট সীমিত করার বিষয়ে কোন ধরনের নির্দেশনা জারি করা হয়নি। বিমান বন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ টিবিএসকে বলেন, "আমাদের এখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট প্রস্তুত রেখেছি। এখানে বেশিরভাগ ফ্লাইট আগে আসে। এরপর এখান থেকে যায়। আবহাওয়ার কারণে কিছু ফ্লাইট দেরিতে আসছে। এজন্য দেরিতে যাবে।"
বেসরকারি লাইটার জাহাজ পরিচালনা সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। কিছু জাহাজ পথে ছিল, সেগুলোও রাতের মধ্যে চলে এসেছে। সব জাহাজ নিরাপদে নেওয়া হয়েছে।"
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে ৬০৯টি (মহানগর ১১৬টি ও জেলা ৪৯৩টি) আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবার, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।"