‘সুলতানাস ড্রিম’: রোকেয়ার নিজস্ব প্রজাতন্ত্রের খোঁজ
আজ এই ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের ফেসবুক ভুবনে যখন রোকেয়াকে নিয়ে নতুন করে বিতর্ক হচ্ছে এবং একদল তাকে 'মেয়েদের ঘরের বাইরে বার করে আনা'র জন্য দোষারোপ করছে এবং আর একদল তাকে মাথায় শুভ্র শাড়ির আঁচল তোলার অপরাধে বা 'বোরকা' শিরোনামে নিবন্ধ লেখার দায়ে 'লেডি তিতুমীর' বিশেষণে আখ্যায়িত করছে, তখন আমার মতো কিছু বিমূঢ় হয়ে যাওয়া মানুষকে নতুন করে রোকেয়ার রচনাবলীতে দৃষ্টি মেলতেই হয়।
নারীশিক্ষা বিস্তারের অপরাধে যে রোকেয়ার মৃত্যুর পরে কবরের জন্য মাটি পেতেই কষ্ট হচ্ছিল, সেই রোকেয়াকে 'ধর্মান্ধ' বলে কেউ তৃপ্তি পাচ্ছে। আবার সেই বিশ শতকের শুরুতে বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়েদের শিক্ষিত করার জন্য যে তরুণী বিধবাকে পালকিতে করে এবং আপাতঃরক্ষণশীল পোশাকের বাতাবরণেই তার ছাত্রীদের স্কুলে আনতে হয়েছে এবং নিজেকেও সমাজে নারীর জন্য বেঁধে দেওয়া পোশাক বা আচার-আচরণের লক্ষণগণ্ডিই মানতে হয়েছে আরও অনেক বড় যুদ্ধ সম্পন্ন করার জন্য, তাকে গালাগাল দিয়ে অনেকে বিপুল আনন্দ লাভ করছে।
আর ঠিক সেই সময়েই কেন যেন তড়িতাহতের মতো আমার মাথায় একটিই প্রশ্ন আসে: রোকেয়াই কি সেই প্রথম নারীবাদী নন যিনি নারীর জন্য একদম নিজস্ব একটি প্রজাতন্ত্রই খুঁজেছেন তার 'সুলতানাস ড্রিম'-এ? খোদ পশ্চিমে ভার্জিনিয়া উলফ নারীর জন্য বা আরও ঠিক করে বললে 'নারী লেখকে'র জন্য 'অ্যা রুম অব ওয়ানস ঔন' বা 'নিজের একটি ঘর' খুঁজেই কত হৈ চৈ ফেলে দিলেন! আর ভাবুন বাদামি ভারত উপমহাদেশের এক বাঙালি মুসলিম নারী, নারীর জন্য নিছক একটি 'কামরা' বা 'রুম' নয়, 'নারীস্থান' নামে একটি আস্ত প্রজাতন্ত্রের মালিকানাই দাবি করে বসেছেন।
এই সাহস তার আগে কি কারও হয়েছে? তার পরেও কি কারও হয়েছে? রাষ্ট্র হিসেবে 'গণপ্রজাতন্ত্রী' শব্দটি বা 'পিপলস রিপাবলিক' শব্দটি আমরা আমাদের সংবিধানে যুক্ত করতে পারলাম সেই সেদিন- ১৯৭২ সালে। রাজা শশাঙ্কের কর্ণ সুবর্ণ, প্রকৃতিপুঞ্জের হাতে নির্বাচিত রাজা গোপালের শাসনে বাংলার প্রথম গণতন্ত্র, গৌড়ের হুসেন শাহী শাসনামল, মোগল আমলে সুবা বাংলার বারো ভূঁইঞার দিল্লি বিরোধী বিদ্রোহ, বৃটিশ আমলে হার ম্যাজেস্টি দ্য ক্যুইনের শাসিত প্রজা হিসেবে ও পাকিস্থানী আমলের চব্বিশ বছর পেরিয়ে একটি 'পিপলস রিপাবলিক' বা 'গণপ্রজাতন্ত্র' হতেই আমাদের লেগে গেল সহস্রাব্দ! আর সেই বাংলারই এক মেয়ে ব্রিটিশ শাসনের শেষের দিকে উপনিবেশে বসে লিখছেন 'নারীস্থান' বা 'নারীর জন্য পৃথক প্রজাতন্ত্রে'র একটি স্বপ্ন। নারীপ্রজাতন্ত্র বা ওমেন্স রিপাবলিক। ইউটোপিয়া বলবেন একে? সে তো প্লেটোকেও বলা হয়েছিল তার 'রিপাবলিক' বইটির জন্য।
