চাঁদাবাজি মামলায় বয়োবৃদ্ধ শিক্ষক গ্রেপ্তার: পুলিশের তদন্ত টিম গঠন
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর এলাকায় মারামারি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় একজন বয়োবৃদ্ধ স্কুলশিক্ষকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে তড়িঘড়ি করে গ্রেপ্তার নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ওঠেছে। সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়ে অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। এ নিয়ে অবশেষে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি আগামী ৭ দিনে তাদের রিপোর্ট দিবেন বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের অভিযোগ, জমিদখলের উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষ চিহ্নিত ভূমিদস্যু চক্র একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মামলা ও পুলিশের ভয় এবং ভূমিদস্যু চক্রটির অপতৎপরতায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
অবসরপ্রাপ্ত ওই বৃদ্ধ স্কুলশিক্ষকের জমি দখলে নিতে মুরগির খামারের ১২ পিস টিন, ২০০ ব্রয়লার মুরগি লুট, ২৫-৩০টি গাছ কেটে নেয়াসহ ভাঙচুর, হামলা ও চাঁদাবাজিসহ দশটি ধারায় কাশিমপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। শুধু এই একটি মামলা নয় জমি দখলে নিতে এর আগে নাম-বেনামে একই রকমের গল্প সাজিয়ে বিভিন্ন থানায় ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে শিক্ষকের পরিবারের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়ার পর সাধারণত তার তদন্ত করে মামলা নেয়া হয়। মামলা নিতে অনেক সময় গড়িমসি করে পুলিশ।
বয়োবৃদ্ধ কফিল উদ্দিনের মেয়ে সাংবাদিক কামরুন্নাহার শোভা জানান, 'গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাগবাড়ী এলাকায় তাদের পৈত্রিক সূত্রে জমি রয়েছে। রাজধানীর গুলশান এলাকার ফজলুল করিমের ছেলে ইমতিয়াজ করিম বিভিন্ন সময়ে সেই জমি দখল করার চেষ্টা করে আসছে। শুধু তাই নয়, উল্টো আমাদের ভূমি দস্যু বানিয়ে একের পর এক মামলা দিচ্ছে। কিন্তু সেই ভূমিদুস্য চক্রকে বছরের পর বছর কিভাবে পুলিশ সাপোর্ট করে, তদন্ত না করেই মামলা নেয়! এখন তদন্ত কমিটি হয়েছে ভাল কথা, ভূমিদস্যুরা যেন ছাড় না পায়। আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।'
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার জাকির হাসান জানান, মারামারি মামলায় কাশিমপুর থানা পুলিশ কফিল উদ্দিনসহ দুইজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বরকত উল্লাহ খানকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, উপপুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত উপ কমিশনার খাইরুল আলম। গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বরকত উল্লাহ খান বলেন, পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবীরের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। রোববার থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হবে। এ ঘটনায় যদি কেউ দায়ী থাকে এবং কারো যদি দায়িত্বে অবহেলা থাকে তবে দায়ীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।