রূপপুর প্রকল্পের পেমেন্ট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল রাশিয়ার ভিইবি ব্যাংক
রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংক সুইফটের মাধ্যমে লেনদেন নিষেধাজ্ঞায় থাকায় বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের প্রেমেন্ট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির ব্যাংক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স (ভিইবি)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে বলেন, "কয়েকদিন আগে ভিইবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে গত ১ মার্চ থেকে লেনদেন না করার জন্য বলা হয়। এছাড়া রাশিয়ার আরও কিছু ব্যাংক বাংলাদেশের একাধিক ব্যাংককে লেনদেন বন্ধ রাখতে বলেছে।"
তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে অর্থায়ন করছে রাশিয়া। একইসঙ্গে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাশিয়ার পরমাণু শক্তি করপোরেশন রোসটমের নেতৃত্বে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাশিয়া সরাসরি বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে প্রকল্পের মেশিনারির জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পেমেন্ট করছে বলেও জানান তিনি।
ইতোমধ্যেই প্রকল্পের ঋণের কিছু অংশের টাকা পরিশোধ শুরু হয়েছে আর তা করা হচ্ছে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে।
"প্রকল্পে কর্মরত তাদের দেশিয় কর্মীদের টাকা পাঠাতে হচ্ছে। কিন্তু ওই ব্যাংকগুলোতে সুইফটের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আপাতত লেনদেন বন্ধ রাখতে বলেছে," বলেন তিনি।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি মো. আতাউর রহমান প্রধান টিবিএসকে বলেন, "রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের প্রেমেন্ট বন্ধ রাখতে রাশিয়ার ভিইবি ব্যাংক আমাদের চিঠি দিয়েছে। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জানিয়েছি। এ সম্পর্কে গতকাল বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ আমাদের ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েছে। যদিও কী সিদ্ধান্ত দিয়েছে আমার জানা নেই।"
রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার স্টেট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন ভিইবি. আরএফের। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার এই ব্যাংক অগ্রণী ব্যাংকের কাছে লেনদেন স্থগিতের (সাসপেন্ড) চিঠি পাঠায়।
এদিকে গত বুধবার সুইফট তার সদস্য ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো এক বার্তায় বলেছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার ৭ ব্যাংকের সঙ্গে এছাড়া আরও কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে স্থগিতের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এক্সিম ব্যাংক অব রাশিয়া, ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস, রসগ্রোস্ট্রাক ব্যাংক ও ভেতেবে ক্যাপিটাল। রাশিয়া ছাড়াও বেলারুশের দুটি ব্যাংকও সুইফটের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে।
উল্লেখ্য, রূপপুরে প্রকল্পে ১২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করবে ২২ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাশিয়ার ঋণসহায়তার পরিমাণ ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। কেন্দ্রটি থেকে ২০২৪ সালের বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।