পৃথিবীর প্রথম নারীবাদী দার্শনিক প্লেটো যার সেই সময়ের বিচারে প্রবল সব নারীবাদী ভাবনায় আহত বোধ করেছিলেন, তারই রক্ষণশীল শিষ্য এ্যারিস্টটল অথবা মৃদু তিরষ্কার করেছিলেন গুরু সক্রেটিস।
সেই ৩৭৫ অব্দে প্লেটো যখন তার 'রিপাবলিক' রচনা করেন, তখন এথেন্সের নারী ছিল নগর-রাষ্ট্র এথেন্সের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। ভোটাধিকার, জমির মালিকানা, সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার অথবা রাজনৈতিক পরিসরে কোনো অবস্থান নেওয়া নারীর জন্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ ছিল। মোটামুটি ১৪ বছর নাগাদ মেয়েদের বিয়ে হয়ে যেত আর বিয়ের আগে বাবা বা ভাই কি অন্য কোনো পুরুষ আত্মীয়ের তত্ত্বাবধানে মেয়েদের থাকতে হতো। বিয়ের পর নারী চলে যেত স্বামীর তত্ত্বাবধানে। সোজা বাংলায়, ভারতে মনুর সেই অলঙ্ঘ্য শাস্ত্রীয় বিধানেরই আর এক প্রতিরূপ: 'পিতা রক্ষতি কৌমারে, ভর্তা রক্ষতি যৌবনে' ইত্যাদি।
কিন্তু গ্রিক সমাজের এই প্রচলিত লৈঙ্গিক বিন্যাস ভেঙে দিতে চাইলেন প্লেটো তার 'রিপাবলিক' গ্রন্থে। অধিকারহারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের বদলে প্লেটো জানালেন, তার রাষ্ট্রে জনপরিসরে পুরুষের মতোই সেরা আসনে নারীও আসীন হতে পারে। গ্রিসে ভারতের ক্ষত্রিয়দের মতোই অভিজাত শ্রেণির উপরিভাগে ছিলেন 'অভিভাবক' শ্রেণি, যারা যোদ্ধা ও রাজনৈতিক শাসক- একইসঙ্গে দার্শনিক। প্লেটো বলছেন, নারী তার যোগ্যতাবলে এই 'অভিভাবক' শ্রেণিতে অংশ নিতে পারে।
এথেন্সে পুরুষই শুধু জমির মালিক হতে, আইন পরিষদে ভোট দিতে এবং বিচারালয়ে উপস্থিত হতে পারত। তবে, এর বিনিময়ে তাদের দেশের জন্য যুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করতে হতো। চার শতকের এথেন্সে নারী ও পুরুষের পরিসর ভাগ হয়ে গেছিল 'অন্তর' ও 'বহির্মহলে।' এই বিভাজন যে সবসময় শুধুমাত্র পুরুষের নারীকে দমিত করার ইচ্ছা থেকেই হয়েছে, তা নয়। সন্তানের জন্মদান ও লালন-পালনের দূরূহ কাজ করতে গিয়েও নারী জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক সময়েই। অন্তসত্ত্বা অবস্থায় নারী কীভাবে ঘরের বাইরে কাজ করবে বা যুদ্ধ করবে? এছাড়াও সন্তান জন্মদানের পরের কয়েক বছর মাকেই তো বড় করে তুলতে হয় বাচ্চাকে। কিন্তু যে মেয়েরা দস্যি? পরিণত বয়সেও বালিকাস্বভাবা?
