আমদানিকারকদের বিরোধিতার মুখে হার্টের রিংয়ের দাম আবারো বাড়তে পারে
বাংলাদেশে কার্ডিয়াক স্টেন্ট (হার্টের রিং)-এর দাম আবারো বাড়তে পারে। এতে জীবনদায়ী এই চিকিৎসা উপকরণের ওপর নির্ভরশীল হৃদরোগীদের চিকিৎসা খরচ আরো বাড়বে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) বর্তমানে কার্ডিয়াক স্টেন্ট এর যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট নন ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারকরা। দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর এক মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালগুলোতে স্টেন্ট ব্যবহার না করতে চিঠি দিয়েছেন তারা। নতুন করে নাম নির্ধারণের জন্য হাইকোর্টে রিটও করেছিলেন।
তবে দাম পুনর্নিধারণের বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে, চলতি মাসের ১০ জানুয়ারি রিট প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারকেরা। এবার স্টেন্টভেদে ২ থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারক ওয়াসিম আহমেদ টিবিএস'কে বলেন, "আমেরিকান স্টেন্ট আমদানিকারক তিন কোম্পানির জন্য দাম বেশি রেখে– আমাদের পণ্যের দাম কমিয়ে বৈষম্য করেছিল ডিজিডিএ। আমরা দাম বাড়ানোর জন্য রিট করিনি, বরং এই বৈষম্য কমানোর জন্য রিট করেছিলাম।"
"ডিজিডিএর সাথে এরপর কয়েক দফা আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা দাম পুনর্নির্ধারণের আশ্বাস দেওয়ায়– আমরা রিট প্রত্যাহার করেছি, তবে এখনো আমরা দাম বাড়ানোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি পাইনি। সচিব দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে আমরা জেনেছি। ডিজিডিএ দাম পুনর্নির্ধারণ করে দিলে– আমরাও হাসপাতালগুলোকে আমাদের সরবরাহকৃত রিং (স্টেন্ট) ব্যবহারের চিঠি দিব।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. সালাউদ্দিন বলেন, "স্টেন্টের দাম নির্ধারণ কমিটির সভাপতি স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরলে– এবিষয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর হার্টের রিংয়ের দাম ৪০ শতাংশের বেশি কমিয়ে হৃদরোগীদের সুখবর দিয়েছিল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। কিন্তু, সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দিন থেকেই (১৬ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারকরা দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়ে হাসপাতালগুলোকে তাদের রিং ব্যবহার না করার জন্য চিঠি দিয়েছে। এরপর থেকে হার্টের রিং পরাতে ভোগান্তিতে রয়েছে হৃদরোগীরা।
গত বছরের ডিসেম্বরে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেশে ২৭টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের জন্য স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে। এরমধ্যে মূলত তিনটি আমেরিকান। বাকিরা ইউরোপীয় এবং অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করে।
ইউরোপীয় স্টেন্ট আমদানিকারকেরা তখন থেকে বলছেন, এই দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুধু আমেরিকার তিনটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ২০১৭ সালের মার্কআপ ফর্মুলা অনুসরণ করা হয়েছে। অথচ আমদানিকারক বাকি ২৪ প্রতিষ্ঠানের স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্কআপ ফর্মুলা মানা হয়নি। তাই নতুন করে মূল্য সমন্বয় না করা পর্যন্ত– স্টেন্ট সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধ রেখেছে তারা।