১৯ ইউনিটের ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে সচিবালয়ের আগুন, গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে যাবার শঙ্কা
বাংলাদেশ সচিবালয়ের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এরপর ১৯টি ইউনিটের ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে সেখানকার আগুন। তবে এতে বেশ কিছু মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথি ও কাগজপত্র পুড়ে গেছে বলে ধারণা করছেন অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা।
গণমাধ্যমকে পাঠানো এক খুদে বার্তায় ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার জানান, আজ সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৫২ মিনিটের দিকে অগ্নিনির্বাপক বাহিনী সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার খবর পায় বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার।
এদিকে সচিবালয়ে সকালে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যেই ঘটনাটি তদন্তে একটি উচ্চ ক্ষমতার তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সংখ্যা পরবর্তীতে জানানো হবে।
এত সুরক্ষিত জায়গায় নাশকতার সুযোগ আছে কি-না সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "অ্যক্সিডেন্ট তো যেকোন জায়গায় হতে পারে। তদন্ত না করে কিছু বলতে পারছি না।"
আর ঘটনাস্থলে সকাল পৌনে ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, "সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনটির ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কী কারণে আগুনের সূত্রপাত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।"
জাহেদ কামাল তখন আরও বলেন, "ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ১০টি ইউনিট সরাসরি কাজ করেছে। ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়িগুলো ভেতরে ঢোকানো যাচ্ছিল না, তাই গেট ভেঙে দুটি গাড়ি ঢোকানো হয়েছে।"
তিনি জানান, "ফায়ার সার্ভিসের ২১১ জন কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত। কর্মীরা বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে দেখছেন, আগুন নেভানোর কাজ করছেন। সেই কাজ প্রায় শেষের দিকে।"
আগুন লাগার কারণ জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি সাংবাদিকদের বলেন, "এখনো সেটা জানা সম্ভব হয়নি। আগুন নেভানোর পর তদন্তে বিষয়টি জানা যাবে।"
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, প্রথমে রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার খবর আসে। সচিবালয়ে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটটি আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে রাত ১টা ৫৪ মিনিট থেকে।
এদিকে সচিবালয়ে আগুন নিভাতে যাওয়ার সময় রাস্তা পারাপারের সময় তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস টিমের মোঃ সোহানুর রহমান সোহান (২৮) নামে একজন নিহত ও হাবিবুর রহমান (২৬) নামে একজন আহত হয়েছে।
এই বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, "পানির পাম্প থেকে লাইনের সংযোগ দিতে সড়ক পার হওয়ার সময় ট্রাকের ধাক্কায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সোহানুজ্জামান নয়ন আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। সোহানুজ্জামান তেজগাঁওয়ে স্পেশাল ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়।"
আগুন লাগার পর উদ্ধার সহায়তায় দুই প্লাটুন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম।