স্পিকার ‘রিকোগনাইজ’ করুক কিংবা না করুক, জাতীয় পার্টিই বিরোধী দল: চুন্নু
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, "কাজেকর্মে সব দিক থেকে এবারের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। মাননীয় স্পিকার রিকোগনাইজ করুক কিংবা না করুক, জাতীয় পার্টি একমাত্র পার্লামেন্টারি বিরোধী দল। আমাদের ভূমিকা বিরোধী দল হিসেবে থাকবে। স্পিকার রিকোগনাইজ করবেন কিনা– সেটা উনার বিষয়। উনি না করলেও বিরোধী দল, করলেও বিরোধী দল।"
আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, "এবারের ইলেকটেড পার্লামেন্টে আওয়ামী লীগ একটি মাত্র দল– যারা পার্লামেন্টে আসছে; আর যারা স্বতন্ত্র জয়ী হয়েছেন, তাঁরা এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে আছেন। তাঁরা (আ. লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা) বিরোধী দল হতে পারবে কিনা আমার জ্ঞানমতে আমি খুঁজে পাচ্ছি না।"
তিনি বলেন, "আমাদের দলের (জাতীয় পার্টি) আসন কম হতে পারে, কিন্তু একমাত্র বড় বিরোধী দল হিসেবে আছে সংসদে। সে হিসেবে আমরাই বিরোধী দল। অফকোর্স আমরা বিরোধী দল। কাজেকর্মে সব দিক থেকে।"
জাতীয় সংসদের মধ্যে বিরোধী দল হয় স্পিকারের এখতিয়ার কাদের দিকে, সে হিসেবে। স্পিকার রিকোগনাইজ করলে বিরোধী দল হিসেবে তারা সুযোগ-সুবিধা পাবে। না করলে পাবে না, যোগ করেন তিনি।
সার্বিকভাবে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে এ কথা বলার সুযোগ নেই মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, "কিছু কিছু জায়গায় নির্বাচন ফেয়ার হয়েছে। অনেক জায়গায় আনফেয়ার হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি লোকজন জড়িত ছিল।"
জাতীয় পার্টি রাজনৈতিক গতি পরিবর্তন করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেক সমস্যা হয়েছে। সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা রাখেনি। অথচ তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় এ ব্যাপারে আশ্বাস করেছিল। নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি এমন একাধিক আসনের উদাহরণ তুলে ধরে চুন্নু বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় জাতীয় পার্টি কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি। কোনো কোনো আসনে প্রিসাইডিং অফিসার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ব্যালটে সিল দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১১ আসন নিয়েই বিরোধী দল হিসেবে সংসদে জনগণের পক্ষে সরকারকে জবাবদিহি করতে যা যা করা দরকার করব। জবাবদিহিতা করাতে না পারলে ৫০ জন এমপি থাকলেও লাভ নেই। আন্তরিকতা থাকলে ১১ জন দিয়েই অনেক অর্জন সম্ভব হবে।
নির্বাচিত ১১ সংসদ সদস্যদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব না থাকার কথা জানিয়ে চুন্নু বলেন, "আমাদের কারও মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। একটি পক্ষ নির্বাচন শেষে নানাভাবে বাইরে ক্ষোভ প্রকাশ করছে, মিটিং করছে। এগুলো করা ঠিক হয়নি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বড় বড় নেতাদের বহিস্কার করা হলেও কোনো সমস্যা হয়নি, জাপাতেও হবে না। দলের মূল নেতা ঠিক থাকলে, কাউকে বহিষ্কার করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। বাস্তবতা হলো- দলের ৯৯ ভাগ নেতা-কর্মীর শীর্ষ নেতাদের প্রতি আস্থা রয়েছে।
বিশৃঙ্খলা ও দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে কয়েকজন নেতা না থাকলে কোনো ক্ষতি হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একাই বিরোধী নেতা হিসেবে সংসদ কাপিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা ১১ জন জনগণের পক্ষে কথা বলে, সংসদ কাঁপিয়ে দেব।