নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার তেল কেনার বিষয়ে নয়াদিল্লির পরামর্শ চায় ঢাকা
ভারত কীভাবে রাশিয়া থেকে তাদের তেল কেনার বিষয়টি পরিচালনা করছেন সে বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়ার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জ্বালানি সমস্যা বাংলাদেশের জন্যও একটি সত্যিকার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা এনার্জির (আমদানি) ওপর নির্ভরশীল। রাশিয়া আমাদের এনার্জি ও গম অফার করেছে। এটি একটি বাস্তব সমস্যা হয়ে উঠেছে। আমরা এতে (শক্তি সংকট) ভীত। আমরা তাদের (ভারত) পরামর্শ চেয়েছি, কীভাবে তারা এটা করছে। এটি একটি বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা।'
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ২৮-২৯ মে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনের নদী সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়টির স্বপক্ষে বলেছে (ভারত) এক মাসে রাশিয়া থেকে যা কিনেছে, একদিন বিকালেই ইউরোপ রাশিয়া থেকে থেকে তার চেয়ে অনেক বেশি কিনেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতকে মস্কো থেকে দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান অব্যাহত থাকার পরও রাশিয়ার কাছ থেকে (ভারতের) তেল কেনা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
ভারত এমন এক সময়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়ানোর জন্য মূল্য ছাড়ের সুযোগ নিয়েছে, যখন বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়ছে।
কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে মোমেন বলেন, 'আপনারা দেখছেন যে তারা আমাদের ওপর বসগিরি করছে এবং আপনারা (সাংবাদিকরাও) তাদের উৎসাহ দিচ্ছেন। প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন সমস্যা নিয়ে হাজির হয়। তাদেরকে আমরা উন্নয়ন সহযোগী বলতাম। তারা উন্নয়নের জন্য অর্থ দেয় না কিন্তু পরামর্শ দিতে থাকে।'
মোমেন আরও বলেন,'উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা অনেক কিছু সামনে রেখে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য নানা শর্ত যোগ করে। 'এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।'
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ হওয়ায় বিশ্বের স্থিতিশীলতাকে সব সময় স্বাগত জানায়।
তিনি বলেন, 'আমরা খুবই আন্তঃনির্ভরশীল।'
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানির দুই বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে অস্থিতিশীলতা থাকলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা থাকলে বাংলাদেশের রেমিটেন্স অর্জন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও জানান তিনি।
মোমেন বলেন, 'তাই আমরা কোনো সমস্যায় পড়তে চাই না। আমরা বিশ্বে শান্তি চাই।'
তিনি বলেন, 'ধনী দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ শেষ করা সবার জন্য মঙ্গলজনক।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যে কীভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করা যায়।
তিনি অবশ্য বলেন, বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতার দুর্বল হয়ে পড়া দেখতে চায় না। 'আমরা বহুপাক্ষিকতার একটি বড় সমর্থক।'