২৩ নাবিক সুস্থ আছেন, এখনো মুক্তিপণ চায়নি জলদস্যুরা: মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স সচিব
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেছেন, ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ বাংলাদেশি নাবিক সুস্থ আছেন। তাদেরকেসহ জাহাজ ফেরত আনাই প্রথম লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, জলদস্যুরা এখনো কোনো মুক্তিপণ চায়নি, এ ব্যাপারে কোনো যোগাযোগও করেনি।
এ সময় ২০১০ সালে অপহৃত এসআর শিপিংয়ের আরেক জাহাজ এমভি জাহান মনি এবং মালয়েশিয়ার জাহাজ এমভি আলবেদোয় কর্মরত সব বাংলাদেশি নাবিকদের অক্ষত উদ্ধারের কথাও সংক্ষেপে জানান সচিব।
খুরশেদ আলম জানান, 'জাহাজ চলাচলের নানা ঝুঁকিপূর্ণ রুট থাকে। আমাদের এ জাহাজটি [এমভি আবদুল্লাহ] উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রুট দিয়ে যায়নি। তারপরও জলদস্যুরা অপেক্ষায়ই ছিল বা এ নিয়ে ভিন্নমত আছে।'
'জলদস্যুরা আজকে (বৃহস্পতিবার) ভোর নাগাদ সোমালিয়ার কাছাকাছি নোঙর করেছে। তারা আমাদের সঙ্গে এখনও কোনো যোগাযোগ করেনি। বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা খবর রাখছি, জলদস্যুদের প্রায় ৬০ জন জাহাজে অবস্থান নিয়েছে এবং বাংলাদেশি ২৩ নাবিক সুস্থ আছেন,' বলেন তিনি।
সচিব বলেন, 'এ বিষয়ে আমাদের আগের অভিজ্ঞতা আছে। এর আগে ২০১০ সালে জাহান মনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১০০ দিনের মাথায় সকল নবিকসহ জাহাজটি আমরা ফেরত আনতে পেরেছিলাম।'
২০১০ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ান জাহাজ আলবেদো জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ওই জাহাজে সাতজন বাংলাদেশি, দুইজন ইরানি, তিনজন ভারতীয়, দুইজন পাকিস্তানি ও পাঁচজন শ্রীলঙ্কান নাবিক ছিলেন। কিন্তু মালয়েশিয়ার মালিকপক্ষ কোনো দায়িত্ব না নেওয়ায় জাহাজটি আটকে থাকে এবং আড়াই বছর পর ডুবে যায়।
এ ঘটনা উল্লেখ করে এডমিরাল বলেন, 'আমরা পুরো সময়জুড়েই কাজ করেছি এবং প্রায় তিন বছর চার মাস পরে আমরা নেগোসিয়েশন করে কেনিয়ার সেনাবাহিনী দিয়ে বাংলাদেশি নাবিকদের অক্ষত উদ্ধার করে এনেছি।'
সরকারের তৎপরতা নিয়ে সচিব বলেন, 'আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাহাজের মালিকসহ সব পক্ষের সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে।'
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নেয় জলদস্যুরা। চট্টগ্রামভিত্তিক কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন কোম্পানি এসআর শিপিং ছিনতাই হওয়া জাহাজটির মালিক।