পশ্চিমারা যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে হারাতে চায়- 'পারলে হারাক তারা': পুতিন
'যুদ্ধক্ষেত্রে' রাশিয়াকে হারানোর চেষ্টা চালাতে পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে এখনো আসল যুদ্ধ শুরুই করেনি। এই যুদ্ধে রাশিয়াকে পরাজিত করতে চেষ্টা করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে চ্যালেঞ্জ করেন পুতিন।
ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের চার মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রুশ পার্লামেন্টের নেতাদের সামনে এক বক্তৃতায় পুতিন বলেন, এ সংঘাত যত দীর্ঘ হবে, ততই আলোচনার সম্ভাবনা কমবে।
"আমরা শুনছি যে তারা (পশ্চিমা বিশ্ব) আমাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পরাজিত করতে চায়। কী আর বলার আছে? তাদেরকে চেষ্টা করতে দিন," পুতিন বলেন।
"আমরা বহুবার শুনেছি পশ্চিমারা চায়, যদি একজন ইউক্রেনীয় নাগরিকও লড়াই করার জন্য বাকি থাকে তাহলেও যেন এই যুদ্ধটা চলে। কিন্তু এটি ইউক্রেনীয় জনগণের জন্য একটি ট্র্যাজেডি।"
"পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সবকিছু এই ট্র্যাজেডির দিকেই যাচ্ছে"- বলেন তিনি।
এ ছাড়া, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতিতে আঘাত করে এবং ইউক্রেনে উন্নত অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমারা একটি 'ছায়া যুদ্ধ' চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন পুতিন।
তবে, আলোচনায় বসার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
"সবার জেনে রাখা উচিত, আমরা এখনও সর্বশক্তি দিয়ে যুদ্ধ শুরু করিনি।"
"আমরা শান্তি আলোচনার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করিনি। কিন্তু যারা প্রত্যাখ্যান করছে তাদের জানা উচিত যে, যত সময় যাবে ততই আমাদের সাথে আলোচনা করা তাদের পক্ষে কঠিন হবে।"
পুতিন বলেন, এটা স্পষ্ট যে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা দেশটির অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছে, "কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে চালানো সব পরিকল্পনা কার্যকর হয়নি।"
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে রুশ বাহিনী রোববার লুহানস্কের পূর্বাঞ্চল দখল করাসহ দেশটির আরো কিছু অংশ দখল করেছে।
কিন্তু রাশিয়ান বাহিনীর অগ্রগতি অনেক বিশ্লেষকের ভবিষ্যদ্বাণীর চেয়ে খানিকটা ধীরগতিরই ছিল। রাজধানী কিয়েভ এবং ইউক্রেনের দ্বিতীয় শহর খারকিভ দখলের প্রাথমিক প্রচেষ্টায় তারা পিছিয়ে পড়েছিল।
বর্তমানে পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ।
ইউক্রেনের প্রধান আলোচক, মিখাইলো পোডোলিয়াক চলতি সপ্তাহে টুইটারে বলেন, মস্কোর সাথে আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য তাদেরকে বেশকিছু শর্ত মানতে হবে।
তার উল্লিখিত শর্তগুলো হলো: "যুদ্ধবিরতি, জেড-সৈন্য প্রত্যাহার, অপহৃত নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা, যুদ্ধাপরাধীদের প্রত্যর্পণ, ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়া, ইউক্রেনের সার্বভৌম অধিকারের স্বীকৃতি।"
পশ্চিমা সমর্থনে যুদ্ধ চলমান রাখা ইউক্রেনও বিপুল পরিমাণে যোদ্ধা ও অস্ত্র উভয়ই হারিয়েছে।
এর ওপর, ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার দখল করা সমস্ত অঞ্চল থেকে তাদেরকে হটানোর কথা বলায় দুই দেশের সমঝোতা আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।
এদিকে, বৃহস্পতিবার পুতিনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান পার্লামেন্টের নেতারা।
রাশিয়ায় দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলগুলোকে একীভূত করার সুবিধার্থে একটি বিশেষ সংস্থা গঠন করতে পুতিনকে উৎসাহিত করেন জাস্ট রাশিয়া পার্টির সের্গেই মিরোনভ ।
- সূত্র: রয়টার্স