গ্রিক পুরাণে দেখা যায়, সেই মেয়েরা যোদ্ধা হচ্ছে, পুরুষের জীবনযাপন করছে। যুদ্ধের দেবী এথেনা বা শিকারের দেবী ডায়না পুরুষের মতোই যুদ্ধ করছেন বটে, তবে বদলে চিরকুমারী থাকতে হচ্ছে। আমাজন নারী যোদ্ধারা বিয়ে করলে তাদের বরদের অনেক সময় ঘরের কাজ সামলাতে হচ্ছে। 'মহাভারত'-এ যেমন মহাবীর ভীষ্মের কাছে যুদ্ধে হেরে গিয়ে কাশী রাজকুমারী অম্বার প্রেমিক অম্বাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃত হলে (তখনকার প্রথায় যুদ্ধে জয়ী রাজকুমারই বিয়ে করবেন একজন রাজকুমারীকে) এবং ভীষ্মও চিরকুমার হিসেবে থাকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে অম্বা আত্মাহুতি দেন ও ব্যর্থ নারীজীবনের প্রতিশোধ নিতে রাজা দ্রুপদের ঘরে পরজন্মে যোদ্ধাকন্যার চিরকুমারী জীবন কাটান ও চির প্রতিপক্ষ ভীষ্মকে হত্যার জন্য অন্তিমে এক অর্থে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষে রূপ লাভও মেনে নেন। অম্বার 'তৃতীয় লিঙ্গে'র মানুষে বদলে যাওয়াটা এক দিক থেকে হয়তো প্রতীকী যে, আসলে তিনি নারী বা পুরুষ কারও জৈবিক জীবনই যাপন করেননি।
রবীন্দ্রনাথের 'চিত্রাঙ্গদা'র মতো ছেলে শিশু না জন্মালে মা-বাবার কন্যাকেই ছেলের পোশাক, নাম ও জীবনাচারে বড় করার প্রথা আফগান সমাজে 'বাচে পশ' প্রথা হিসেবে আজো রয়েছে।
উনিশ শতকের শেষ বা কুড়ি শতকের শুরুতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির চল শুরু হলে প্রথম নারী জৈবিক জীবন ও শিক্ষা এবং পেশাগত জীবনের সমন্বয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তবু আজো প্রাচ্য-পশ্চিমে রাজনীতি, সঙ্গীত থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থানে পৌঁছানো নারীদের কেউ কেউ চির অবিবাহিত জীবনযাপন করেছেন, কেউ যৌবনের শেষবিন্দুতে পৌঁছে বিয়ে করছেন। সামগ্রিকভাবে গোটা বিশ্বে উচ্চশিক্ষা ও কেরিয়ার নির্ভর একক নারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
২.
এবার আসুন রোকেয়ার রচনাবলীতে চোখ রাখি। অসংখ্য অলঙ্কারের ভারে চলা-ফেরা অক্ষম অভিজাত অন্তঃপুরবাসিনীদের গয়নার ওজন নিয়ে ঠাট্টা করছেন তার লেখায়, কয়েকশ পদের আচার ও মোরব্বা না বানাতে পারলে সুগৃহিণী হতে পারা যায় না- এমন সামাজিক প্রচলকে নিন্দা করছেন। অভিজাত অন্তঃপুরবাসিনীদের উপদেশ দিচ্ছেন অন্তত ছাদে গিয়ে একটু হাঁটা-চলা করার জন্য। বোঝা যাচ্ছে, নারীর শারীরিক ব্যায়াম যে দরকার, সেটা ভালোই বুঝতেন তিনি।
তীব্র মর্মজ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে সেই যুগে রোকেয়া লিখছেন, স্বামী যখন টেলিস্কোপে মহাকাশে গ্রহ-নক্ষত্রের আবর্তন পথ মাপছেন, স্ত্রী তখন বালিশের ওয়্যারের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ মাপছেন। কুকুরের গলার চেন বা বকলসের সাথে নারীর গলার হারের তুলনা করছেন তিনি! কন্যাগুলিকে 'সুশিক্ষিত করিয়া ছাড়িয়া দেবার' কথা বলছেন যেন নিজের অন্ন-বস্ত্র নিজেই রোজগার করতে পারে। এমনকি 'ধর্মগ্রন্থগুলি' পুরুষের সৃষ্টি- এমন কালাপাহাড়ি উচ্চারণও করছেন সেই সময়ে! জয়নব আর কোনোদিনই স্বামীগৃহে ফিরে যায় না। 'তারিণী ভবনে' অ্যাংলো ইন্ডিয়ান-হিন্দু-মুসলিম-ব্রাহ্ম সব সম্প্রদায়ের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত ঘরেরও যে নারীরা শ্বশুরবাড়ি বা জীবনসঙ্গীর হাতে অত্যাচারিত হয়ে স্থান নিয়েছেন আর পরের প্রজন্মের মেয়েদের জন্য স্কুল গড়েছেন, সেই 'তারিণী ভবনে'র রূপ-স্রষ্টা রোকেয়া 'উগ্র ওয়াহাবি, লেডি তিতুমীর?'
হ্যাঁ, আপস ছিল না তার, তা নয়। বাঙালি মুসলিম পুরুষ যেন তারই সম্প্রদায়ের নারীর জন্য দুটো স্কুল খোলে, সেজন্য মাঝে মাঝে 'আপাত সাম্প্রদায়িক' শুনতে যুক্তিও দিচ্ছেন কখনো কখনো বক্তৃতায়- কোনো কোণো সম্মেলনে। সম্প্রদায়ের পুরুষ নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় জানাচ্ছেন, অ্যাংলো স্কুলে গিয়ে মুসলিম বালিকারা খ্রিস্টের স্তব আর হিন্দু স্কুলে গিয়ে মুসলিম বালিকারা গঙ্গাস্নানের মন্ত্র সুর করে গাওয়া শিখছে। পালকিতে করেই তাকে স্কুলে ছাত্রী আনতে হচ্ছে। 'বোরকা'র পক্ষেও মাঝে মাঝে প্রবন্ধ লিখতে হচ্ছে 'অবরোধবাসীনী'র লেখককে।
পড়ন্ত জমিদার বাড়ির মেয়ে রোকেয়ার বিয়ে হয়েছিল বয়সে দ্বিগুণ বড়, বিপত্নীক স্বামীর সাথে, যার আগের পক্ষের পুত্র-কন্যারা তার চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। খুবই অল্প বয়সে বিধবা হওয়া এই নিঃসন্তান নারীর পক্ষে দ্বিতীয় বিয়ের সুযোগ ছিল তার সম্প্রদায়ে। সেই 'সহজ সুখে'র রাস্তায় না হেঁটে মেয়েদের জন্য স্কুল খোলা আর সারাজীবন লেখালেখি করার এমন কঠিন রাস্তাই বেছে নিয়েছিলেন যে, মৃত্যুর পর তার কবরের মাটি পাওয়া নিয়েই টানাটানি!
