রাশিয়ার সরবরাহ কমলে জ্বালানি তেলের মূল্য ৩৮০ ডলার ব্যারেলের শঙ্কা জেপি মরগ্যানের
দুনিয়ার শীর্ষ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলাফল ভাল হবে না, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার প্রাক্কালে অনেক বিশেষজ্ঞ সে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। ইউক্রেনকে সমর্থন দিতে গিয়ে তাতে গা করেনি আর্থিক সামর্থ্যে বলীয়ান পশ্চিমা সরকারগুলো। কিন্তু, এবার যদি তারা রাশিয়াকে অপরিশোধিত তেল (ক্রুড) উৎপাদন কমাতে প্ররোচিত করে, তাহলে ব্যারেলপ্রতি ক্রুডের মূল্য ৩৮০ ডলারে পৌঁছাবে বলে সতর্ক করেছে জেপি মরগ্যান চেজ অ্যান্ড কোং।
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র এই সাত উন্নত অর্থনীতির জোট জি-৭ ইউক্রেনের জোর সমর্থক। আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া দরের কারণে রাশিয়া মূল্য ছাড় দেওয়ার পরও ক্রুড বিক্রি করে বিপুল রাজস্ব আয় করছে। রাশিয়ার ওই রমরমা বাণিজ্য বন্ধ করতে চায় জি-৭। এজন্য তারা জটিল এক ব্যবস্থা প্রণয়নের উদ্যোগ শুরু করেছে। তবে এই উদ্যোগ রাশিয়াকে ক্ষুদ্ধ করবে নিঃসন্দেহে। কিছুদিন আগেই জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়েছে মস্কো। এখন জি-৭ এর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে যদি বৈশ্বিক তেলের বাজারেও সরবরাহ কমায়- তাহলে সমূহ বিপদের প্রমাদ গুনছে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক বৃহৎ এ বিনিয়োগ ব্যাংকটি।
জেপি মরগ্যানের বিশ্লেষক নাতাশা কানেভা গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে লেখা এক নোটে উল্লেখ করেন যে, মস্কোর আর্থিক অবস্থান সবল, তাই রাশিয়া চাইলে অর্থনীতির তেমন গুরুতর ক্ষতি না করে—দৈনিক ৫০ লাখ ব্যারেল ক্রুড উৎপাদন কমাতে পারবে।
কিন্তু, এতে বাকি বিশ্বের জন্য সৃষ্টি হবে বিপর্যয়কর পরিণতি, যেমন বৈশ্বিক সরবরাহ ৩০ লাখ ব্যারেল কমলে বৈশ্বিক সূচক- লন্ডন ক্রুডের মূল্য দাঁড়াবে ১৯০ ডলার প্রতিব্যারেলে। সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির যে অনুমান মরগ্যান অ্যান্ড চেজ করছে, তাতে দৈনিক সরবরাহ ৫০ লাখ ব্যারেল কমাতে পারে মস্কো, এতে করে অচিন্তনীয় ৩৮০ ডলার প্রতিব্যারেল হতে পারে ক্রুডের দর।
জেপি মরগ্যানের বিশ্লেষকরা লিখেছেন, "ক্রুডের মূল্যসীমা বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা করছে জি-৭; রাশিয়া নিশ্চিতভাবে এ ব্যবস্থায় অংশ তো নেবেই না, বরং পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রপ্তানি সীমিতকরণের পথ বেঁছে নেবে সে ঝুঁকিই বেশি।"
তারা আরও মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলোকে আঘাত করতে রুশ সরকার উৎপাদন সীমিতকরণের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখাবে সে সম্ভাবনাই বেশি। তাছাড়া, বিশ্ববাজারে জ্বালানির যে টানাটানি অবস্থা- তাও রাশিয়ার পক্ষে কাজ করছে।"
- সূত্র: ব্লুমবার্গ