৭ দিন ধরে পদ্মার চরে আটকা পাথরবোঝাই বাল্কহেড
১৮৩ মেট্রিক টন ব্ল্যাক স্টোনস (কালো পাথর) বোঝাই একটি বাল্কহেড বাংলাদেশের সীমান্তের গোদাগাড়ীর হাকিমপুর নামক স্থানে সাতদিন ধরে আটকা পড়ে আছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাল্কহেডটি ১৮৩ টন পাথর নিয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদের মায়া নৌবন্দর থেকে বাংলাদেশের গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। যাত্রা করার পর পর বাংলাদেশ সীমান্তের সুলতানগঞ্জ নৌবন্দর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে বাল্কহেডটি পদ্মার চরে আটকা পড়ে। এজন্য আমদানিকারককে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
আমদানিকারক মো. মনিরুজ্জামান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "৫০০ টনের বাল্কহেডটিতে মেঘনা ট্রেডার্সের মাধ্যমে আমরা ১৮৩ টন পাথর বোঝাই করে মায়া নৌ বন্দর থেকে রওনা দেওয়ার পর হাকিমপুর পদ্মার চরে আটকা পড়ে। এজন্য আমাদের প্রতিদিন ভাড়া বাবদ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়া বাল্কহেডটিতে ৫ জন স্টাফ রয়েছে। তাদের খাওয়া দাওয়া ও বেতন বাবদ অতিরিক্ত টাকা গুণতে হচ্ছে।"
তিনি বলেন, "পাথর বোঝাই করে বাল্কহেড ছেড়ে দেওয়ার ১০ দিন আগে বিআইডব্লিউটির সাথে আমরা যৌথ জরিপ করেছিলাম তখন পানি উচ্চতা ভালো ছিল। তখন আমরা বাল্কহেড ভাড়া করার সময় মনে করেছিলাম যে ৫০০ টনের বাল্কহেডটিতে খুব সহজেই ১৮০/২০০ টন মালামাল বহন করা সম্ভব। কিন্তু হুট করেই পদ্মার পানি নেমে যাওয়ায় বাল্কহেডটি আটকা পড়ে যায়। এইজন্য বিআইডব্লিউটির আসলে কোনো দোষ নেই। পদ্মার সীমান্তে ২০০ মিটার স্থানে পানির নব্যতা কম থাকে। সেই স্থানটি যদি ড্রেজিং করা সম্ভব হয় তাহলে সারাবছর মালামাল পরিবহণ করা সম্ভব।"
বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ প্রটোকলের আওতায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ ও ভারতের মুর্শিদাবাদের মায়া নৌবন্দর চালু হয়। নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের উদ্বোধন করেন।
আমদানিকারক মো. মনিরুজ্জামান আরও বলেন, "আমরা কাস্টমসে অ্যাপ্লিকেশন দিয়েছিলাম যাতে আমাদের বাল্কহেডের সিলগালা খুলে হাকিমপুর থেকে দুইটি নৌযানের মাধ্যমে পাথরগুলো আনলোড করে সুলতানগঞ্জ বন্দরে নিয়ে যেতে। কিন্তু কাস্টমস আমাদের সেই অনুমতি দেয়নি।"
এই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক মু. রফিকুল ইসলাম বলেন, "পদ্মার চরে তাদের বাল্কহেডটি আটকে নেই। পানির উচ্চতা কম থাকায় তারা একস্থানে দাঁড়িয়ে ওই চ্যানেলের পানির গভীরতা পর্যবেক্ষণ করছে। তারা নিজেরাই চেষ্টা করছে কীভাবে বাল্কহেডটিকে ওই চ্যানেল পার করা যায়।"
তিনি বলেন, "আমাদের বিআইডিব্লউটি থেকে ১.৭ মিটার লোডেড ড্রাফট ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া আছে। তারা সম্ভবত তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ড্রাফট ব্যবহার করার কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।"