'সুলতানার স্বপ্নে' ভগিনী সারা যে 'নারীস্থাণ' নিয়ে যায় বৈকালিক নিদ্রায় আচ্ছন্ন ভারতীয় বা বাঙালি মুসলিম নারী সুলতানাকে, সেখানে মেয়েরা যেহেতু পুরুষের মতো চুরুট খেয়ে অফিসের কাজে দু-চার ঘণ্টা অবলীলায় ক্ষয় করে না, তাই স্বল্প সময়ের মনোযোগী কাজেই দাপ্তরিক কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়। সেই নারীস্থানে 'জেনানা' নেই, আছে 'মর্দানা।' লাজুক সুলতানাকে রাস্তায় অবনতমুখে হাঁটতে দেখে 'নারীস্থানে'র নারীরা হাসে আর এর কারণ জানতে চাইলে ভগিনী সারা জানায়, সে 'পুরুষের মতোই লাজুক।' হিংস্র বাঘ-সিংহের মতো জননিরাপত্তার প্রশ্নে পুরুষকেও এই 'নারীস্থানে' তাই ঘরে রাখা হয়েছে। ভাবুন, আজকের বাংলাদেশের বেগমগঞ্জের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভাবুন! শুধু মেয়ে নয়, ছেলে শিশুদের নিরাপত্তার প্রশ্নেও ভাবুন আর আবার পড়ুন রোকেয়াকে!
হতভম্ব সুলতানা শেষমেশ যখন জানতে চায় যে কীভাবে সম্ভব হলো এই 'অসম্ভব' বিজয়, সারা তখন জানাল, প্রতিবেশী এক রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধে ক্লান্ত পুরুষকুলকে ক্ষান্ত দিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর ভর করে দেশের নারীবাহিনীর যুদ্ধ জয় ও 'প্রজাতন্ত্র'কে নিজেদের করে নেবার কাহিনি। অ্যা রিপাবলিক অব দেয়ার ঔন!
তবে, এত কিছুর পরও এই অক্ষম নিবন্ধকারের মতো রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ রচনা তার 'সুলতানাস ড্রিম' নয়, তার শ্রেষ্ঠ রচনা 'জ্ঞানফল'। যেখানে সেমিটিক তিন সম্প্রদায়ের (ইহুদি-ক্রিশ্চিয়ান-মুসলিম) পুরাণে ঈভ বা নারীকে অ্যাডাম বা পুরুষকে 'গন্দম' বা 'আপেলে'র লোভ দেখিয়ে ইডেনস গার্ডেন বা অমরাবতীর উদ্যান থেকে বিচ্যূত করার যে অপরাধ নারীর কাঁধে চাপানো হয়েছে, রোকেয়া তা অসীম স্পর্ধায় চ্যালেঞ্জ করে জানাচ্ছেন, সেই নিষিদ্ধ ফল ছিল আসলে 'জ্ঞানফল'- যা খেলে জ্ঞান হয়! ভীতু, অমরাবতীর উদ্যানে হেসে-খেলে সময় কাটাতে চাওয়া পুরুষকে সেই ফল খাইয়ে নারীই তাকে এই সসাগরা পৃথিবীতে টেনে এনেছে আর তারপর নারী-পুরুষের মিলিত শ্রমে গড়ে উঠেছে এই মানবসভ্যতা।
অবাক লাগছে ভাবতে, এই সাদা শাড়ির ঘোমটায় আবৃতা, এক অতি সাধারণ বাঙালিনীর অবয়ব বলে আমরা তার রচনার অনল আয়ুধ আজো বুঝতেই সক্ষম হলাম না আর এখন কি না মেতে উঠেছি তিনি 'মিয়া খলিফা' অথবা 'উগ্র ওয়াহাবী' এই কূটালোচনায়।
- লেখক: কথাসাহিত্যিক