‘স্কুইড গেম’ আসলে হেরে যাওয়া মানুষের গল্প: পরিচালক হোয়াং দং-হিউক
আপনি যদি নেটফ্লিক্স হিট সিরিজ 'স্কুইড গেম' দেখে থাকেন, তাহলে টাগ অব ওয়ার (দড়ি টানার প্রতিযোগিতা) কিংবা রেড লাইট, গ্রিন লাইটের (স্ট্যাচু খেলা) মতো শিশুদের খেলাগুলো আপনার কাছে ভিন্নভাবে অর্থবহ হতে পারে।
এই সিরিজের রচয়িতা, পরিচালক ও প্রযোজক হোয়াং দং-হিউক সিএনএনকে বলেন, দক্ষিণ কোরিয়াতে বেড়ে ওঠার সময় তার শৈশবের অংশ ছিল এসব খেলা। সেই খেলাগুলোর মধ্যে ছিল 'স্কুইড গেম'ও।
একটি অস্পষ্ট স্কুইড আকৃতির কোর্টে অ্যাটাকার ও ডিফেন্ডার- এই দুই দলে বিভক্ত হয়ে খেলা হতো এটি। ডিফেন্ডারদের বাধা পেরিয়ে স্কুইডের মাথায় পৌঁছাতে হতো অ্যাটাকারকে।
হোয়াং বলেন, 'আমরা যখনই এই খেলা খেলতাম, তখন কেউ না কেউ আহত হতো। অনেকের কাপড় ছিঁড়ে যেত, এমনকি কেউ কেউ কাঁদত। দিন শেষ এটি স্রেফ একটি খেলাই ছিল।'
প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর শৈশবে ফিরে খেলাগুলো খেললে কেমন হবে- এই প্রশ্ন থেকেই সিরিজটির জন্ম। ঋণগ্রস্ত কিছু প্রতিযোগীর টাকার প্রতি লোভ এবং শিশুদের খেলার মারাত্মক রূপ নিয়ে তৈরি 'স্কুইড গেম'। সেপ্টেম্বরে মুক্তির পর নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই শো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৯০টি দেশে শীর্ষস্থান অর্জন করে।
হোয়াং বলেন, সিরিজটি বর্তমানের 'প্রতিযোগিতামূলক সমাজে'রই একটি প্রতিফলন। তিনি বলেন, 'এটি হেরে যাওয়া মানুষের গল্প।'
সমাজের প্রতীকী হওয়ার পাশাপাশি এটি একটি ব্যক্তিগত গল্পও। সিরিজের দুটি প্রধান চরিত্র সং গি-হুন এবং চো সাং-উ'র নামকরণ করা হয়েছে হোয়াংয়ের ছোটবেলার বন্ধুদের নামে। তিনি তাদেরকে 'অন্তস্থলের ক্লোন' বলে অভিহিত করেন।
'গি-হুনের মতো, আমিও বড় হয়েছি নিজের মায়ের কাছে। সাংমুন-দং-এ আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত পরিবেশে বেড়ে উঠেছি আমি। অন্যদিকে, সাং-উর মতো আমি সিওল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়েছি,' বলেন হোয়াং।
দক্ষিণ কোরিয়ান এই পরিচালক আরও জানান, সিরিজটি তৈরি করা ছিল তার জন্য বেশ রোমাঞ্চের। শুটিং চলাকালে মানসিক চাপের কারণে তিনি ছয়টি দাঁত হারান!
হোয়াং বলেন, 'সম্পূর্ণ একা একটি সিরিজ লেখা এবং সেটি প্রযোজনা ও পরিচালনা করা সত্যিই বেশ বড় কাজ। দ্বিতীয় সিজনের জন্য একই কাজ করার কথা ভেবে আমি ইতোমধ্যেই চিন্তায় পড়ে গেছি।'
'যদিও এই মুহূর্তে দ্বিতীয় সিজনের বিষয়টি নিশ্চিত নয়, তবু অনেকেই এ নিয়ে উৎসাহী,' যোগ করেন হোয়াং।
-
সূত্র: সিএনএন