চট্টগ্রামে ১০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের লংমার্চ
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কে লংমার্চ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও এর অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের ব্যানারে এ লংমার্চ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে আসা শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টার শাটল ট্রেন নগরীর ষোলশহর স্টেশনে পৌনে ৫টার দিকে পৌঁছালে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বিকেল থেকেই নগরীর বিভিন্ন কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ষোলশহর স্টেশনে জড়ো হতে থাকেন। বিকেল ৫টার দিকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে নগরীর দুই নম্বর গেট, প্রবর্তক, চকবাজারের দিকে হাঁটা শুরু করেন।
চকবাজার থেকে চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ হয়ে জামালখানের দিকে লংমার্চ অতিক্রম করা শুরু করলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। জামালখান থেকে কাজির দেউরি, লালখানবাজার, ওয়াসা, জিইসি মোড় হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুই নম্বর গেট এলাকায় এসে লংমার্চ সমাপ্ত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা, 'আমার ভাইয়ের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই', 'লাঠি দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না', 'ব্লকেড ব্লকেড, বাংলা ব্লকেড', 'দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক', 'কোটা না মেধা, মেধা মেধা', 'মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনরত চবি শিক্ষার্থী ওয়াহিদ হাসান বলেন, 'শিক্ষার্থীরা রাজপথে যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর আক্রমণ করবে কেন? কেন তাদের ওপর লাঠিচার্জ করবে? তাদেরকে এ অধিকার কে দিয়েছে ?'
'আমরা আন্দোলনে এসেছি আমাদের পরিবারকে রক্ষা করার জন্য, আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করার জন্য। যাদের ভোগান্তি হচ্ছে, তারা আমাদেরই মা-বোন, আমাদেরই প্রতিবেশী। তারা আমাদের আন্দোলনকে সমর্থন দেন,' বলেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে একাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
ওইদিন চট্টগ্রামের টাইগারপাস ও দুই নম্বর গেট এলাকায় পুলিশের দুই দফা লাঠিচার্জের পরও সড়ক ছাড়েননি শিক্ষার্থীরা। রাত ৮টা পর্যন্ত দুই নম্বর গেট এলাকায় অবস্থান করে অবরোধ পালন করেছিলেন আন্দোলনকারীরা।