আগামী ১০ বছরের মধ্যে কোভিডের মতো মহামারি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি প্রায় ২৮ শতাংশ
প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটছে, ফলে আগামী এক দশকের মধ্যেই কোভিড-১৯ এর মতোন বিশ্বমারি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি রয়েছে ২৭.৫ শতাংশ। এই বাস্তবতায়, দ্রুততার সাথে টিকা আবিষ্কার ও প্রয়োগই ঠেকাতে পারে বিপুল প্রাণহানি। স্বাস্থ্য খাতের পূর্বাভাসমুলক তথ্য বিশ্লেষক একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এমন তথ্যই জানিয়েছে। খবর ব্লুমবার্গের
লন্ডনে সদর দপ্তর থাকা এয়ারফিনিটি লিমিটেড নামক ফার্মটির মতে, এই ঝুঁকির অন্যতম কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বৃদ্ধি, বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং অন্যান্য প্রাণীদেহ থেকে মানবদেহে বিস্তার লাভকারী রোগব্যাধি।
কিন্তু, যদি নতুন রোগ-বিস্তারকারী অণুজীব আবিষ্কারের ১০০ দিনের মধ্যেই – কার্যকর টিকা দেওয়া শুরু করা যায় – তাহলে প্রাণঘাতী মহামারির ঝুঁকি নেমে আসবে ৮.১ শতাংশে। ফার্মটির গবেষকরা পরিস্থিতির মডেলিং এর মাধ্যমে এ তথ্যও জানান।
সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির অনুমানও রয়েছে রোগবিস্তারের মডেলিং- এ। গবেষকরা জানান, বার্ড ফ্লু ধরনের কোনো ভাইরাস যদি অভিযোজনের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া শুরু করে তাহলে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে শুধু যুক্তরাজ্যেই একদিনে ১৫ হাজার জনের মৃত্যু ঘটতে পারে।
কোভিড-১৯ বিশ্ব থেকে পুরোপুরি দূর হয়নি আজো, তারমধ্যেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরবর্তী মহামারির হুমকি মোকাবিলার দিকে মনোযোগ দিতে হচ্ছে। আর তার কারণও বোধগম্য। মাত্র গত দুই দশকেই সার্স, মার্স ও কোভিড-১৯ ব্যাধি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসগুলোর আবির্ভাব ঘটেছে। তারসঙ্গে ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লু মহামারিও উল্লেখযোগ্য।
বিশেষত, এইচ৫এন১ নামক বার্ড ফ্লু স্ট্রেইন- এর বিস্তার এরমধ্যেই উদ্বেগ তৈরি করেছে। এপর্যন্ত এতে অল্প সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হলেও, এটি একজনের দেহ থেকে অন্যজন্যের দেহে বিস্তার লাভ করেছে এমন লক্ষণ দেখা যায়নি। তারপরেও বিজ্ঞানীরা শঙ্কিত পাখিদের মধ্যে এই স্ট্রেইনের ব্যাপক বিস্তারের কারণে, স্তন্যপায়ী অন্যান্য প্রাণীর মধ্যেও এর সংক্রমণ বাড়ছে। বিজ্ঞানী ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের আশঙ্কা, এই ভাইরাস খুব সম্ভবত এমনভাবে অভিযোজন করছে, যার ফলে খুব সহজে দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারবে।
অন্যদিকে, মার্স ও জিকার মতো উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন ভাইরাসগুলোর জন্য কোনো অনুমোদিত টিকা বা চিকিৎসাও নেই। এয়ারফিনিটি জানিয়েছে, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতের বর্তমান অবস্থায়, সময় থাকতেই নতুন মহামারি সৃষ্টিকারী রোগজীবাণু শনাক্ত করা যাবে- এমন সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তাই ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণের আশু প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছে।