বাস, লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি: যাত্রীদের চাপ নেই, হতাশ পরিবহন মালিকেরা
ঈদ উপলক্ষে বাসে ও লঞ্চে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হলেও নেই যাত্রীদের চাপ। ফলে পরিবহন শ্রমিক-মালিকদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে হতাশা। এমনকি এই মুহূর্তে স্বাভাবিকের চেয়েও কম যাত্রী নিয়ে চলতে হচ্ছে তাদের।
গাবতলী, টেকনিক্যাল ও কল্যাণপুরে বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে এবং বাস ও লঞ্চ মালিকদের সাথে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, "অগ্রিম টিকেট বিক্রি ১৫ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে। অনেক পরিবহন তারও আগে শুরু করেছে। তবে অগ্রিম টিকেটের চাহিদা শুরু থেকেই খুবই কম, যে পরিস্থিতি এখনও বিরাজমান। এমনকি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই মুহূর্তে কম যাত্রী নিয়ে চলছে দূরপাল্লার বাসগুলো। এক-তৃতীয়াংশ যাত্রী পাচ্ছে তারা। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে অনেক কোম্পানি। এই অবস্থায় আমরা হতাশ।"
শ্যামলী পরিবহনের কর্মকর্তা তপন কুমার জানান, তারা এখনো টিকিটের জন্য তেমন চাপ দেখছেন না।
তিনি বলেন, "ঈদের আগে এতো কম বিক্রি আমরা কখনো দেখিনি। এমনকি গত বছর লকডাউনের সময়ও আমাদের বেশ চাপ ছিল।"
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পর চাপ বাড়বে বলে তার আশা।
একই কথা বললেন আরেক বাস সার্ভিস হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার লালন মাহমুদ।
"আমরা ১৫ এপ্রিল থেকে অগ্রিম-টিকিট বিক্রি শুরু করেছি কিন্তু টিকিটের চাহিদা খুবই কম। গত চার দিনে, আমরা মাত্র ২০০ টিকিট বিক্রি করেছি। আগে এ সময় ইতিমধ্যে আসন সংকট শুরু হয়ে যেত", বলেন লালন মাহমুদ।
তিনি জানান, যানজট এবং যাত্রী স্বল্পতায় দৈনিক ট্রিপের সংখ্যা ৭-৮ এ নেমে এসেছে বর্তমানে, যা আগে ছিল ১০-১২।
এনা পরিবহন, ঈগল পরিবহন, ইউনিক পরিবহনসহ অন্যান্য বড় পরিবহন কোম্পানিগুলোর টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, "আমরা আশা করি সময়ের সাথে সাথে যাত্রীর চাপ বাড়বে। শেষের এক সপ্তাহ পরিবহনগুলো ভাল যাত্রী পাবে।"
তবে ঢাকা-চুয়াডাঙ্গা ও ঢাকা-মেহেরপুর রুটে পরিস্থিতি ভিন্ন হওয়ায় অগ্রিম টিকিটের জন্য বাস কোম্পানিগুলো কিছুটা চাপে রয়েছে।
লঞ্চ টিকেট বিক্রির অবস্থাও একই। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চগুলো আজ (২০ এপ্রিল) থেকে লঞ্চের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করবে, তবে সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই অগ্রিম টিকেট দেওয়া শুরু করেছে তারা। কিন্তু চাহিদা একেবারেই তলানিতে।
এ ব্যাপারে লঞ্চমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, "আমাদের টিকেটের চাহিদা তেমন দেখতে পাচ্ছি না এই মুহূর্তে। তবে আশা করি আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে চাপ বাড়বে এবং ২৮-৩০ তারিখের মধ্যে বিপুল পরিমাণ মানুষ লঞ্চে ঢাকা ছাড়বে।"
এদিকে ২৩ এপ্রিল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট ২৩ এপ্রিল এবং ২৮-৩০ এপ্রিল এবং ১ মে এর জন্য টিকিট যথাক্রমে ২৪, ২৫, ২৬ এবং ২৭ এপ্রিল পাওয়া যাবে।