গাজীপুরে টিএনজেড অ্যাপারেলসের পরিচালক গ্রেপ্তার
গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে টানা তিন দিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে ভাঙচুর ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক আব্দুল হালিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরবর্তীতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) নাজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত মো: আব্দুল হালিম (৪৮) চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
নাজির আহমেদ জানান, টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর একটি টহল দল আব্দুল হালিমকে চট্টগ্রামের বাসা থেকে আটক করে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বুধবার দুপুর ১টার দিকে আব্দুল হালিমকে বাসন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
তিনি জানান, আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় শ্রমিকদের বেতনের টাকা না দিয়ে ৫ কোটি টাকা প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। অপর একটি মামলার বাদী পুলিশ। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ ও কারখানা ভাংচুরের উসকানি দিয়ে জানমাল ও সম্পদের ক্ষতি সাধন, জননিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রাহেদুল ইসলাম বলেন, "দুটি মামলায় বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।"
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গত শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৯টা হতে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে।
এতে জনসাধারণের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এসময় তারা কয়েকটি কারখানা ভাঙচুর করেন। নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটিসহ আশপাশের অন্তত ৪৫ কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব নিলে, শ্রমিকরা ৩ দিন পর অবরোধ প্রত্যাহার করেন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আশপাশের অন্য কারখানাগুলো চালু হলেও গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যাসহ নানা কারণে টিএনজেড গ্রুপের কারখানাগুলো এখনও চালু হয়নি।